পুনরায় চালু হচ্ছে কুমিল্লা বিমানবন্দর

কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লা বিমানবন্দরসহ দেশের ৭টি বিমানবন্দর নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

কুমিল্লা বিমানবন্দর ছাড়া বাকি বিমানবন্দরগুলো হলো -ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, বগুড়া, শমসেরনগর ও তেজগাঁও বিমানবন্দর। দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটন খাতের বিকাশ ও যাত্রী পরিবহণ বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

কুমিল্লাবাসী দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা বিমানবন্দর চালুর জন্য দাবি জানিয়ে মানববন্ধন,স্মারকলিপি প্রদান ও মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বিভিন্ন বিমান পরিবহন কোম্পানীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছিলো।

প্রতিদিন কুমিল্লা বিমানবন্দরের ভিওআর সিগন্যাল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটের ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান। এতে মাসে ৩০ লাখ টাকার মতো আয় করছি। এ বিমানবন্দরে সবকিছুই আছে। অথচ শুধু উদ্যোগের অভাবে এখানে বিমান উঠানামা করে না।

তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লা ইপিজেড স্থাপনের সময় স্টল বিমান সুবিধা প্রদানের কথা উল্লেখ করেছিলেন। সে ওয়াদা পূরণ হলে কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ বাড়তো এবং আশপাশের দেশে কুমিল্লা থেকেই মানুষ বিমানে ভ্রমণ করতে পারতেন।

বেবিচকের পিএন্ডডিকিউ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে ২৮টি বিমানবন্দর রয়েছে। এগুলো ব্রিটিশ সরকারের আমলে তৈরি। সব বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুটের মধ্যে।
রানওয়েগুলো বর্তমানে যাত্রীবাহী বিমান পরিচালনায় অনুপযুক্ত। পর্যায়ক্রমে এই রানওয়েগুলোর দৈর্ঘ্য ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার ফুটে উন্নীত করার টার্গেট আছে বেবিচকের।

এছাড়া রানওয়ের পিসিএন ৩০ থেকে ৬০ ফুট করার টার্গেট আছে। তাহলে এটিআর কিংবা ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ মডেলের ছোট ছোট যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট অপারেশন শুরু করা সম্ভব হবে।

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর মেরামত ও সংস্কারের পর পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ কাজের ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে কাজ চলছে। এছাড়া সারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, দেশের প্রতিটি জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। শিল্প কারখানার পাশাপাশি দেশব্যাপী পর্যটন খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। একের পর এক মেগা প্রকল্প, অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এসব কারণে নতুন নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

কুমিল্লা বিমানবন্দর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে চালু ছিল। ১৯৯৪ সালে এটি পুনরায় চালু করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় দুই সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ অঞ্চলে দ্রুত শিল্পায়নের ফলে বিমান চলাচলের চাহিদা বদলেছে। তাছাড়া এ জেলায় একটি ইপিজেড থাকলেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রাজধানী থেকে সহজে সেখানে যেতে পারেন না।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ৯০-এর দশকে যখন কুমিল্লা বিমানবন্দর ফ্লাইট স্থগিত করেছিল, তখন যানজট বলতে কিছুই ছিল না।

কিন্তু এখন তিন ঘণ্টা সময়েও ঢাকা থেকে সড়কপথে কুমিল্লা পৌঁছানো যায় না। অথচ ফ্লাইটে মাত্র ২৫ মিনিটে কুমিল্লা যাতায়াতের সুবিধা মিলবে। বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে চাঁদপুর ও ফেনী অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার আরও ভালো সংযোগ তৈরি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তার মতে ১৭-১৮ আসন বিশিষ্ট বিমানগুলো ঢাকা-বগুড়া এবং ঢাকা-ঠাকুরগাঁও রুটে বাণিজ্যিকভাবে চালু করা যেতে পারে। এতে করে ১০-১১ জন যাত্রী নিয়েও একটি ফ্লাইট কোনোরকম লোকসান ছাড়াই চলাচল পারবে।

কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুল গণি বলেছেন, প্রতিদিন আমাদের সিগন্যাল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটের ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান।

এতে মাসে ৩০ লাখ টাকার মতো আয় করছি। এ বিমানবন্দরে সবকিছুই আছে। শুধু উদ্যোগের অভাবে এখানে বিমান উঠানামা করে না। বর্তমানে আমাদের এখানে ২০ জন কর্মরত রয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে একটু উদ্যোগ নিলেই বিমানবন্দরটি সচল করা সম্ভব। এজন্য রানওয়ে মেরামতসহ কিছু কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আরও ২০-২২ জন লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। আমরা চাই দ্রুত বিমানবন্দরটি চালু হোক।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page