অনলাইন ডেস্ক।।
উন্নত জীবনের আশায় অনেকেই নিজ দেশ ছেড়ে পাড়ি জমান বিদেশে। অনেকেই আবার দারিদ্র্যকে জয় করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়েন। অনেকে মনে করেন ইউরোপে গেলেই ভাগ্য ফিরবে। বৈধ পথে নানা জটিলতা ও আর্থিক দৈন্যতার জন্য অবৈধ পথকেই বেছে নেন বেশিরভাগ মানুষ। এজন্য অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে বিপজ্জনক পথে পা বাড়ান।
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ও বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ সীমানা পাড়ি দিয়ে ইউরোপযাত্রার সময় অসংখ্য মানুষ জীবন হারাচ্ছেন, নিখোঁজও হচ্ছেন। তেমনি এক মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হলেন হতভাগ্য ২০ বাংলাদেশি যুবক।
লিবিয়া থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন তারা। তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, নিহত সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী তীর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি একটি সূত্র।
গতকাল শনিবার ত্রিপোলিতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস জানিয়েছে, ২০টি মৃতদেহ এরই মধ্যে আজদাদিয়ায় দাফন করা হয়েছে, যা ব্রেগা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মৃতদেহগুলো প্রায় পচে-গলে যাচ্ছিল বলেই দাফন করা হয়েছে। মৃতদের কারও কাছেই নাম-ঠিকানার কোনো নথিপত্র পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট ধারণা করেছে, তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক।
জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি লিবিয়া উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগরে হয়ে একটি নৌকা ইতালির উদ্দেশে রওনা দেয়। ওই নৌকায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। নৌকাটি ডুবে গিয়ে লাশ ভেসে আসে লিবিয়া উপকূলে। ওই নৌকায় ঠিক কতজন বাংলাদেশি ছিলেন, তা এখনো জানা যায়নি।
প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে বেশিরভাগের গন্তব্য থাকে স্পেন, ইতালি কিংবা গ্রিসের উপকূল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশীও এ পথ বেছে নেন। কঠোর আইন, জীবনের ঝুঁকি, অনিশ্চয়তা এসব বিপত্তি জেনেও অবৈধভাবে ইউরোপ যাত্রা ঠেকানো যাচ্ছে না কিছুতেই। ফলে এ যাত্রা যেন হয়ে উঠছে মৃত্যুফাঁদ।
ছোটো ছোটো নৌকায় ঝুকিপূর্ণ এসব সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। গণমাধ্যমে এসব দুর্ঘটনার খবর আমরা প্রতিনিয়তই দেখি। তারপরেও এটা থামছে না। বাংলাদেশি অনেক তরুণও এই ঝুঁকিপূর্ণ পথে পা বাড়াচ্ছেন।
অভিবাসন নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, এই মৃত্যুফাঁদ থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরাতে প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা। তরুণদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিই পারে এ ধরনের পরিণতি এড়াতে।
মোবাইল: +8801740652911
ইমেল: journalistbabo@gmail.com
www.comillanews.com