কুমিল্লায় শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণ; এক যুবক গ্রেফতার

নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক গৃহবধূকে (২২) শিকল দিয়ে হাত–পা বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেটে দেওয়া হয় তার মাথার চুল। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মূল হোতা ইমাম হোসেন (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর অভিযোগ, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তিন ব্যক্তি। পাশবিক নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি ওই দুর্বৃত্তরা ঘরে থাকা টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়েছে। নির্যাতন ও লুট শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা ঘরের জামাকাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে নাঙ্গলকোট উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে পুলিশ। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করে একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই অভিযান চালিয়ে মূল হোতা ইমাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে ওই গৃহবধূ উল্লেখ করেন, তার স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি (৭০), কন্যাসন্তানসহ (২) বসবাস করেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে আসামি ইমাম হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলে আসছে। ইমামসহ তার লোকজন গৃহবধূ ও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। ইমাম হোসেন আগেও বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণের হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইমামসহ অজ্ঞাতনামা দুজন দেশি অস্ত্র, লোহার শিকল, তালা–চাবিসহ তাদের বসতঘরের দরজা ভেঙে গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় ইমাম হোসেন গৃহবধূর শিশুকন্যার জামা তার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেন এবং অপর আসামিদের সহযোগিতায় ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে লোহার শিকল দিয়ে গৃহবধূর হাত–পা বেঁধে তালা মেরে দেন তারা। এরপর ইমাম হোসেনের সহায়তায় মুখোশ পরা এক ব্যক্তি গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। পাশে থাকা অন্যজন গৃহবধূর মাথার চুল কেটে ফেলেন।

আরও উল্লেখ করা হয়, তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের পর আসামিরা ঘরের স্টিলের আলমারিতে থাকা এক লাখ ৭১ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় দলিলপত্র নিয়ে যান। ঘটনার সময় ইমাম হোসেন বারবার জাহিদুল্লাহর নাম উচ্চারণ করেন। পরে তার অসুস্থ শাশুড়ি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তারা পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, ঘটনার সময় আমার মেয়ে ঘুমে ছিল। আমি বারবার তাদের কাছে মিনতি করেছি, আমার ক্ষতি না করার জন্য। কিন্তু তারা আমার কোনো কথাই না শুনে একের পর এক অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে গেছে। আমার আলমারি থেকে জামাকাপড় নিচে ফেলে যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। আমি এই লম্পটদের বিচার চাই এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলাটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ইমাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারেও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page