০৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লা–৬ আসনে টানা কর্মসূচির দশম দিনে হাজী ইয়াছিনের পক্ষে গণস্বাক্ষর অভিযান তিন মাস পর বাসায় ফিরেছে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির কুমিল্লার যমজ দুইবোন জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ঘুষ জাদুঘরে পাঠানো হবে- কুমিল্লায় সরওয়ার ছিদ্দিকী চৌদ্দগ্রামে কামরুল হুদার পক্ষে ঘোলপাশা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের লিফলেট বিতরণ ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই নির্বাচন, কোনো শক্তিই ঠেকাতে পারবে না: কুমিল্লায় প্রেস সচিব কুমিল্লায় হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার আহত প্রবাসী সেলিমের দেশে ফেরার টিকিট দিলেন মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনার মুরাদনগরে পতিতাবৃত্তি ও মানবপাচার ব্যবসার অভিযোগে ৬ জন গ্রেপ্তার কুমিল্লায় রেলস্টেশনে টাস্কফোর্স অভিযানে ৩ কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ চৌদ্দগ্রামে চিওড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের ওয়ার্ড নির্বাচনী প্রস্তুতি ও কর্মী সভা

কুমিল্লায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার

  • তারিখ : ১১:৩২:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
  • 61

কুমিল্লা নিউজ।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে অপহরণের পর আবু সায়েম (৩৯) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সায়েম উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষারপাড় গ্রামের আবদুর রহিম সরকারের ছেলে। গ্রেফতার মো. খোরশেদ আলম গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।

আবু সায়েমের শ্বশুর মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েমকে অপহরণ করে চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ৭-৮ জন সন্ত্রাসী। খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থানে আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে বিকেল ৫টায় খোরশেদ চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে জানায় সায়েম তার ছেলে মামুনের সঙ্গে আছে।

মামুন আমার জামাইয়ের কাছে যৌথ ব্যবসার যে টাকা পাবে সে টাকা ফেরত দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চেয়ারম্যান খোরশেদ আমাকে যাত্রাবাড়ীর বাবুবাজার এলাকার একটি বাসায় সায়েমের সঙ্গে দেখা করায়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে লেনদেনের বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। আমি সায়েমকে আমার সঙ্গে নিতে চাইলে চেয়ারম্যান বলে ‘সায়েম তার জিম্মায় থাকবে’। সেখান থেকে তারা রাতেই সায়েমকে নিয়ে প্রাইভেটকারে দেবিদ্বার চলে যান।

প্রাইভেটকারে জায়গা না থাকায় আমি বাসে করে দেবিদ্বারে রওনা হই। কুমিল্লা ময়নামতি এলাকায় আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, সায়েম চা খাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে। পরে রাত সোয়া ১টায় চেয়ারম্যান আবার ফোনে জানায়, সায়েম খুবই অসুস্থ তাকে আমি ও আমার স্ত্রী দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি তুমি দ্রুত হাসপাতালে এসো। পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি সায়েমের মরদেহ নিচে পড়ে আছে। মরদেহের চোখ-মুখ ফোলা, গলায় ও পিঠে অসংখ্য দাগ। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে খোরশেদ চেয়ারম্যানকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

সায়েমের ছোট ভাই আবু কাউছার সরকার জানান, গত কয়েক বছর আগে আমার বড় ভাই ব্যবসার কাজে সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে মামুনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে দুজন একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা কিছুটা অবনতি হলে ওই টাকার জন্য মামুন আমার ভাইকে চাপ সৃষ্টি করলে তাকে সাতলাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকার জন্য একটি খালি চেক দেওয়া হয়।

পরে মামুন ওই চেক দিয়ে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করে। ওই মামলা চলমান থাকাবস্থায় মামুন ও তার বাবা আমার ভাইকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে। রাতে সায়েম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আমার পিকআপ ভ্যানটি মামুনকে দিয়ে দিলে তাকে ছেড়ে দেবে। এ কথা শুনে আমি পিকআপ ভ্যানটি মামুনকে দিয়ে দিই। এরপরও আমার ভাইকে চেয়ারম্যান ও তার ছেলে সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। আমরা এ ঘটনায় খোরশেদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলের ফাঁসি দাবি করছি।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে নিহত সায়েমের ভাই আবু কাউছার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার

তারিখ : ১১:৩২:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

কুমিল্লা নিউজ।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে অপহরণের পর আবু সায়েম (৩৯) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সায়েম উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষারপাড় গ্রামের আবদুর রহিম সরকারের ছেলে। গ্রেফতার মো. খোরশেদ আলম গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।

আবু সায়েমের শ্বশুর মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েমকে অপহরণ করে চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ৭-৮ জন সন্ত্রাসী। খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থানে আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে বিকেল ৫টায় খোরশেদ চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে জানায় সায়েম তার ছেলে মামুনের সঙ্গে আছে।

মামুন আমার জামাইয়ের কাছে যৌথ ব্যবসার যে টাকা পাবে সে টাকা ফেরত দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চেয়ারম্যান খোরশেদ আমাকে যাত্রাবাড়ীর বাবুবাজার এলাকার একটি বাসায় সায়েমের সঙ্গে দেখা করায়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে লেনদেনের বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। আমি সায়েমকে আমার সঙ্গে নিতে চাইলে চেয়ারম্যান বলে ‘সায়েম তার জিম্মায় থাকবে’। সেখান থেকে তারা রাতেই সায়েমকে নিয়ে প্রাইভেটকারে দেবিদ্বার চলে যান।

প্রাইভেটকারে জায়গা না থাকায় আমি বাসে করে দেবিদ্বারে রওনা হই। কুমিল্লা ময়নামতি এলাকায় আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, সায়েম চা খাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে। পরে রাত সোয়া ১টায় চেয়ারম্যান আবার ফোনে জানায়, সায়েম খুবই অসুস্থ তাকে আমি ও আমার স্ত্রী দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি তুমি দ্রুত হাসপাতালে এসো। পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি সায়েমের মরদেহ নিচে পড়ে আছে। মরদেহের চোখ-মুখ ফোলা, গলায় ও পিঠে অসংখ্য দাগ। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে খোরশেদ চেয়ারম্যানকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

সায়েমের ছোট ভাই আবু কাউছার সরকার জানান, গত কয়েক বছর আগে আমার বড় ভাই ব্যবসার কাজে সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে মামুনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে দুজন একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা কিছুটা অবনতি হলে ওই টাকার জন্য মামুন আমার ভাইকে চাপ সৃষ্টি করলে তাকে সাতলাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকার জন্য একটি খালি চেক দেওয়া হয়।

পরে মামুন ওই চেক দিয়ে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করে। ওই মামলা চলমান থাকাবস্থায় মামুন ও তার বাবা আমার ভাইকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে। রাতে সায়েম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আমার পিকআপ ভ্যানটি মামুনকে দিয়ে দিলে তাকে ছেড়ে দেবে। এ কথা শুনে আমি পিকআপ ভ্যানটি মামুনকে দিয়ে দিই। এরপরও আমার ভাইকে চেয়ারম্যান ও তার ছেলে সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। আমরা এ ঘটনায় খোরশেদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলের ফাঁসি দাবি করছি।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে নিহত সায়েমের ভাই আবু কাউছার বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।