তাপস চন্দ্র সরকার।।
কুমিল্লায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে পরিবহন নেতা রেজাউল করিম প্রকাশ্যে রাজা মিয়াকে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।
বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার পুরাতন চরচাষি ছায়েদ আলী মুন্সী বাড়ীর মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে মৃত মোঃ রেজাউল করিম প্রকাশ্যে রাজা মিয়া তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিন সতানন্দি গ্রামে শ্বশুর সাবেক কাউন্সিলর আঃ আউয়াল মিয়ার বাড়ীর পাশে জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলো।
২০১৪ সালের ১৩ জুন রাতের কোন এক সময় ওই বাড়ীরে উঠানে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে আসামীরা।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোঃ খাজা মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের নামে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দাউদকান্দি থানা পুলিশ মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর নিহতের স্ত্রী মোসাঃ আলো আক্তারসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জসীট দাখিল করেন। বাকী দুজন আসামী হলো- দক্ষিন সতানন্দি শীলবাড়ী গ্রামের শান্তি রঞ্জন শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল ও চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর দক্ষিন গ্রামের আঃ সামাদের পুত্র মোঃ রাসেদ।
পুলিশ মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অপর দুই আসামী তাপস চন্দ্র শীল ও রাসেদ এর নাম বলেন। এরপর পুলিশ অপর দুই আসামিকে গ্রেফতার করিলে সকল আসামি আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
এই মামলায় ২১জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে এবং স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে পলাতক আসামী তাপস চন্দ্র শীল, পলাতক আসামি মোসাঃ আলো আক্তার এবং আসামি মোঃ রাসেদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত।
রায় ঘোষনাকালে আসামি রাসেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর আসামি মোসাঃ আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি এড. মোঃ নজরুল ইসলাম এবং আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. নোমান ও এড. মাসুদ সালাউদ্দিন।
এদিকে, রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এপিপি নজরুল বলেন- এই রায়ের ফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মামলার এজাহারকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ শীঘ্রই রায় কার্যকর করার জন্য জোর দাবী জানান।
অপরদিকে, আসামী পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী বিজ্ঞ এডভোকেট মোঃ মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন- এ রায়ে আসামী পক্ষ ক্ষুদ্ধ। রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page