ঢাকায় আগুনে মা-মেয়েসহ কুমিল্লার ছয়জনের মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক।।
রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মা-মেয়েসহ কুমিল্লার ছয় বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। তাঁদের কেউ ওই ভবনের রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন, কেউবা গিয়েছিলেন কাজে। অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাঁরা মারা যান।

নিহত ছয়জন হলেন কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার হাতিগাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে নুসরাত জাহান (১৮) ও তাঁর দুই খালাতো বোন লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের ফৌজিয়া আফরিন রিয়া (২২) ও সাদিয়া আফরিন আলিশা (১৩); ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর গ্রামের গোলাম মহিউদ্দিনের স্ত্রী লুত্ফুন নাহার ও তাঁর মেয়ে জান্নাতিন তাজরী এবং মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের জয়ন্ত পোদ্দারের স্ত্রী পম্পা পোদ্দার (৪৬)।

বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ নামের সাততলা ভবনটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে আগুন লাগে। এতে ৪৬ জন মারা যান। ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ভবন থেকে ৭০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার হাতিগাড়া গ্রামের নুসরাত জাহান (শিমু)। এবার ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। দুই খালাতো বোনের সঙ্গে ওই ভবনের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। নুসরাতসহ তিন বোন অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন। নুসরাতের খালাতো বোন ফৌজিয়া মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন আর সাদিয়া ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ত।

নুসরাতের বাবা আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আগুন লাগার পর নুসরাত ফোন করে বলেছিল, “আব্বু আমাকে বাঁচাও। আমাদের এখান থেকে বের করে নিয়ে যাও।” মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, এর থেকে দুঃখের কিছুই হতে পারে না। পরে ওদের লাশ ঢাকা মেডিকেল থেকে সংগ্রহ করি।’

ফৌজিয়ার বাবা কোরবান আলী বলেন, ‘শনিবার ফৌজিয়াকে নিয়ে আমার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। মেয়েটির আর মালয়েশিয়া যাওয়া হলো না।’

একই ঘটনায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর গ্রামের গোলাম মহিউদ্দিনের স্ত্রী লুত্ফুন নাহার ও মেয়ে জান্নাতিন তাজরী মারা গেছেন। লুত্ফুন নাহার ভিকারুন্ননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর চিকিৎসক দেখিয়ে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁরা মারা যান। গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমার স্ত্রী দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে ওদের কাচ্চি ভাইয়ে খেতে যেতে বলি। ওখান থেকে ওরা লাশ হয়ে ফিরল।’

দুই মেয়ের জন্য রাতের খাবার নিতে ওই ভবনে গিয়েছিলেন গৃহবধূ পম্পা পোদ্দার (৪৬)। তিনি মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের জয়ন্ত পোদ্দারের স্ত্রী। তিনি মাঝেমধ্যে সামাজিক অনুষ্ঠানে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন। তিন দিন আগেও নবীপুর গ্রামে এসেছিলেন। কাল শনিবার বড় মেয়ে কানাডা থেকে ফিরলে ঢাকায় নাকি গ্রামের বাড়িতে সৎকার করা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, জয়ন্ত পোদ্দার পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। একটি প্রাইভেট অডিট ফার্মের মালিক। স্ত্রী পম্পা পোদ্দার গৃহিণী। এ দম্পতির তিন মেয়ে। বড় মেয়ে কানাডায় লেখাপড়া করছেন। ছোট দুই মেয়ে মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকত।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

You cannot copy content of this page