মাহফুজ নান্টু।
গরীর দুঃখী মানুষের দুয়ারে খাবার নিয়ে হাজির হতো মিথুন। রাতে বিরাতে কারো রক্তের প্রয়োজন হলে সবার আগে এগিয়ে যেতো। বাবা মার একমাত্র সন্তান ছিলো। শুধু মানুষের সেবা করাই ছিলো তার কাজ। সব সময় হাসিমুখে কথা বলতো। মাদকের বিরুদ্ধে মিথুনের অবস্থান ছিলো সুদৃঢ়। আর এমন সব মহৎ কাজের জন্য ছেলেটা স্থানীয় মাদক কারবারীদের চক্ষুশূল হয়েছিলো। যার ফলে মাদক কারবারীদের অস্ত্রের আঘাতে নির্মমভাবে খুন হলো। কিভাবে আমরা এ ব্যাথা সইবো। কে পারবে সন্তান হারা মিথুনের বাবা মাকে সান্তনা দিতে।
শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা নজরুল ইন্সটিটিউটে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার আয়োজনে স্মরণ সভায় স্বেচ্ছাসেবী প্রয়াত মিথুনের জন্য কান্নাজড়িত কন্ঠে তার সহকর্মীরা এভাবেই স্মৃতিচারণ করেন।
স্মরণ সভায় সহকর্মী মিথুনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আশরাফ আলী, তামিম চৌধুরী ও মোঃ সাইমন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাদের দাবী মিথুন হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
স্মরণ সভায় জাগ্রত মানবিকতার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ তাহসি্ন বাহার সূচনা বলেন, মিথুন ছিলো আমাদের ভাই। জাগ্রত মানবিকতার নিখাদ স্বেচ্ছাসেবক। মানুষের জন্য হাসিমুখেই কাজ করতো ছেলেটা। প্রচারবিমুখ ছেলেটা কত মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করেছে তার কোন হিসেব নেই। এই হাসিমুখের ছেলেটা মাদক কারবারীদের অস্ত্রের আঘাতে নির্মম মৃত্যুবরণ করলো। আমরা ওই মাদক কারবারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পাশাপাশি এই কুমিল্লায় মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। শীঘ্রই আমরা আন্দোলন শুরু করবো। আর কোন মিথুন যেন মাদক কারবারীদের হাতে শেষ না হয়।
স্মরণ সভার শুরুতে মিথুনের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। স্মৃতিচারণে পরে মিথুনের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মুন্সেফবাড়ী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মিজানুর রহমান৷
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাগ্রত মানবিকতার সদস্য আনোয়ার হোসেন।
স্মরণসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাগ্রত মানবিকতার কোষাধ্যক্ষ প্রবীর রঞ্জন দে, সমাজ কল্যান সম্পাদক আবু সাইব বাপ্পি, দপ্তর সম্পাদক সায়মুম স্বপ্নিল, জাগ্রত মানবিকতার কো-অর্ডিনেটর সুজন, মোঃ মাসুদ রানা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, মাদক ব্যবসায়ে বাঁধা দেয়ায় গত ২৫ অগাস্ট সন্ধ্যায় কলেজ ছাত্র ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত মানবিকতার কো-অর্ডিনেটর মিথুন ভূইয়ার উপর সশস্ত্র হামলা করে একদল মাদক কারবারী। পরে গুরতর আহত অবস্থায় ২৭ অগাস্ট সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মিথুন। নিহত মিথুন নগরীর বজ্রপুর মৌলভীপাড়ার চেয়ারম্যানগলির বাসিন্দা লিটন ভূইয়ার একমাত্র ছেলে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page