রাজিব হোসেন জয়, দাউদকান্দি প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পুরাতন ফেরী ঘাটে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু মঞ্চ পুনরুদ্ধারের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী দাউদকান্দি উপজেলা সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা মিলতায়নের সামনে মানববন্ধন ও পরে সংবাদ সম্মেলন করে দাউদকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগ। এতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়ন লিখিত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক মঞ্চ পুনরুদ্ধারের দাবী জানান। তিনি বলেন ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু দাউদকান্দির কয়েক লক্ষ মানুষের জন সমুদ্রে ভাষন দেন। এটি বঙ্গবন্ধু মঞ্চ নামে ব্যাপক পরিচিত ছিল।ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু মঞ্চ কারো দখলে থাকা দূঃখ জনক। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মঞ্চ ভবনটি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন ও উপজেলা বিএনপির সভাপতির পরিবারের দখলে আছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,দাউদকান্দিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত “বঙ্গবন্ধু মঞ্চ” ছিল। যা আজ অন্যের দখলে। জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধু মঞ্চ কারো দখলে থাকা সত্যিই দুঃখজনক। এটি দাউদকান্দিবাসীর জন্য অপমানজনকও।
ইতিহাসের সাক্ষী এই বঙ্গবন্ধু মঞ্চ। এটি স্বাধীনতার স্থপতি এবং জাতির পিতার স্মৃতিবিজড়িত স্থান। দাউদকান্দি পুরাতন ফেরিঘাটে অবস্থিত “বঙ্গবন্ধু মঞ্চে” দাঁড়িয়ে ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ দাউদকান্দির কয়েক লক্ষ মানুষের জনসমুদ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেন। তখন এটি “বঙ্গবন্ধু মঞ্চ” নামে ব্যাপক পরিচিত ছিল। এই বঙ্গবন্ধু মঞ্চের কথা আজও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আমাদের মুরুব্বিদের মুখে মুখে ফেরে। সুতরাং চলমান মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালেও, বঙ্গবন্ধু মঞ্চ অন্যের দখলে থাকবে- এই অবমাননা আমরা সহ্য করবো না। বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের সন্তানগণ এবং একাত্তরের শহীদ পরিবার সহ্য করবে না। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মী ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্ম- সহ্য করবো না। সুতরাং বঙ্গবন্ধু মঞ্চ পুনরুদ্ধার করে পুনঃস্থাপন করা ইতিহাসের দাবি বলে এ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন।
তিনি আরো বলেন, পুরাতন ফেরিঘাটে অবস্থিত ঐতিহাসিক “বঙ্গবন্ধু মঞ্চ” পুনরুদ্ধারের দাবিতে গতকাল রোববার (২০ ডিসেম্বর ২০২০) দুপুরে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। এরআগে, বঙ্গবন্ধু মঞ্চ” পুনরুদ্ধারের দাবিতে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে আমরা আন্দোলন-ধর্মঘট-মানববন্ধন ও ঘেরাও কর্মসূচি করেছি। এতে অংশ নেন দাউদকান্দি উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ জনতা। তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে এবং দাউদকান্দিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতির পিতা স্মৃতি বিজড়িত এই বঙ্গবন্ধু মঞ্চটি আমরা উদ্ধার করব। প্রয়োজনে আন্দোলন করবো।
বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তার স্ত্রীর নামে বঙ্গবন্ধু মঞ্চের ২৫ শতক জায়গার দ্বিতল ভবনটি, নামমাত্র দামে তথাকথিত নিলামের সূত্রে নিজেদের নামে নিয়ে নেন। শুনেছি এরপর এটি উত্তরাধিকারীর নামে লিখে দেওয়া হয়।
দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বঙ্গবন্ধু মঞ্চ পুনরুউদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মেজর মোহাম্মদ আলী (অব.)সহ আমরা- আপনাদের মাধ্যমে “বঙ্গবন্ধু মঞ্চ” পুনরুদ্ধার করে পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি আবারও। বঙ্গবন্ধু মঞ্চ পুনরুদ্ধার দ্রুতসময়ে করা দরকার। যাতে, তরুণ প্রজন্ম জানতে পারে, এখানে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার স্থপতি- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ভাষণ দিতেন। এতে তারা জানতে পারবে সঠিক ইতিহাস। উদ্বুদ্ধ হবে দেশপ্রেমে বলে তিনি জানান।
লিখিত বক্তব্য শেষে তরিকুল ইসলাম নয়ন সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা যুবলীগ যুগ্ন আহবায়ক হেলাল মাহমুদ,হাজী আল আমিন সদস্য মুরাদ চৌধুরী সুমন, উপজেলা ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন,পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি রাজিব মোল্লাসহ আরো অনেকে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page