০৮:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চৌদ্দগ্রামে তুলাপুষ্কুরণী সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা আলী হোসেন সজিব বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই ৩১ দফার মূল লক্ষ্য -হাজী ইয়াছিন বুড়িচংয়ে কলেজ ছাত্র অপহরণের পর নির্মম নির্যাতন, পাঁচ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে সোহাগ বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত “আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানের সৈনিক, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই”- কামরুল হুদা মুরাদনগরে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা পেলেন ২৮০ জন নারী-পুরুষ কুমিল্লায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে স্বামীর আত্মহত্যা চৌদ্দগ্রামে প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী নারীর জমি দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি কুমিল্লায় সবুজের স্বপ্নপুরিতে টিফিনের টাকায় ৫০ হাজার গাছের চারা বিতরণ

মুরাদনগরে ডাকাতি হয়নি, তবে কেন গণপিটুনিতে ২ জনকে হত্যা?

  • তারিখ : ১০:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • 25

নিউজ ডেস্ক।।
ডাকাত সন্দেহে কুমিল্লায় তিন জনকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। অপরজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে নুরু মিয়া (২৮), পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৭)। আহত হয়েছেন সদর দক্ষিণের কোটবাড়ী বাঘমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহান (২৮)।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এর আগে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও গত রাতে উপজেলার কোথাও ডাকাতি হয়নি। এমনকি ডাকাত বলে তাদের চিহ্নিতও করেনি কেউ। শুধু সন্দেহ করেই তিন জনকে ধরে গণপিটুনি দেন স্থানীয় জনতা। এতে দুজন মারা যান।

গত রাতের বর্ণনা দিয়ে এক যুবক বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান মানুষের এই আতঙ্ক দেখে কিছু দিন ধরেই বলছিলেন সবাই বাড়ি বাড়ি পাহারা বসাতে। পাহারায় কাউকে সন্দেহ হলে চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে কল দিতে। যেই কথা সেই কাজ। স্থানীয়রাও পাহারা বসান। সবাই সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। প্রথমে শুরু হয় পালাসুতা ঈদগাহ মাঠ থেকে। সেখানে ১৫-২০ জন লোককে নাকি দেখেছে এলাকার কয়েকজন। তখন তারা ডাকাত মনে করে চিৎকার করতে থাকে। পরে দৌড়াদৌড়ির একপর্যায়ে নাবু মিয়ার বাড়ি থেকে ওই তিন জনকে আটক করেন স্থানীয়রা। সেখানেই তাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, ওই রাতে অন্য এলাকায় যেভাবে ডাকাত এসেছে বলে প্রচার হয়েছে সেটা আসলে পুরোপুরি গুজব ছিল। ডাকাতির ঘটনায় গণপিটুনি শুধু পালাসুতা গ্রামেই হয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের কেউ চুরি বা ডাকাতি করতেও দেখেননি। এমনকি তাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলেও জানা যায়নি।

ওই গ্রামের আরেক যুবক বলেন, গণপিটুনিতে নিহত নূরু মিয়ার শ্বশুরের নাম নাবু মিয়া। শ্বশুরবাড়িতেই তাকে ও তার সঙ্গে দুজনকে ধরেছেন স্থানীয়রা। তারা ডাকাত না হলে কেন এসেছে এখানে এটাই বুঝি না। তাও এত রাতে।

ধারোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন খন্দকার বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সতর্ক করেছি। পাহারা বসাতে বলেছি। বলেছি অস্বাভাবিক কিছু হলে যেন আমাদের কল দেয়। স্থানীয়দের পিটুনিতে তারা মারা গেছে। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা নিহতদের বিষয়ে এবং ঘটনার নেপথ্যে কোন কারন আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, কি কারনে তাদেরকে গনপিটুনি দেয়া হয়েছে সেটা এখনো স্পস্ট নয়। আমরা চিকিৎসাধীন একজনের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

error: Content is protected !!

মুরাদনগরে ডাকাতি হয়নি, তবে কেন গণপিটুনিতে ২ জনকে হত্যা?

তারিখ : ১০:৫৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩

নিউজ ডেস্ক।।
ডাকাত সন্দেহে কুমিল্লায় তিন জনকে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। অপরজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে নুরু মিয়া (২৮), পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৭)। আহত হয়েছেন সদর দক্ষিণের কোটবাড়ী বাঘমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহান (২৮)।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এর আগে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও গত রাতে উপজেলার কোথাও ডাকাতি হয়নি। এমনকি ডাকাত বলে তাদের চিহ্নিতও করেনি কেউ। শুধু সন্দেহ করেই তিন জনকে ধরে গণপিটুনি দেন স্থানীয় জনতা। এতে দুজন মারা যান।

গত রাতের বর্ণনা দিয়ে এক যুবক বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান মানুষের এই আতঙ্ক দেখে কিছু দিন ধরেই বলছিলেন সবাই বাড়ি বাড়ি পাহারা বসাতে। পাহারায় কাউকে সন্দেহ হলে চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে কল দিতে। যেই কথা সেই কাজ। স্থানীয়রাও পাহারা বসান। সবাই সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। প্রথমে শুরু হয় পালাসুতা ঈদগাহ মাঠ থেকে। সেখানে ১৫-২০ জন লোককে নাকি দেখেছে এলাকার কয়েকজন। তখন তারা ডাকাত মনে করে চিৎকার করতে থাকে। পরে দৌড়াদৌড়ির একপর্যায়ে নাবু মিয়ার বাড়ি থেকে ওই তিন জনকে আটক করেন স্থানীয়রা। সেখানেই তাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, ওই রাতে অন্য এলাকায় যেভাবে ডাকাত এসেছে বলে প্রচার হয়েছে সেটা আসলে পুরোপুরি গুজব ছিল। ডাকাতির ঘটনায় গণপিটুনি শুধু পালাসুতা গ্রামেই হয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের কেউ চুরি বা ডাকাতি করতেও দেখেননি। এমনকি তাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলেও জানা যায়নি।

ওই গ্রামের আরেক যুবক বলেন, গণপিটুনিতে নিহত নূরু মিয়ার শ্বশুরের নাম নাবু মিয়া। শ্বশুরবাড়িতেই তাকে ও তার সঙ্গে দুজনকে ধরেছেন স্থানীয়রা। তারা ডাকাত না হলে কেন এসেছে এখানে এটাই বুঝি না। তাও এত রাতে।

ধারোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন খন্দকার বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সতর্ক করেছি। পাহারা বসাতে বলেছি। বলেছি অস্বাভাবিক কিছু হলে যেন আমাদের কল দেয়। স্থানীয়দের পিটুনিতে তারা মারা গেছে। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা নিহতদের বিষয়ে এবং ঘটনার নেপথ্যে কোন কারন আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, কি কারনে তাদেরকে গনপিটুনি দেয়া হয়েছে সেটা এখনো স্পস্ট নয়। আমরা চিকিৎসাধীন একজনের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।