১১:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল; ৪৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাল মৃত্তিকায় শীতের নির্মল ছোঁয়া বিভিন্ন স্থানে বিড়ালের চোখ তুলে নেয়া ও প্রাণি নির্যাতনের প্রতিবাদে কুমিল্লায় মানববন্ধন চৌদ্দগ্রামে শুভপুর ইউনিয়ন দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের ১নং ওয়ার্ড নির্বাচনী প্রস্তুতি ও কর্মী সভা বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রী কলেজের রুবি জয়ন্তী উপলক্ষে ৯৭ ব্যাচের আলোচনা ও রেজিস্ট্রেশন দেবিদ্বারে সাড়ে তিন বছরের শিশুকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত চৌদ্দগ্রামে কাশিনগর ইউনিয়ন দক্ষিণ ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি ও কর্মী সভা বুড়িচংয়ে ৪৪টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দুম্বার মাংস বিতরণ ব্রাহ্মণপাড়ায় মাদক সেবনে বাধা দেওয়া যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

তিতাস উপজেলা ডাকবাংলোটি এখন বন্যপ্রাণির বাসস্থান

  • তারিখ : ১১:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • 29

নেকবর হোসেন
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার যথাযথ নজরদারী ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে ডাক বাংলোটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। সরেজমিনে গিয়ে ভবনের চার পাশ ঘুরে দেখা গেছে ,ঝাঁড়-জঙ্গল,শিয়াল ও বিষাক্ত সাপ,পোকা-মাকড়ে ভরে আছে এই ভবনটি। ব্যবহারের অনুপযোগী এই ভবনটি দ্রুত ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন তিতাসবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গাজিপুরে অবস্থিত ডাক বাংলো ভবনের বাহিরে প্রাচীর রয়েছে। আর এই প্রচীরের ভিতরে বিরাজ করছে ঝাড়-জঙ্গল,দুর্গন্ধ ময়লা- আবর্জনাও শিয়াল, স্বর্প, বেড়াল ও পোকামাকড়ের আস্থানা। দুই তলা এ ভবনটির নীচ তলার কয়েকটি রুমের জানালার কাচ ভেঙে গেছে।

হঠাৎ ভবনটি দেখে যে কারও মনে হবে এটি ডাকবাংলো নয় যেন গহিন জঙ্গল। কারণ অবহেলায় ভবনের চারপাশে বড় বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্মে জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। সংস্কারের ও পরিচর্যার অভাব ও বৃষ্টির পানিতে ভবনের দেয়াল ও প্রাচীরগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।মেইন গেটের সামনে ডাক বাংলো কথাটি লেখাথাকলেও সেখানে দেখা গেছে গেইটের রডগুলোতে ভেজা কাপড় ঝুলিয়ে শুকাচ্ছেন আশপাশের লোকজন। বছর কি বছর অতিবাহিত হলেও দেখা যায়নি কখনো ডাকবাংলোটির গেট খুলতে। বোঝার কোন উপায় নেই যে এটি একটি সরকারি ভবন। তবে ডাকবাংলোটির দেখা শোনার জন্য পুর্বে একব্যাক্তি দায়িত্বে থাকলেও এখন আর তার দেখা মেলেনা। কোন একটা সময় দায়িত্ব পালনের অবহেলার ও বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার অনেক কর্মকর্তা বলেন,বাহিরের যে অবস্থা ভেতরে তার চেয়ে কয়েকগুণ খারাপ। রাত হলেই শেয়াল, কুকুর, বিষাক্ত সাপ আর বেড়ালের ভয়ানক ডাক শোনা যায়। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভবনের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ও ফার্নিচার। ধুলো আর ময়লা ছাড়া তিল ধরনের জায়গা যেন নেই ভবনের ভেতরে।

ডাকবাংলোর পাশের বাসার এক গৃহবধূ জানান, প্রতিদিন রাতে আমাদের হাঁস মুরগী এমনকি ছাগল পর্যন্ত নিয়ে যায় নেকড়ে শিয়ালের দল। তাছাড়া রাত হলেই শুরু হয় শিয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক ও বিষধর সাপের ভয়ানক ফোস ফোস শব্দ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরনবী বলেন, তিতাস ডাকবাংলোটি বসবাসের অনুপযোগী। চার পাশ ঝাড় জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সংস্কার করার অনুরোধ করব।

তিতাস উপজেলার নির্বাহী অফিসার এটি এম মোর্শেদ বলেন, তিতাসের ডাকবাংলোটির বিষয়ে আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। তবে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো। এ বিষয়ে আমাদের তেমন সংশ্লিষ্টতা নেই, আছে জেলা পরিষদের। তথাপিও বিষয়টি আমি দেখব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাা মো. হেলাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি নিজেও এটি দেখে এসেছি। এই ডাক বাংলোটি করা হয়েছে উপজেলা থেকে অনেক দূরে। এই ভবনটি জেলা পরিষদ করলেও তার রক্ষনাবেক্ষণ করার দায়িত্ব ইউএনওদের। কিন্তু কোন ইউএনও এটির রক্ষনাবেক্ষণ না করাতে আর কোন অতিথি না যাওয়াতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই বিষয়ে আন্তরিক। সে আমাকে ফোন করেছিল। আমি তাকে বলেছি, সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন, টাকা যা লাগবে আমি দেব।

error: Content is protected !!

তিতাস উপজেলা ডাকবাংলোটি এখন বন্যপ্রাণির বাসস্থান

তারিখ : ১১:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

নেকবর হোসেন
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার যথাযথ নজরদারী ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে ডাক বাংলোটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। সরেজমিনে গিয়ে ভবনের চার পাশ ঘুরে দেখা গেছে ,ঝাঁড়-জঙ্গল,শিয়াল ও বিষাক্ত সাপ,পোকা-মাকড়ে ভরে আছে এই ভবনটি। ব্যবহারের অনুপযোগী এই ভবনটি দ্রুত ব্যবহার উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন তিতাসবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গাজিপুরে অবস্থিত ডাক বাংলো ভবনের বাহিরে প্রাচীর রয়েছে। আর এই প্রচীরের ভিতরে বিরাজ করছে ঝাড়-জঙ্গল,দুর্গন্ধ ময়লা- আবর্জনাও শিয়াল, স্বর্প, বেড়াল ও পোকামাকড়ের আস্থানা। দুই তলা এ ভবনটির নীচ তলার কয়েকটি রুমের জানালার কাচ ভেঙে গেছে।

হঠাৎ ভবনটি দেখে যে কারও মনে হবে এটি ডাকবাংলো নয় যেন গহিন জঙ্গল। কারণ অবহেলায় ভবনের চারপাশে বড় বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্মে জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। সংস্কারের ও পরিচর্যার অভাব ও বৃষ্টির পানিতে ভবনের দেয়াল ও প্রাচীরগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।মেইন গেটের সামনে ডাক বাংলো কথাটি লেখাথাকলেও সেখানে দেখা গেছে গেইটের রডগুলোতে ভেজা কাপড় ঝুলিয়ে শুকাচ্ছেন আশপাশের লোকজন। বছর কি বছর অতিবাহিত হলেও দেখা যায়নি কখনো ডাকবাংলোটির গেট খুলতে। বোঝার কোন উপায় নেই যে এটি একটি সরকারি ভবন। তবে ডাকবাংলোটির দেখা শোনার জন্য পুর্বে একব্যাক্তি দায়িত্বে থাকলেও এখন আর তার দেখা মেলেনা। কোন একটা সময় দায়িত্ব পালনের অবহেলার ও বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার অনেক কর্মকর্তা বলেন,বাহিরের যে অবস্থা ভেতরে তার চেয়ে কয়েকগুণ খারাপ। রাত হলেই শেয়াল, কুকুর, বিষাক্ত সাপ আর বেড়ালের ভয়ানক ডাক শোনা যায়। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভবনের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ও ফার্নিচার। ধুলো আর ময়লা ছাড়া তিল ধরনের জায়গা যেন নেই ভবনের ভেতরে।

ডাকবাংলোর পাশের বাসার এক গৃহবধূ জানান, প্রতিদিন রাতে আমাদের হাঁস মুরগী এমনকি ছাগল পর্যন্ত নিয়ে যায় নেকড়ে শিয়ালের দল। তাছাড়া রাত হলেই শুরু হয় শিয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক ও বিষধর সাপের ভয়ানক ফোস ফোস শব্দ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরনবী বলেন, তিতাস ডাকবাংলোটি বসবাসের অনুপযোগী। চার পাশ ঝাড় জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সংস্কার করার অনুরোধ করব।

তিতাস উপজেলার নির্বাহী অফিসার এটি এম মোর্শেদ বলেন, তিতাসের ডাকবাংলোটির বিষয়ে আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। তবে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো। এ বিষয়ে আমাদের তেমন সংশ্লিষ্টতা নেই, আছে জেলা পরিষদের। তথাপিও বিষয়টি আমি দেখব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাা মো. হেলাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি নিজেও এটি দেখে এসেছি। এই ডাক বাংলোটি করা হয়েছে উপজেলা থেকে অনেক দূরে। এই ভবনটি জেলা পরিষদ করলেও তার রক্ষনাবেক্ষণ করার দায়িত্ব ইউএনওদের। কিন্তু কোন ইউএনও এটির রক্ষনাবেক্ষণ না করাতে আর কোন অতিথি না যাওয়াতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই বিষয়ে আন্তরিক। সে আমাকে ফোন করেছিল। আমি তাকে বলেছি, সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন, টাকা যা লাগবে আমি দেব।