ইসলাম নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ফয়সাল মিয়া, কুবি।।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও ইসলাম ধর্মকে কটূক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা “সম্প্রীতির বাংলায়, উগ্রবাদের ঠাই নাই।
লিল্লাহি তাকবির, আল্লাহু আকবার,
বদরের হাতিয়ার, জেগে উঠ আরেকবার ”
বলে স্লোগান দেয়।

কটূক্তিকারীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে মামলা ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলে হুশিয়ারি দেন তারা। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে গতকাল (১৪মে) রাত ৯:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়। এরপর আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০ টায় মানববন্ধনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিশ্বনবীকে নিয়া কটুক্তিকারী শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার ও দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান ।

উল্লেখ্য, গতকাল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) ও ইসলাম ধর্মকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে এ মন্তব্যের বিভিন্ন স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোব সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শ্রী স্বপ্নীল মুখার্জি ফেইসবুকের কমেন্ট ও পোস্টে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অশালীন বক্তব্য,ফিলিস্তিনের নিয়ে অশালীন কথাবার্তা ও বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সঃ) কে নিয়া কটুক্তি করে। এ সংক্রান্ত খবর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোব সৃষ্টি হয়। কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, তার ফেসবুক আইডি থেকে গত ২০শে ফেব্রুয়ারি পোস্টের মন্তব্যে তিনি আসিফ আহমেদ নামে এক জন ব্যক্তিকে মেনশন করে বলেন, “হযরত যেখানেই যেত যুদ্ধ করতো। বদর না ফদর আরো কত কি নাম আছে। এলাকার মানুষগুলাকে একটা দিনও শান্তি দেয়নি।”

তিনি একই ব্যক্তিকে মেনশন করে আরো মন্তব্য করেন, “এ জন্যই মুসলিমদের সাথে কথা বলি না কারণ তাদের ব্রেইন নাই। আফগানিস্তান নিয়ে কথা বলতে বলতে হিন্দুধর্মের দেবতা টেনে নিয়ে এসে বলে টপিকের মাঝে থাকতে।” তার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আল-আমীন মানববন্ধনে এক বক্তব্যে বলেন, “স্বপ্নীল নামে যে কুলাঙ্গার আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তি করেছে আমার তার বিচার এবং সারাজীবন বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধনে দাড়িঁয়েছি। তিনি কটূক্তিকারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি আজকে স্বপ্নীল কে বলতে চাই তুমি যদি আমার মা ও বোনকে নিয়ে কটূক্তি করতা আমি মিচুয়াল করে নিতাম কিন্তু তুমি এমন এক মানুষকে নিয়ে কথা বলেছো তার জন্য আমার ও সারা মুসলমান জাতির কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে দাবি এই স্বপ্নিল কে আজীব বহিষ্কার করতে হবে এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উগ্রবাদীর কোনো জায়গা নেই। বাংলাদেশে যে ধর্মীয় আইন আছে সেই আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। ”

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “ভর্তির শুরু থেকেই ইসলামকে নিয়ে কটূক্তি করে আসছে এই শিক্ষার্থী তাকে একাধিকবার সতর্ক করে দেওয়ার পরও বারবার একই ধরনের কাজ করছে। আমাদের ইসলামের বদর যুদ্ধ কে নিয়ে সে কটূক্তি করেছে তাছাড়া ইসলামের পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ নিয়েও বাজে কথা বলে।

ফিলিস্তিন কে কুকুরের সাথে তুলনা করেছে। এই কুলাঙ্গারে স্থায়ী বহিষ্কার ও বাংলাদেশের ধর্মীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কনফার্ম হয়েছি যে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করেছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী আমরা তাকে অস্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেছি ।

এক প্রশ্ন জবাবে স্থায়ী বহিষ্কার সম্পর্কে তিনি বলেন প্রক্টরিয়ার বডি প্রথমত অস্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করতে পারে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য আমাদের একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমাদের কথা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

You cannot copy content of this page