০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাব নিহত বুড়িচংয়ে হুইলচেয়ার, সেলাই মেশিন ও গৃহ নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করলেন ড. মোবারক হোসেন ধানের শীষের প্রার্থী ড. মোশাররফ হোসেনের পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ শুরু দাউদকান্দিতে নিসচা’র ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বুড়িচং প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় রেললাইনের পাশ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার : ৯ আসামি গ্রেফতার কুমিল্লা ইপিজেডে বকেয়া বেতনের দাবিতে নাসা গ্রুপের শ্রমিকদের বিক্ষোভ কুমিল্লায় টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি; দুই ঘণ্টা সেবা বন্ধ নবগঠিত বুড়িচং পৌরসভার মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন : পিআরএ কর্মশালা অনুষ্ঠিত জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সাংবাদিকদের স্বাধীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হবে: ড. মোবারক হোসেন

কুমিল্লায় স্বামীর হত্যাকারীদের হুমকি-ধমকিতে দু’সন্তান নিয়ে অসহায় গৃহবধূ

  • তারিখ : ১০:১৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২
  • 39

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা।
গৃহবধূ রুবি আক্তার। দুই পাশে তার দুই কন্যা শিশু। শিশু দুটির চোখেমুখে বাবা হারানোর শোক। আর গৃহবধূর চাহনিতে আতংক। প্রতিনিয়ত স্বামীর হত্যাকারীদের হুমকি ধমকির আতংক দিন কাটছে। দুই সন্তান নিয়ে অসহায় ওই গৃহবধূ কোথায় যাবেন কি করবেন বুঝতে পারছে না।

গত ২০ মার্চ কুমিল্লা আদর্শ উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকায় মসজিদে তাবারক বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে রুবি আক্তারের স্বামী মাসুক মিয়া (২৮) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই দুই শিশু সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূ।

এদিকে গত ২০ মার্চ মাসুক খুনের ঘটনায় পরদিন তার বড় ভাই মোঃ জালাল ৮ জনকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা এক নম্বর আসামি মোঃ নাছির ও পাঁচ নম্বর আসামি মামুন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার রয়েছে।

মামলার অন্য পলাতক আসামিরা হলো- স্থানীয় সফিকুর রহমান ওরফে মালু মিয়ার ছেলে অহিদ মিয়া, তার ভাই কবির হোসেন, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আশেক, মোঃ নাছিরের মেয়ে জেসি এবং নাছিরের স্ত্রী রানী বেগম।

হত্যা মামলায় ১০ দিন পরেও অন্য আসামীদের ধরতে তেমন অগ্রগতি নেই। ঘটনার দিন হাসপাতাল থেকে দুই আসামি গ্রেপ্তারের বাইরে মামলার আর কোন আসামিকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

নিহত মাসুকের পরিবারের দাবী, মামলার আসমিরা এখনো ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকলেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ। এদিকে আসামিরা এখলো গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার ও তার পরিবার।

মাসুকের বড় ভাই মামলার বাদী মোঃ জালালকেও অপরিচিত নাম্বার থেকে দেয়া হচ্ছে হুমকি ধমকি।

নিহত মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার জানান, মামলার প্রধান আসামি নাছির ও অহিদ মিয়াসহ অন্যান্যরা মিলে আমার স্বামী মাসুককে হত্যা করে। এই ঘটনার পর এলাকাবাসী নাসির ও অহিদকে আটক করে মারধর দিয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ নাছির ও মামুন নামে দুই আসামিকে আটক করলেও অন্যতম প্রধান আসামি অহিদ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে অভিযুক্ত আর কাউকে আটক করতে পারে নি পুলিশ।

মামলার বাদী মোঃ জালাল বলেন, আমার ভাই মাসুক হত্যার ঘটনায় আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছি। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি নাছির এবং পাচ নম্বর আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় আমরা এখন অনিরাপত্তায় ভুগছি। আমার ভাই মাসুক দুইটি ছোট ছোট মেয়ে রেখে হত্যার শিকার হলো, তার স্ত্রী অসুস্থ- তারাও অনিরাপদ। আমার স্ত্রীর নাম্বারেও কে বা কারা ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কথা বলে- ধারণা করছি এসব ওই আসামিদের কাজ। তবে আমরা যতটুকু জানি আসামিরা অনেকেই কুমিল্লাতেই আছে। পুলিশ আরেকটু প্রচেষ্টা করলেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারে। আমরা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবী করছি।

পাঁচ নং পাঁচথুবি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হারুন উর রশিদ জানান, যারা এই মামলার প্রকৃত আসামি তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবী জানাই। করো ইন্ধনে যেন মামলা প্রবাহিত না হয় কিংবা নির্দোষ কেউ যেন সাজা না পায় সেটিও আমাদের দাবী। তাই আমরা চাই পুলিশ দ্রুত ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ- পরিদর্শক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, মামলার দুই জন আসামিই এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার আছে। বাকিদের ধরতে প্রচেষ্টা চলমান আছে। হাসপাতাল থেকে অন্যতম আসামি অহিদ পালিয়ে যাবার বিষয়ে তিনি বলেন, সে সময় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অহিদ পালিয়ে যায়, তাকে ধরার জন্যও পুলিশ তৎপর।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ শবে বরাতের রাতে মসজিদে তাবারুক বিতরন নিয়ে ঝগড়ার জেরে ২০ মার্চ সন্ধ্যায় খুন হয় পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকার মাসুক মিয়া। সে পেশায় একজন রঙমিস্ত্রী। তিনি দু’টি শিশুকন্যা সন্তানের জনক।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় স্বামীর হত্যাকারীদের হুমকি-ধমকিতে দু’সন্তান নিয়ে অসহায় গৃহবধূ

তারিখ : ১০:১৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা।
গৃহবধূ রুবি আক্তার। দুই পাশে তার দুই কন্যা শিশু। শিশু দুটির চোখেমুখে বাবা হারানোর শোক। আর গৃহবধূর চাহনিতে আতংক। প্রতিনিয়ত স্বামীর হত্যাকারীদের হুমকি ধমকির আতংক দিন কাটছে। দুই সন্তান নিয়ে অসহায় ওই গৃহবধূ কোথায় যাবেন কি করবেন বুঝতে পারছে না।

গত ২০ মার্চ কুমিল্লা আদর্শ উপজেলার পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকায় মসজিদে তাবারক বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে রুবি আক্তারের স্বামী মাসুক মিয়া (২৮) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই দুই শিশু সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূ।

এদিকে গত ২০ মার্চ মাসুক খুনের ঘটনায় পরদিন তার বড় ভাই মোঃ জালাল ৮ জনকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা এক নম্বর আসামি মোঃ নাছির ও পাঁচ নম্বর আসামি মামুন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার রয়েছে।

মামলার অন্য পলাতক আসামিরা হলো- স্থানীয় সফিকুর রহমান ওরফে মালু মিয়ার ছেলে অহিদ মিয়া, তার ভাই কবির হোসেন, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আশেক, মোঃ নাছিরের মেয়ে জেসি এবং নাছিরের স্ত্রী রানী বেগম।

হত্যা মামলায় ১০ দিন পরেও অন্য আসামীদের ধরতে তেমন অগ্রগতি নেই। ঘটনার দিন হাসপাতাল থেকে দুই আসামি গ্রেপ্তারের বাইরে মামলার আর কোন আসামিকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

নিহত মাসুকের পরিবারের দাবী, মামলার আসমিরা এখনো ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকলেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ। এদিকে আসামিরা এখলো গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার ও তার পরিবার।

মাসুকের বড় ভাই মামলার বাদী মোঃ জালালকেও অপরিচিত নাম্বার থেকে দেয়া হচ্ছে হুমকি ধমকি।

নিহত মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার জানান, মামলার প্রধান আসামি নাছির ও অহিদ মিয়াসহ অন্যান্যরা মিলে আমার স্বামী মাসুককে হত্যা করে। এই ঘটনার পর এলাকাবাসী নাসির ও অহিদকে আটক করে মারধর দিয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ নাছির ও মামুন নামে দুই আসামিকে আটক করলেও অন্যতম প্রধান আসামি অহিদ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে অভিযুক্ত আর কাউকে আটক করতে পারে নি পুলিশ।

মামলার বাদী মোঃ জালাল বলেন, আমার ভাই মাসুক হত্যার ঘটনায় আট জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছি। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি নাছির এবং পাচ নম্বর আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় আমরা এখন অনিরাপত্তায় ভুগছি। আমার ভাই মাসুক দুইটি ছোট ছোট মেয়ে রেখে হত্যার শিকার হলো, তার স্ত্রী অসুস্থ- তারাও অনিরাপদ। আমার স্ত্রীর নাম্বারেও কে বা কারা ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কথা বলে- ধারণা করছি এসব ওই আসামিদের কাজ। তবে আমরা যতটুকু জানি আসামিরা অনেকেই কুমিল্লাতেই আছে। পুলিশ আরেকটু প্রচেষ্টা করলেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারে। আমরা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবী করছি।

পাঁচ নং পাঁচথুবি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হারুন উর রশিদ জানান, যারা এই মামলার প্রকৃত আসামি তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবী জানাই। করো ইন্ধনে যেন মামলা প্রবাহিত না হয় কিংবা নির্দোষ কেউ যেন সাজা না পায় সেটিও আমাদের দাবী। তাই আমরা চাই পুলিশ দ্রুত ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ- পরিদর্শক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, মামলার দুই জন আসামিই এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার আছে। বাকিদের ধরতে প্রচেষ্টা চলমান আছে। হাসপাতাল থেকে অন্যতম আসামি অহিদ পালিয়ে যাবার বিষয়ে তিনি বলেন, সে সময় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অহিদ পালিয়ে যায়, তাকে ধরার জন্যও পুলিশ তৎপর।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ শবে বরাতের রাতে মসজিদে তাবারুক বিতরন নিয়ে ঝগড়ার জেরে ২০ মার্চ সন্ধ্যায় খুন হয় পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকার মাসুক মিয়া। সে পেশায় একজন রঙমিস্ত্রী। তিনি দু’টি শিশুকন্যা সন্তানের জনক।