কুবি প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে টানানো শিক্ষকদের পদত্যাগের ব্যানার ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনের কুশপুত্তলিকা নামিয়েছে ‘উপাচার্যপন্থী’ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক নেতারা বলেন, উপাচার্য সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসী বেষ্টিত। এগুলো তাদেরই কাজ।
রোববার (১২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রধান ফটক থেকে কুশপুত্তলিকাটি নামিয়ে ফেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে ফেলে রাখেন উপাচার্যপন্থী ছাত্রলীগ কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কুশপুত্তলিকা নামানো ছাত্রলীগকর্মীদের নেতৃত্ব দেন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মুমিন শুভর অনুসারী বাংলা বিভাগের ১৩ আবর্তনের শিক্ষার্থী রাশেদ ইবনে নূর। এছাড়াও সাথে ছিলেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ১৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান খান জয়, বাংলা বিভাগের ১৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আদনান সাইফ।
কুশপুত্তলিকা নামানোর বিষয়ে শুরুতে আদনান সাইফ অস্বীকার করলেও পরে বলেন, ওনারা কুশপুত্তলিকা নামাচ্ছিল। আমি চা খেতে বের হয়েছিলাম। পরবর্তীতে ওনাদের দেখে আমিও ছিলাম সাথে। তবে ডাস্টবিনের উপরের কুশপুত্তলিকা সাইফ একা নামিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাশেদ ইবনে নূর বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীর জায়গা থেকে আমি ছিঁড়ে ফেলেছি। আমার সাথে আরও কয়েকজন ছিল।
এসব বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মমিন শুভ বলেন, ‘রাশেদরা আমার কর্মী না। আমি তাদের চিনি না।’ পরে তিনি প্রতিবেদকের কল কেটে দেন৷
শিক্ষক-প্রশাসন দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ কর্মীদের জড়ানো ও কুশপুত্তলিকা ফেলার বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা ইমাম হোসেন মাসুম বলেন, যদি ছাত্রলীগের কেউ এটা করে থাকে অবশ্যই অন্যায় হয়েছে। শিক্ষক এবং প্রশাসনের দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের জড়ানো উচিত নয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক প্রক্টর মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, প্রশাসন এবং শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগ কিংবা শিক্ষার্থী কারোই জড়ানো উচিত নয়। এতে শিক্ষার পরিবেশ এবং আন্তঃসম্পর্ক নষ্ট হয়। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে তাদের বিষয় নিয়ে আন্দোলন করতে পারে; প্রতিবাদ জানাতে পারে। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ২৮ শে এপ্রিলসহ দুটি ঘটনাতেই সাবেক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীদের জড়ানো হয়েছে। যার পেছনে রয়েছে প্রশাসনের অসৎ উদ্দেশ্য।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান বলেন, যারা গণতন্ত্র ও প্রতিবাদের মতো বিষয়গুলো দেখতে পারে না, সেটা ব্যানার হোক বা প্রতিবাদের কথা হোক স্বাভাবিকভাবেই এগুলো নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করবে। উপাচার্য সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসী বেষ্টিত। তার অনুসারীরা এসব সরাবে তাদের কাছে তো এগুলো স্বাভাবিকই।
তিনি আরও বলেন, বাদ এবং প্রতিবাদ পাশাপাশি থাকবেই। কিন্তু উপাচার্য প্রতিবাদ গ্রহণ না করে রাতের অন্ধকারে এগুলো সরাবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। শিক্ষকদের আন্দোলনে শিক্ষকরা কথা বলবে। এখানে ছাত্রলীগকর্মী আসবে কেনো! এটা কাম্য নয়।
ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাসহ কুশপুত্তলিকা সরানোর বিষয়ে জানতে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page