নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চেয়াম্যান প্রফেসর মো.জামাল নাছের বলেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলকে মারা যাওয়ার আগে ‘আল্লার দোহায় দিয়ে খুনিদের আর্তি জানিয়ে ছিলেন তাকে না মারার জন্য’। সেদিন রাসেলের এই আর্তচিৎকারে খোদার আরশ কেঁপে উঠলেও টলাতে পারেনি খুনী পাষাণদের মন। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হত্যা করার পর একজন মেজর শেখ রাসেলকে বাসার নিচ থেকে দোতলায় নিয়ে গিয়ে রিভলবারের গুলিতে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। ফলে অকালেই থেমে যায় অপরিণত রাসেলের জীবন।
১৯৭৫সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে মসজিদের মাইকে যখন ‘আসসালাতু খাইরু মিন আন নাও’ বলে আযান হচ্ছিল তখনই নৃসংস ভাবে এই হত্যাকান্ডে মেতে উঠে খুনিরা। ৩২ নম্বরের দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে রক্তের স্রোত নিচতলা পর্যন্ত পৌছে। রাসেলকে মারার আগে রাসেলের মর্মস্পর্শী আর্তিতে একজন সৈন্যের মন গলায় সে তাকে বাড়ির গেটে সেন্ট্রিবক্সে লুকিয়ে রাখে। তার পরও রক্ষা পায়নি সে। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ গ্রন্থে এমন বর্ণনা উঠে এসেছে। শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা জার্মান অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।
জাতির পিতার অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিল খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী বারট্রান্ড রাসেল। শেখ রাসেল জন্মের পর বারট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে তার নাম রাখা হয় শেখ রাসেল। পরিবারটির সর্বকনিষ্ঠ এই সদস্য মা, বাবা, ভাই, বোন সবার চোখে ছিল নয়নের মনি। বিশেষ করে বড় বোন শেখ হাসিনা এই দিনটি এলেই অত্যন্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে যান। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা কালে শেখ রাসেলের কথা মনে করে অনেক দিন আবেগ প্রবণ হয়েছেন এবং টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা গেছে। শেখ হাসিনাকে ‘হাসু আপা’ বলে সম্মোধন করতেন ছোট্ট রাসেল। শেখ রাসেলের মুখে এই ডাক শেখ হাসিনা শেষ কবে শুনেছেন তা হয়তো তার মনে নেই। কিন্তু শেখ রাসেলের স্মৃতি তাকে প্রতিনিয়তই কষ্ট দেয়।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেল এর ৬০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
শেখ রাসেল দীপ্তময় নিভীক নির্মল দুর্জয় অদম্য আত্মবিশ্বাস’এ স্লোগানটি সামনে রেখে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড,কুমিল্লার পক্ষ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেল এর ৬০তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়।
বোর্ডের পক্ষ থেকে চেয়াম্যান প্রফেসর মো.জামাল নাছের ও সচিব প্রফেসর নূর মোহাম্মদ এর নেতৃত্বে শহীদ শেখ রাসেলের স্মরণে বোর্ডর অস্থায়ীভাবে তৈরি শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দুপুর ১২ টায় বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতিতে বোর্ডের সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. জামাল নাছের,সচিব প্রফেসর নূর মোহাম্মদ,পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো: আসাদুজ্জামান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. আজহারুল ইসলাম, উপ- পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) মোহাম্মদ ছানাউল্যাহ, উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামানন, উপ- কলেজ পরিদর্শক বিজন কুমার চক্রবর্তী, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (সনদ) ড. মো.শফিকুল ইসলাম, উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহিদুল হক উপ-সচিব (একাডেমিক) মোহাম্মদ সাফায়েত মিয়া, উপ- পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চমাধ্যমিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্টসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো: জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী এবং উপ-সচিব (প্রশাসন) এ,কে,এম, সাহাব উদ্দিন এর সঞ্চালনায় বোর্ডের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাদযোহর শিক্ষাবোর্ড মসজিদে অনুষ্ঠিত মিলাদ তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত করা হয়।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page