নিউজ ডেস্ক।।
ভূ-রাজনীতিতে বিএনপিকে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘লাফালাফি করে আপনারা ক্ষমতায় যেতে পারবেন? যারা বাতাস দিয়ে দিয়ে আপনাদের লাফাচ্ছে, তারা আপনাদের দুধ দেবে না। ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা যেমন দুধ পায় না, আপনারাও দুধ পাবেন না। সুতরাং অতো লাফালাফি করে লাভ নেই। আজকে ভূ-রাজনীতিতে আপনারা (বিএনপি) হচ্ছেন ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা।’
মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর পাঠানপাড়া শিমুলতলা মোড়ে অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৪ সালেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তখন বলেছিল, নির্বাচন করলেও এক মাস টিকবে। আমরা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। ২০১৮ সালেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন করার পর বিএনপি বলেছিল, টান দিয়েই ফেলে দেব। টান দিতে গিয়ে তারাই রশি ছিড়ে পড়ে গেছে। আমরা আজকে পৌনে ৫ কিংবা ৫ বছর ক্ষমতায় আছি। এখন বিএনপি কী বলছে? বলছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারে, কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। অতো সহজ না!’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কী বলছে? ফাইনাল খেলা আগামী (অক্টোবর) মাসে। আমরা ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যুবলীগ প্রস্তুত আছে। আমরাও ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি, কোথায় খেলবেন ফাইনাল খেলা বলুন, আমরা সেখানে যাবো। আমরা সেই ফাইনাল খেলায় আওয়ামী লীগ যাব না, যুবলীগকে পাঠাব। আমরা আমাদের ফার্স্ট টিম পাঠাব না, সেকেন্ড টিম পাঠাব। প্রয়োজনে মহিলা আওয়ামী লীগকেও পাঠাব। ওদের সঙ্গে আগে খেলেন। তারপর আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে খেলবে।’
বিএনপির উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তবে বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, ফাইনাল খেলার আগে আপনাদের খেলোয়াড়রা, আপনাদের দলে থাকে কি না, নাকি দলবদল করে ফেলে সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন। ফাইনালের আগেই যদি আপনাদের খেলোয়াড়রা দলবদল করে ফেলে তাহলে ফাইনাল খেলতে পারবেন না।’
বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন বিশ্ব বেহায়ারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে টেনে ধরতে চায়। আর বিএনপি দেশকে বিশ্ব বেহায়াদের হাতে তুলে দিতে চায়। দেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের পর্যায়ে নিযে যেতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ হয়, তখনো দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তখন ভারত মহাসাগরে সপ্তম নৌবহর এসে চোখ রাঙিয়েছিল। সেই চোখ রাঙানির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বুকের রক্ত ঢেলে সমস্ত ষড়যন্ত্র-চোখ রাঙানিকে উপড়ে ফেলে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আজকেও কেউ কেউ চোখ রাঙায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারেক জিয়া আবার হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন তৈরি করবেন। সারাদেশে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছিল, এবার পাঁচ হাজার জায়গায় বোমা হামলা হবে। রাজশাহীর বাগমারায় বাংলা ভাইয়ের উত্থান হয়েছিল, এবার সারাদেশে বাংলা ভাই হবে। বাংলাদেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তানের পর্যায়ে চলে যাবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে নানান কথা। তারা কাকে ভিসা দেবে না দেবে সেটি তাদের ব্যাপার। এটি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। এটি তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। দেখলেন না, ভারতে জো-বাইডেন কীভাবে সেলফি তুললো। আবার নিউইয়র্কে কীভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানালো। সেখানেও ছবি তুললো। আসলে ছবিই তো কথা বলে। ভিসানীতি একটি বিচ্ছিন্ন বিষয়।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কথায় উদ্বিগ্ন হয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভিসানীতির আওতায় গণমাধ্যমও আসবে। আমাদের দেশের গণমাধ্যম অত্যন্ত স্বাধীন এবং স্বচ্ছভাবে কাজ করে। আমাদের দেশের গণমাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী। শক্তিশালী স্বাধীন গণমাধ্যম সবসময় গণতন্ত্রের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সুতরাং আপনারা অন্য কাকে (আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি নেতা) ভিসা দেবেন না দেবেন কিছু আসে যায় না। তবে কেন গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি কার্যকর হবে, সেটি আমার বোধগম্য নয়। গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংবাদিক, কলামিস্ট আছেন তারা মনে করছেন, এটি আমাদের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ। অন্য কোনো দেশ আমাদের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়। এটি গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মেনে নিতে পারে না।’
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শাম্স পরশ। মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জেলা যুবলীগ সভাপতি মো. আবু সালেহর সঞ্চালনায় সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। অনুষ্ঠানে আরও অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু।
এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, জেলার সভাপতি অনিল কুমার সরকার, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-০৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page