কুমিল্লায় উপজেলা আ.লীগের কমিটি গঠন নিয়ে ২ মন্ত্রীকে লিগ্যাল নোটিশ

নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে চলছে ভাঙা-গড়ার খেলা। গত ১১ মাসে এ উপজেলায় তিনবার কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ। এদিকে কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জেলা সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং সাবেক রেলমন্ত্রী ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হককে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নাঙ্গলকোট হাইস্কুল মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কোনো কমিটি ঘোষণা না দিয়ে ১১ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুউদ্দিন কালুকে সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীকালে ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ পূর্বের কমিটিকে বাতিল করে অধ্যক্ষ আবু ইউছুফকে সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক আবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সর্বশেষ ২ নভেম্বর ওই কমিটিও বাতিল করে রফিকুল হোসেন চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক ও অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন ভূঁইয়াকে সদস্যসচিব করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব।

এদিকে ২ নভেম্বরের আহ্বায়ক কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক মুজিব এমপিকে নোটিশ লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগ সদ্য বিদায়ী কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাশেমের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল। ১১ মাসের মধ্যে ৩টি কমিটি গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী হওয়ায় এ নোটিশ পাঠানো হয় বলে লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

এ ছাড়া লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, পুনরায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক আবুর কমিটি পুনর্বহাল না করলে, জেলা সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলপথমন্ত্রী মজিবুল হক মজিবের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ফৌজদারি/রিভিশন মামলা করা হবে।

লিগ্যাল নোটিশ প্রদানকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইব্রাহিম জুয়েল বলেন, ‘আমরা সবেমাত্র লিগ্যাল নোটিশ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে প্রদান করেছি। আগামী এক মাসের মধ্যে এক নোটিশের জবাব দিতে হবে।’

কমিটি গঠনের বৈধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক যেকোনো উপজেলা কমিটি ৭১ সদস্যবিশিষ্ট হয়। নাঙ্গলকোটের সদ্য ঘোষিত আওয়ামী লীগের কমিটি ১২৭ সদস্যবিশিষ্ট, যা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অঙ্গীকারনামা ২-এর ‘খ’ ধারায়-১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ২৫ অনুচ্ছেদ মোতাবেক ৩৯ ধারা অনুযায়ী নাঙ্গলকোটের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিটি অবৈধ।’

এদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী নাঙ্গলকোট আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে যেভাবে ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতে উঠেছেন, তার ফলাফল ভালো হবে না। সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে নাঙ্গলকোটের কমিটি তিনি বিলুপ্ত করেছেন। গত ১১ মাসে তিনবার কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়ার আশঙ্কা করছি।’

সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, ‘গঠনতন্ত্র মেনেই জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন। এতে দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হয়নি।’

তবে এ ব্যাপারে জেলা কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক গণমাধ্যমকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page