০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রাজধানীতে ২৬ টুকরা লাশের ঘটনার মূলহোতা কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার বুড়িচংয়ে পুকুরে সেচ পাম্পে সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু চৌদ্দগ্রামে গুনবতী জনসভার সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে ইউনিয়ন জামায়াতের সংবাদ সম্মেলন চৌদ্দগ্রামে উজিরপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের নির্বাচনী প্রস্তুতি ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত গোমতী কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে প্রবাসীর মৃত্যু কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৬ বছরের শিশুর মৃত্যু সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ; লটারি পদ্ধতি বহাল ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা ব্যর্থ ইউনূস সরকার; কুমিল্লায় ইসলামী ৮ দলের নেতারা কুমিল্লা-৪ আসনে এনসিপির মনোনয়ন ফরম কিনলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নারায়ণগঞ্জে এক নারীকে হত্যা; কুমিল্লার যুবক গ্রেফতার

  • তারিখ : ১১:০১:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
  • 65

নিউজ ডেস্ক।।
নারায়ণগঞ্জের সদর থানার চর সৈয়দপুরে বস্তাবন্দী নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল। এতে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার মুরাদপুর এলাকার ইয়াকুবের ছেলে জীবন (৩০) এবং তার কথিত স্ত্রী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার হাসনাপাড়া এলাকার সৈয়দ মান্নানের মেয়ে নুসরাত জাহান মীম (৪০)।

হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীর নাম অনন্যা কর্মকার (৩৫)। তিনি ঝালকাঠি জেলার ডাক্তারপট্টি এলাকার মৃত নগেন্দ্রনাথ কর্মকারের মেয়ে। গত রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে জীবন এবং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে নুসরাত জাহান মীম হত্যার জবানবন্দি দেন।

আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জ, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও কীভাবে এটি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, গত ৫ মার্চ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকা থেকে অনন্যা কর্মকারের লাশ উদ্ধার করি। ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তাঁর পরিচয় জেনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সে সময় জানা যায়, অনন্য কর্মকার একজন গৃহিণী ছিলেন এবং চর সৈয়দপুর এলাকায় বাস করতেন। এক বছর আগে তাঁর স্বামী হরে কৃষ্ণ মারা যান। নিঃসন্তান এই নারী একা একা কিছু করার কথা ভাবছিলেন। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় নুসরাত জাহান মীমের সঙ্গে।

পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার জানান, আলাদাভাবে ব্যবসা করার কথা বলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মীম তাঁর কথিত স্বামী জীবনকে নিয়ে ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানেই সাবলেটে থাকা শুরু করেন অনন্যা। জীবন মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে ছিলেন। গত ২ মার্চ দুপুরে অনন্যা বাথরুমে গোসল করতে গেলে জীবন তাঁর মোবাইল চেক করে দেখতে পান অনন্যার ভাই আমেরিকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। সেই টাকা দেখে তা হাতানোর পরিকল্পনা করেন জীবন।

আল মামুন শিকদার বলেন, ৪ মার্চ বাসায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসেন জীবন। অনন্যার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। বেলা আড়াইটার দিকে রুমে ঢুকে টাকা চুরি করতে গেলে অনন্যা জেগে ওঠেন ও চিৎকার শুরু করেন। জীবন সঙ্গে সঙ্গে বালিশ চাপা দিয়ে অনন্যাকে হত্যা করেন। পরে মীমের সহযোগিতায় বড় প্লাস্টিকের বস্তা এনে লাশ বেঁধে ফেলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাশটি চর সৈয়দপুর এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই ঘটনার পর অনন্যার ভাই দেবব্রত কর্মকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পিআইবি’র উপপরিদর্শক সাজেদুল শাকিল মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর দুই আসামিকে যথাক্রমে কুমিল্লা ও বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার করার পরেও আসামি জীবন সরকার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে ধরতে গিয়ে আহত হন সাজেদুল শাকিল। আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের পর উভয়কে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

error: Content is protected !!

নারায়ণগঞ্জে এক নারীকে হত্যা; কুমিল্লার যুবক গ্রেফতার

তারিখ : ১১:০১:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

নিউজ ডেস্ক।।
নারায়ণগঞ্জের সদর থানার চর সৈয়দপুরে বস্তাবন্দী নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল। এতে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার মুরাদপুর এলাকার ইয়াকুবের ছেলে জীবন (৩০) এবং তার কথিত স্ত্রী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার হাসনাপাড়া এলাকার সৈয়দ মান্নানের মেয়ে নুসরাত জাহান মীম (৪০)।

হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীর নাম অনন্যা কর্মকার (৩৫)। তিনি ঝালকাঠি জেলার ডাক্তারপট্টি এলাকার মৃত নগেন্দ্রনাথ কর্মকারের মেয়ে। গত রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে জীবন এবং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে নুসরাত জাহান মীম হত্যার জবানবন্দি দেন।

আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জ, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও কীভাবে এটি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, গত ৫ মার্চ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকা থেকে অনন্যা কর্মকারের লাশ উদ্ধার করি। ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তাঁর পরিচয় জেনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সে সময় জানা যায়, অনন্য কর্মকার একজন গৃহিণী ছিলেন এবং চর সৈয়দপুর এলাকায় বাস করতেন। এক বছর আগে তাঁর স্বামী হরে কৃষ্ণ মারা যান। নিঃসন্তান এই নারী একা একা কিছু করার কথা ভাবছিলেন। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় নুসরাত জাহান মীমের সঙ্গে।

পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার জানান, আলাদাভাবে ব্যবসা করার কথা বলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মীম তাঁর কথিত স্বামী জীবনকে নিয়ে ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানেই সাবলেটে থাকা শুরু করেন অনন্যা। জীবন মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে ছিলেন। গত ২ মার্চ দুপুরে অনন্যা বাথরুমে গোসল করতে গেলে জীবন তাঁর মোবাইল চেক করে দেখতে পান অনন্যার ভাই আমেরিকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। সেই টাকা দেখে তা হাতানোর পরিকল্পনা করেন জীবন।

আল মামুন শিকদার বলেন, ৪ মার্চ বাসায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসেন জীবন। অনন্যার খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। বেলা আড়াইটার দিকে রুমে ঢুকে টাকা চুরি করতে গেলে অনন্যা জেগে ওঠেন ও চিৎকার শুরু করেন। জীবন সঙ্গে সঙ্গে বালিশ চাপা দিয়ে অনন্যাকে হত্যা করেন। পরে মীমের সহযোগিতায় বড় প্লাস্টিকের বস্তা এনে লাশ বেঁধে ফেলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লাশটি চর সৈয়দপুর এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই ঘটনার পর অনন্যার ভাই দেবব্রত কর্মকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পিআইবি’র উপপরিদর্শক সাজেদুল শাকিল মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর দুই আসামিকে যথাক্রমে কুমিল্লা ও বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার করার পরেও আসামি জীবন সরকার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে ধরতে গিয়ে আহত হন সাজেদুল শাকিল। আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের পর উভয়কে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।