মুহাম্মদ রকিবুল হাসান (রনি)
দেশের ১২ টি জেলার ৭০ টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
এসময় মন্ত্রী বলেন, ১২২ বছরের ইতিহাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জে এই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। এতে সিলেটের ৬০ শতাংশ ও সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ প্লাবিত হয়েছে। ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দী আছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেনা, নৌ, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ডের ৫২ টি নৌযান উদ্ধারে কাজ করছে।
এনামুর রহমান আরো জানান, এই পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ১ লাখ মানুষ। যার মধ্যে সুনামগঞ্জের ৭৫ হাজার এবং সিলেটের ৩০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটে বেড়াতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ২১ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর তিনটি বোট।
মন্ত্রী বলেন, এখনো পর্যন্ত বন্যার ঘটনায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে, যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বন্যা প্রবল হওয়ায় কারনে তা পৌছাতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থির সামান্য অগ্রগতি হলেও সুনামগঞ্জের অবস্থা অপরিবর্তিত। এছাড়া হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার পানি বাড়ছে। ২ দিন পর এই অঞ্চলে পানি কমবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বন্যায় সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ১৭ মে থেকে ২১ জুন পর্যন্ত পাঁচ দিনে মোট ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো বন্যা বিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বন্যায় দেশে ডায়রিয়া, সাপের দংশন, পানিতে ডুবে ও আঘাতজনিত কারণসহ নানা রোগে তাদের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে দুই হাজার ৯৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
এতে বলা হয়, ১৭ মে থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন, রংপুর বিভাগে তিনজন এবং সিলেট বিভাগে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ৩৬ জনের মধ্যে বজ্রপাতে ১২ জন, সাপের কামড়ে একজন, বন্যার পানিতে ডুবে ১৭ জন এবং অন্যান্য কারণে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলাভিত্তিক মারা যাওয়া তালিকায় সিলেট জেলায় ১০ জন, সুনামগঞ্জে পাঁচজন, ময়মনসিংহে পাঁচজন, নেত্রকোনায় চারজন, জামালপুর তিনজন, শেরপুরে তিনজন, মৌলভীবাজারে তিনজন, কুড়িগ্রামে দুজন এবং লালমনিরহাটে একজন রয়েছে।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে সিলেটবাসীর পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে – ”৯/১১ দারিদ্র্য বিমোচন তহবিল কুমিল্লা জোন”
কুমিল্লা জোনের এসএসসি ২০০৯ ও এইচএসসি ২০১১ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা ”৯/১১ দারিদ্র্য বিমোচন তহবিল কুমিল্লা জোন”উদ্যোগ গ্রহণ করে একটি ফান্ড তৈরি করে। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন – বাবু, ডেন্টিষ্ট মোঃ মামুন হোসাইন, আক্তার হোসেন, আল- আমিন রিয়াজ, আমজাদ হোসেন, খলিলুর রহমান, মনজুর, পিয়াস, জাকারিয়া হোসেন, হান্নান, মারুফ, আপন আহমেদ, অনি, রনি, আব্দুল আউয়াল ও রাব্বি। কুমিল্লা থেকে ছিলো অনেকে।
প্রতিটি খাবার প্যাকেট ছিল ১৩ টি আইটেম। আইটেম নাম সমূহ: চিড়া -১ কেজি, মুড়ি -৫০০ গ্রাম, গুড়-১ কেজি, বিস্কুট -৩৫০ গ্রাম, পানি – ২ লিটার, কেক ২ প্যাকেট, মিনি বিস্কুট -২ প্যাকেট, খাবার সেলাইন- ৪ পিছ, খেজুর- ৭৫০গ্রাম, ঔষধ – নাপা/ ওমিপাজল/ফ্লাজিল/হিস্টাসিন, মোমবাতি বড় ২পিছ, লাইটার – ১ পিছ, দুধ- ২০০গ্রাম
এ সকল খাদ্য সামগ্রী ৫০০টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়।
সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ প্লাবিত হয়েছে। সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ কোম্পানিগন্জ উপজেলার জেলার প্রায় কয়েকটি গ্রামে এ সকল খাদ্য বিতরণ করা হয়।
পূর্ব ইসলাম পুর ইউনিয়ন এবং উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের এইসব গ্রাম গুলোতে। রাদানগর, ১নাম্বার চন্দ্রনগর, ২নাম্বার চন্দ্রনগর, নিঘারের পাড়, গাছঘর, চরার বাজার, ধুপরিপাড়, খাকুরাইল, ফেদার গাও, চারাল খাউরি।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগে তারা সবসময় পাশে ছিল এবং পরবর্তীতে পাশে থাকবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page