১১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ব্রাহ্মণপাড়ায় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে পুকুর ও জলাশয়ে পোনামাছ অবমুক্তকরণ মনোহরগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত মুরাদনগরে ৩০ কেজি গাঁজাসহ চার মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার মুরাদনগরে দানিক সমবায় সমিতেতে জমা অর্থ ফেরত পেতে গ্রাহকদের মানববন্ধন বুড়িচংয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজেনে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শাহরাস্তিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও বৃক্ষরোপণ কুমিল্লায় অনিয়মের কারণে দুই হাসপাতাল বন্ধ করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কুমিল্লায় প্রতিবেশীকে হাসপাতালে দিয়ে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় যুবক নিহত ‎ব্রাহ্মণপাড়ায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩০ বোতল স্কাপসহ গ্রেপ্তার-১ ‎ব্রাহ্মণপাড়ায় মৎস্য সেক্টরে অগ্রগতি ও সাফল্যে বিষয়ক প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন

কুমিলায় রাতদিন চলছে জমজমাট ঈদ বাজার

  • তারিখ : ০২:০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২
  • 12

নেকবর হোসেন
কুমিল্লায় নতুন পোশাকে ঈদ উদযাপনে কেনাকাটায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর নগরীর বিপণী বিতানগুলো। পছন্দের পোশাক কিনতে ঘুরছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মাকের্টে। বিশেষ করে কুমিল্লা নগরীর শপিং মল ও বিভিন্ন মার্কেটের থ্রি-পিস কর্ণারগুলো রোজার শুরু থেকেই ক্রেতা আকর্ষণে এগিয়ে রয়েছে।
ভারত সীমান্তবর্তী এ জেলার ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের পোশাকের মধ্যে বরাবরের মতো এবারও পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে দিনরাত যেন একাকার হয়ে গেছে। তবে প্রতিটি স্থানেই পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় প্রায় আড়াই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেকে পুঁজি ভেঙে খেয়েছেন। তবে এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় বাজারে ক্রেতা সমাগম ঘটেছে আশানুরূপ। এতে তারা আশা করছেন কিছুটা হলেও এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি সড়কেই রিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দীর্ঘ লাইন। এতে প্রতিদিনই ক্রেতা সাধারণের ভিড়ে যানজটে নাকাল নগরবাসী। সড়ক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে জেলা ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদের দিনটি রাঙিয়ে তুলতে জেলা সদর ছাড়াও কুমিল্লার ১৭ উপজেলাসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও প্রতিদিন নগরে প্রবেশ করছে হাজার হাজার মানুষ। পছন্দের পোশাক ঘুরছেন মার্কেটগুলোতে। যে দোকানেই পছন্দ হচ্ছে সেখান থেকেই ক্রেতারা কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। দামও নাগালের মধ্যেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো।

নগরীর কান্দিরপাড়ের অভিজাত শপিং মল প্লানেট এসআর, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, আনন্দ সিটি সেন্টার, গণি ভূঁইয়া ম্যানশন, নিউ মার্কেট, হোসনেআরা ম্যানশন, সাইবার ট্রেড, চৌরঙ্গী শপিং সেন্টার, নূর মার্কেট, হিলটন টাওয়ার, রামঘাট এলাকার কুমিল্লা টাওয়ার, ইজি ফ্যাশন, টপটেইন, নগরীর নজরুল এভিনিউতে আড়ং, রঙ, বিশ্বরঙ, সাদাকালো, অঞ্জনস, রেইস কোর্সের ইস্টার্ন এয়াকুব প্লাজা, বাদুরতলায় ইনফিনিটি, ক্যাটসআইসহ ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে হরদম চলছে কেনাকাটা।

সাত্তার খান কমপ্লেক্সে থ্রি-পিস কিনতে আসা নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা মোশের্দ আক্তার বলেন, দুই বছর শপিং করতে পারিনি। তাই নিজের পছন্দমতো পোশাক কিনতে মার্কেটে চলে এলাম। পছন্দ মতো জামা কিনেছি। দামও নাগালের মধ্যে ছিল।

সাইফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, এবার ঈদের শপিং করে স্বস্তি পেয়েছি। কারণ কাপড় ব্যবসায়ীরা দাম নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি করেনি। মোটামোটি সাধ্যের মধ্যে সব কেনাকাটা করতে পেরেছি।

খন্দকার হক টাওয়ারের দেহনন্দন ফেব্রিকেইশনের স্বত্তাধিকারী আবু রায়হান বলেন, বিদেশি পোশাকের সঙ্গে দেশি পোশাকও পাল্লা দিয়ে চলছে। কুমিল্লা যেহেতু খাদির জন্য বিখ্যাত, সে হিসেবে খাদিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা ক্রেতাদের জন্য পাঞ্জাবি তৈরি করে থাকি এবং স্বল্প লাভেই বিক্রি করছি। কারণ করোনায় গত দুই বছর ব্যবসা করতে পারিনি, তাই এবার নামমাত্র লাভে পাঞ্জাবি বিক্রি করছি। এতে আমরা যেমন খুশি, কিনতে পেরে ক্রেতারাও খুশি।

নগরীর প্লানেট এসআর’র আপসানা রূপ বিলাশীর মালিক ওমর ফারুক জানান, তরুণীদের পছন্দের তালিকায় ভারতীয় ও পাকিস্তানি ড্রেসের চাহিদা খুব বেশি। এবারের পোশাকে বৈচিত্রময় ডিজাইন রয়েছে। অন্যবারের চেয়ে অনেক ভিন্নতা ও নান্দনিকতার কারণেই তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন ক্রেতারা। দামও নাগালের মধ্যে থাকায় বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো।

কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, গত কয়েক বছর মহামারি করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়েছেন। তারা পুঁজি সংকটে ভুগছেন। বিভিন্নভাবে ধার-দেনা করে এবারের ঈদে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। আশা করি এবছর ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তিবোধ করবেন

কুমিলায় রাতদিন চলছে জমজমাট ঈদ বাজার

তারিখ : ০২:০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২

নেকবর হোসেন
কুমিল্লায় নতুন পোশাকে ঈদ উদযাপনে কেনাকাটায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর নগরীর বিপণী বিতানগুলো। পছন্দের পোশাক কিনতে ঘুরছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মাকের্টে। বিশেষ করে কুমিল্লা নগরীর শপিং মল ও বিভিন্ন মার্কেটের থ্রি-পিস কর্ণারগুলো রোজার শুরু থেকেই ক্রেতা আকর্ষণে এগিয়ে রয়েছে।
ভারত সীমান্তবর্তী এ জেলার ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের পোশাকের মধ্যে বরাবরের মতো এবারও পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে দিনরাত যেন একাকার হয়ে গেছে। তবে প্রতিটি স্থানেই পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় প্রায় আড়াই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেকে পুঁজি ভেঙে খেয়েছেন। তবে এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় বাজারে ক্রেতা সমাগম ঘটেছে আশানুরূপ। এতে তারা আশা করছেন কিছুটা হলেও এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লা নগরীর প্রতিটি সড়কেই রিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দীর্ঘ লাইন। এতে প্রতিদিনই ক্রেতা সাধারণের ভিড়ে যানজটে নাকাল নগরবাসী। সড়ক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে জেলা ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদের দিনটি রাঙিয়ে তুলতে জেলা সদর ছাড়াও কুমিল্লার ১৭ উপজেলাসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও প্রতিদিন নগরে প্রবেশ করছে হাজার হাজার মানুষ। পছন্দের পোশাক ঘুরছেন মার্কেটগুলোতে। যে দোকানেই পছন্দ হচ্ছে সেখান থেকেই ক্রেতারা কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। দামও নাগালের মধ্যেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো।

নগরীর কান্দিরপাড়ের অভিজাত শপিং মল প্লানেট এসআর, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, আনন্দ সিটি সেন্টার, গণি ভূঁইয়া ম্যানশন, নিউ মার্কেট, হোসনেআরা ম্যানশন, সাইবার ট্রেড, চৌরঙ্গী শপিং সেন্টার, নূর মার্কেট, হিলটন টাওয়ার, রামঘাট এলাকার কুমিল্লা টাওয়ার, ইজি ফ্যাশন, টপটেইন, নগরীর নজরুল এভিনিউতে আড়ং, রঙ, বিশ্বরঙ, সাদাকালো, অঞ্জনস, রেইস কোর্সের ইস্টার্ন এয়াকুব প্লাজা, বাদুরতলায় ইনফিনিটি, ক্যাটসআইসহ ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে হরদম চলছে কেনাকাটা।

সাত্তার খান কমপ্লেক্সে থ্রি-পিস কিনতে আসা নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা মোশের্দ আক্তার বলেন, দুই বছর শপিং করতে পারিনি। তাই নিজের পছন্দমতো পোশাক কিনতে মার্কেটে চলে এলাম। পছন্দ মতো জামা কিনেছি। দামও নাগালের মধ্যে ছিল।

সাইফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, এবার ঈদের শপিং করে স্বস্তি পেয়েছি। কারণ কাপড় ব্যবসায়ীরা দাম নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি করেনি। মোটামোটি সাধ্যের মধ্যে সব কেনাকাটা করতে পেরেছি।

খন্দকার হক টাওয়ারের দেহনন্দন ফেব্রিকেইশনের স্বত্তাধিকারী আবু রায়হান বলেন, বিদেশি পোশাকের সঙ্গে দেশি পোশাকও পাল্লা দিয়ে চলছে। কুমিল্লা যেহেতু খাদির জন্য বিখ্যাত, সে হিসেবে খাদিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা ক্রেতাদের জন্য পাঞ্জাবি তৈরি করে থাকি এবং স্বল্প লাভেই বিক্রি করছি। কারণ করোনায় গত দুই বছর ব্যবসা করতে পারিনি, তাই এবার নামমাত্র লাভে পাঞ্জাবি বিক্রি করছি। এতে আমরা যেমন খুশি, কিনতে পেরে ক্রেতারাও খুশি।

নগরীর প্লানেট এসআর’র আপসানা রূপ বিলাশীর মালিক ওমর ফারুক জানান, তরুণীদের পছন্দের তালিকায় ভারতীয় ও পাকিস্তানি ড্রেসের চাহিদা খুব বেশি। এবারের পোশাকে বৈচিত্রময় ডিজাইন রয়েছে। অন্যবারের চেয়ে অনেক ভিন্নতা ও নান্দনিকতার কারণেই তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন ক্রেতারা। দামও নাগালের মধ্যে থাকায় বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো।

কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, গত কয়েক বছর মহামারি করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়েছেন। তারা পুঁজি সংকটে ভুগছেন। বিভিন্নভাবে ধার-দেনা করে এবারের ঈদে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। আশা করি এবছর ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তিবোধ করবেন