০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বুড়িচংয়ে ৪৪টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দুম্বার মাংস বিতরণ ব্রাহ্মণপাড়ায় মাদক সেবনে বাধা দেওয়া যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা কুমিল্লার লাভলী আক্তারকে সম্মাননা স্মারক প্রদান কক্সবাজারের আনন্দযাত্রা সড়কেই শেষ, কুমিল্লার একই পরিবারের ৫ জন নিহত ক্যান্সার আক্রান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রভা বাঁচতে চায় মুরাদনগরে শিশু আদিবা হত্যার ঘটনায় চাচাতো ভাই গ্রেফতার কুবিতে রোটারেক্ট ক্লাবের উদ্যোগে ‘স্টাডি অ্যাবরোড’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত চৌদ্দগ্রামে শুভপুর ইউনিয়ন উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪নং ওয়ার্ড নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা কুমিল্লায় ৪ বছরের শিশু ধর্ষণ, প্রধান আসামি বাবু গ্রেফতার মুরাদনগরে ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন ইন বাংলাদেশের আওতায় পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

ভারতে গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণ মামলায় সাবেক এমপি’র যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  • তারিখ : ১১:৪৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
  • 377

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের জনতা দল (সেক্যুলার)-এর সাবেক সংসদ সদস্য প্রজ্বল রেভান্নাকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত। শনিবার (২ আগস্ট) সকালে এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতের বিচারক সন্তোষ গজনান ভাট প্রজ্বলকে দোষী সাব্যস্ত করে এই দণ্ড প্রদান করেন।

৩৪ বছর বয়সী প্রজ্বল রেভান্না ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ. ডি. দেবগৌড়ার নাতি এবং কর্ণাটকের সাবেক মন্ত্রী এইচ. ডি. রেভান্নার ছেলে। তাঁর চাচা এইচ. ডি. কুমারস্বামী কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।

২০২৪ সালে কর্ণাটকের হাসান জেলায় প্রজ্বলের বিরুদ্ধে চারটি ধর্ষণ মামলা হয়। শনিবার এক মামলার রায় ঘোষিত হলেও বাকি তিনটির বিচার এখনো চলমান।


প্রথম মামলাটি এক গৃহপরিচারিকার দায়ের করা, যিনি রেভান্না পরিবারের মালিকানাধীন একটি ফার্ম হাউসে কাজ করতেন। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রজ্বল ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ ওই নারীকে ধর্ষণ করেন এবং পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, অপকর্মের ভিডিও নিজেই নিজের মুঠোফোনে ধারণ করতেন প্রজ্বল। ২০২৪ সালের ২৬ এপ্রিল, লোকসভা নির্বাচনের আগমুহূর্তে এসব ভিডিও ফাঁস হলে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভিডিও ফাঁসের পর তিনি জার্মানিতে পালিয়ে যান। ৩১ মে দেশে ফিরলে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি তখন থেকেই কারাগারে রয়েছেন।

তদন্তে দেখা গেছে, ভুক্তভোগী নারীর শরীর ও কাপড়ে পাওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে প্রজ্বলের ডিএনএ মিলে গেছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিশ্চিত হয়।

তদন্তে সহায়তা করেন প্রজ্বলের সাবেক গাড়িচালক কার্তিক এন। তিনি আদালতে জানান, প্রজ্বলের ফোনে তিনি দুই হাজারের বেশি আপত্তিকর ছবি ও অন্তত ৫০টি যৌন নির্যাতনের ভিডিও পেয়েছেন। এসব তথ্যই মামলার অন্যতম প্রধান প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

অন্য মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে জনতা দলের এক নারী পঞ্চায়েত সদস্যের ওপর হুমকি ও যৌন জবরদস্তির অভিযোগ রয়েছে। আরেক মামলায় অভিযোগকারী একজন নারী রাঁধুনি এবং তাঁর কন্যা, যাঁরা রেভান্না পরিবারের জন্য কাজ করতেন।

তবে প্রজ্বলের পরিবার এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্ণাটকের বর্তমান শাসক দল কংগ্রেস এসব অভিযোগের পেছনে রয়েছে এবং তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অংশ হিসেবেই এই মামলা ও রায়।

এসব ঘটনার প্রভাব পড়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও। নিজ এলাকার শক্ত ঘাঁটি হাসান আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান প্রজ্বল রেভান্না।

error: Content is protected !!

ভারতে গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণ মামলায় সাবেক এমপি’র যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

তারিখ : ১১:৪৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের জনতা দল (সেক্যুলার)-এর সাবেক সংসদ সদস্য প্রজ্বল রেভান্নাকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত। শনিবার (২ আগস্ট) সকালে এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতের বিচারক সন্তোষ গজনান ভাট প্রজ্বলকে দোষী সাব্যস্ত করে এই দণ্ড প্রদান করেন।

৩৪ বছর বয়সী প্রজ্বল রেভান্না ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ. ডি. দেবগৌড়ার নাতি এবং কর্ণাটকের সাবেক মন্ত্রী এইচ. ডি. রেভান্নার ছেলে। তাঁর চাচা এইচ. ডি. কুমারস্বামী কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।

২০২৪ সালে কর্ণাটকের হাসান জেলায় প্রজ্বলের বিরুদ্ধে চারটি ধর্ষণ মামলা হয়। শনিবার এক মামলার রায় ঘোষিত হলেও বাকি তিনটির বিচার এখনো চলমান।


প্রথম মামলাটি এক গৃহপরিচারিকার দায়ের করা, যিনি রেভান্না পরিবারের মালিকানাধীন একটি ফার্ম হাউসে কাজ করতেন। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রজ্বল ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ ওই নারীকে ধর্ষণ করেন এবং পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, অপকর্মের ভিডিও নিজেই নিজের মুঠোফোনে ধারণ করতেন প্রজ্বল। ২০২৪ সালের ২৬ এপ্রিল, লোকসভা নির্বাচনের আগমুহূর্তে এসব ভিডিও ফাঁস হলে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভিডিও ফাঁসের পর তিনি জার্মানিতে পালিয়ে যান। ৩১ মে দেশে ফিরলে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি তখন থেকেই কারাগারে রয়েছেন।

তদন্তে দেখা গেছে, ভুক্তভোগী নারীর শরীর ও কাপড়ে পাওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে প্রজ্বলের ডিএনএ মিলে গেছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিশ্চিত হয়।

তদন্তে সহায়তা করেন প্রজ্বলের সাবেক গাড়িচালক কার্তিক এন। তিনি আদালতে জানান, প্রজ্বলের ফোনে তিনি দুই হাজারের বেশি আপত্তিকর ছবি ও অন্তত ৫০টি যৌন নির্যাতনের ভিডিও পেয়েছেন। এসব তথ্যই মামলার অন্যতম প্রধান প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

অন্য মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে জনতা দলের এক নারী পঞ্চায়েত সদস্যের ওপর হুমকি ও যৌন জবরদস্তির অভিযোগ রয়েছে। আরেক মামলায় অভিযোগকারী একজন নারী রাঁধুনি এবং তাঁর কন্যা, যাঁরা রেভান্না পরিবারের জন্য কাজ করতেন।

তবে প্রজ্বলের পরিবার এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্ণাটকের বর্তমান শাসক দল কংগ্রেস এসব অভিযোগের পেছনে রয়েছে এবং তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অংশ হিসেবেই এই মামলা ও রায়।

এসব ঘটনার প্রভাব পড়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও। নিজ এলাকার শক্ত ঘাঁটি হাসান আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান প্রজ্বল রেভান্না।