মুরাদনগরে আবারো যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার প্রধান আটক

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে দু’বছর পার না হতেই আবারো মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রীদেরকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শনিবার সকালে প্রধান শিক্ষক মাওলানা মোঃ হাসানকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটককৃত প্রধান শিক্ষক হাসানের শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

আটক হওয়া মাওলানা মোঃ হাসান উপজেলা সদরের উম্মে হানী মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও নিমাইকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুছ ছাত্তারের ছেলে। অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ, মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সকালে প্রধান শিক্ষক হাসানকে তার মাদ্রাসা থেকে আটক করা হয়।

মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাদেকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসানকে আটক করা হয়েছে। তাকে জেলহাজতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক হাসান তার ১ শত টাকা চুরি হয়েছে এই অভিযোগ এনে হেফজ বিভাগের ১০ বছরের এক ছাত্রীকে তার অফিস রুমে ডেকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আটকপূর্বক কারাগারে পাঠানো হয় প্রধান শিক্ষক হাসানকে। পরে সেই মামলায় জামিনে এসে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন সেই প্রধান শিক্ষক। বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানির বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার সকল শিক্ষকদের কাছে জানান শিক্ষার্থীরা। ছাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সকালে মিটিং ডেকে যৌন হয়রানির বিষয়টি সামাধাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন শিক্ষকরা।

শনিবার সকালে মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত হওয়ার আগেই সকল শিক্ষার্থীদের ডেকে একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে গেলে তাদের উপরে অজ্ঞান করার স্প্রে করেন প্রধান শিক্ষক হাসান। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বাকিরা দৌড়ে মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানতে পেরে পুরো মাদ্রাসা এলাকা ঘিরে ফেলে। বিষয়টি মুরাদনগর থানা পুলিশ জানতে পেরে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিভাবক ও স্থানীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

ওই মাদ্রাসার একাধীক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক হাসানের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির অভিযোগ করতো। যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর অনেককে কোন প্রকার কারণ ছাড়াই মাদ্রাসা থেকে বেড় করার অভিযোগও পেয়েছি বহুবার। এ ব্যাপারে সকল শিক্ষকরা তাকে চাপদিলে সে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বিকার করতেন। পাশাপাশি মাদ্রাসার একটি রুমে এতিম ছাত্রীকে বিত্তশালির সাথে রাতভর তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগও পেয়েছি হাসান সাহেবের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে শনিবার সকালে আমরা সকলে বসে প্রধান শিক্ষক হাসান সাহেবের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিলো।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page