
স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় নিখোঁজের ৩৫ দিন পর শ্বশুরবাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কি থেকে কৃষক করিম ভূঁইয়ার (৪৫) গলিত লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই শ্যালককে আটক করেছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, করিম ভূঁইয়া উপজেলার বড়শালঘর মন্ত্রীপুল সংলগ্ন ভূঁইয়া বাড়ির মৃত কাসেম ভূঁইয়ার ছেলে ছিলেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক। ১৩ আগস্ট তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার কেল্লা শাহ দরবারে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার পর ১৬ আগস্ট দেবিদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি (নং-৮৩৪) দায়ের করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর আত্মীয়স্বজন তার বাড়ি, এলাকা এবং মাজার এলাকায় মাইকিং ও পোস্টারিং করে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সাড়া পাননি।
পুলিশ জানান, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন করে জানায় করিমকে খুঁজতে হলে তার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় দেখা দরকার। পরে পুলিশ ও স্বজনরা গিয়ে রসুলপুর ইউনিয়নের গাবুদ্দি সরকার বাড়ির পাশে গোমতী নদীর সংযোগ খালের পাড়ে নির্মাণাধীন একটি সেফটি ট্যাঙ্কি থেকে করিম ভূঁইয়ার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গলিত লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের বড় ভাই আমির হোসেন অভিযোগ করেন, করিম ভূঁইয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তারের সঙ্গে প্রায়ই পারিবারিক কলহ হতো। দুই ছেলে মায়ের পক্ষ নিয়ে বাবাকে নির্যাতন করত। এছাড়া, দুই ছেলে মাদকাসক্ত এবং তারা বাবাকে চাপ দিত জমি বিক্রি করে বিদেশে পাঠানোর জন্য এবং সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য। এই দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক কলহ থেকেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করেন।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, “নিহতের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (৪০), দুই পুত্র তানজিদ ভূঁইয়া (২২) ও তৌহিদ ভূঁইয়া (২১), এবং দুই শ্যালক কুয়েত প্রবাসী মোজাম্মেল হক (৪২) ও কৃষক ইশরাফিল (৪০)-কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হত্যার পেছনে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, সম্পত্তি বিরোধ ও নেশাজনিত কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।”
স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের সংবাদ শুনে পুরো এলাকা দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। নিহতের আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। পুলিশ এখন ঘটনাস্থল ও লাশ উদ্ধারের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত তদন্ত চালাচ্ছে।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ বলেছে, কেউই আইনজীবী ছাড়াই অপরাধ করতে পারবে না, তদন্তে সকল প্রমাণ সুরক্ষিত রাখা হবে।
মোবাইল: +8801740652911
ইমেল: journalistbabo@gmail.com
www.comillanews.com