জহিরুর হক বাবু।।
একটি বিভাগ হওয়ার সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যুগের পর যুগ কুমিল্লাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে— এমন অভিযোগ তুলে সাত দিনের মধ্যে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা না করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বক্তারা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে নগরের কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে “বৃহত্তর কুমিল্লা কনটেন্ট ক্রিয়েটর অ্যাসোসিয়েশন” ও “বৃহত্তর কুমিল্লার জনসাধারণ”-এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশ শেষে কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কান্দিরপাড় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়, ফলে কান্দিরপাড় ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। “কুমিল্লা, কুমিল্লা”, “তুমি কে আমি কে, কুমিল্লা কুমিল্লা”, “কুমিল্লা বিভাগ চাই”— এসব স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, যখনই কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার সময় আসে, তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কুমিল্লার মানুষ আন্দোলন করলেও বিভাগ হয়েছে অন্যত্র— রংপুর, ময়মনসিংহ— কিন্তু কুমিল্লা থেকে বঞ্চনা দূর হয়নি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ (ইয়াছিন) সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, “কুমিল্লাকে আর বঞ্চিত করে রাখার সুযোগ নেই। ষড়যন্ত্র করে কুমিল্লা বিভাগকে আটকে রাখা যাবে না। আজকের সমাবেশে শিশুরাও অংশ নিয়েছে, যা প্রমাণ করে— কুমিল্লা নামেই কুমিল্লা বিভাগের ঘোষণা আটকানোর সাধ্য কারও নেই।”
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা (টিপু) বলেন, “কুমিল্লা এক সময় সমতটের রাজধানী, ত্রিপুরার রাজধানী ছিল। টালবাহানা করে কুমিল্লাকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। বিভাগ ঘোষণা দিতে হবে, না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশ অচল করে দেওয়া হবে।”
কুমিল্লা মহানগর জামায়াতে ইসলামী আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, “কুমিল্লা বিভাগের দাবির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী একাত্মতা ঘোষণা করছে। ব্যক্তিগত আক্রোশে শেখ হাসিনা কুমিল্লায় বিভাগ হতে দেননি। আমরা দাবি জানাই— কুমিল্লা নামেই বিভাগ ঘোষণা দিতে হবে।”
বৃহত্তর কুমিল্লা কনটেন্ট ক্রিয়েটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি টিপু চৌধুরী বলেন, “সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। নোয়াখালীর কিছু মানুষ কুমিল্লাকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে, বিষোদ্গার করছে। আমরা ধৈর্য ধরেছি, কিন্তু আর বেশিদিন নয়— কুমিল্লার মানুষ রাস্তায় নামলে কারও চলাচলের পথ থাকবে না।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, কুমিল্লার কাগজ-এর সম্পাদক আবুল কাশেম, কল্যাণ পার্টির মহানগর সভাপতি শহীদুর রহমান, এবি পার্টির মহানগর আহ্বায়ক জি এম সামদানী, ছাত্রদল নেতা ফখরুল ইসলাম ও তোফায়েল আহমেদ, প্রবাসী সোহেল রানা, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইসরাত জাহান ও মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।