০৭:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে বুড়িচংয়ে সনদ প্রদান ও চেক বিতরণ কুমিল্লায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন কুমিল্লায় আইনজীবী আজাদ হত্যার চার্জশিটে আ’লীগ-বিএনপির ৩৫ জন নেতাদের নাম রেজিস্টার অফিস স্থাপনের মধ্য দিয়ে ময়নামতি উপজেলা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু — ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন কুমিল্লায় র‍্যাব-১১ এর অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, গাঁজা ও স্কাফসহ ৩ জন গ্রেফতার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুকুরে বিষপ্রয়োগ করে ব্যবসায়ির মাছ নিধন কুমিল্লায় প্রেমিককে ৪ টুকরো করে হত্যা; দুই দিন পর মিলাদ ও খিচুড়ি বিতরণ বাঙ্গরা উমালোচন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে অভিভাবক সমাবেশ কুমিল্লা নগরীর কাঁটাবিলে জোরপূর্বক প্রবাসীর জমি দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন কুমিল্লার উন্নয়ন ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে সদর আসনের প্রার্থী রিয়াদের সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লায় টনসিল অপারেশনে গিয়ে কিশোরীর মৃত্যু; হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালালেন ডাক্তার

  • তারিখ : ১১:০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪
  • 6

জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লায় ভূল চিকিৎসায় ৭ম শ্রেনীর পড়ুয়া মিম নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় নগরীর হেলথ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।

পরিবারের দাবি অপারেশন থিয়েটারে অতিরিক্ত অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার কারণে হার্ট ব্লক হয়ে মারা গেছে মীম।

নিহত মীম আকতার (১৫) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া কৃষ্ণপুর এলাকার মো: বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। মীম কংসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে গলায় টনসিলের ব্যাথা নিয়ে মীম তার মায়ের সাথে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর চিকিৎসক জহিরুল হকের পরামর্শে গলার কিছু পরিক্ষা করে রিপোর্ট জহিরুলকে দেখালে তিনি অপারেশনের কথা বলেন।

সেই অনুযায়ী রবিবার (২৩ই জুন) বিকেলে মীম তার মা লিপি আক্তারের সাথে টনসিল অপারেশনের জন্য কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর অপারেশনের খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ওই চিকিৎসক।

সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় চিকিৎসক জহিরুল অপারেশনের জন্য মীমকে একই এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অপর পাশে অবস্থিত হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পরপরই মীমের শারিরীক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়। ১০ মিনিট পর চিকিৎসক জহিরুল বের হয়ে স্বজনদের বলে মীম হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় মীম।

মীমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

মীমের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর জহির ডাক্তার আমারে অপারেশনের টাকা ফেরত দিতে চায়। আমাকে বলছে আমরা যত টাকা চাই ওনি আমাদের টাকা দিবো। টাকা দিয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে। আমরা রাজি না হওয়ায় জহির ডাক্তার আমার মেয়ের পরিক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে হাসপাতাল তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা থানায় অভিযোগ করবো। সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ করবো।

ঘটনার কিছু সময় পরই ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার এবং হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক জহিরুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা পর ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। নিহত মীমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।

কুমিল্লায় টনসিল অপারেশনে গিয়ে কিশোরীর মৃত্যু; হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালালেন ডাক্তার

তারিখ : ১১:০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লায় ভূল চিকিৎসায় ৭ম শ্রেনীর পড়ুয়া মিম নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় নগরীর হেলথ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।

পরিবারের দাবি অপারেশন থিয়েটারে অতিরিক্ত অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার কারণে হার্ট ব্লক হয়ে মারা গেছে মীম।

নিহত মীম আকতার (১৫) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া কৃষ্ণপুর এলাকার মো: বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। মীম কংসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে গলায় টনসিলের ব্যাথা নিয়ে মীম তার মায়ের সাথে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর চিকিৎসক জহিরুল হকের পরামর্শে গলার কিছু পরিক্ষা করে রিপোর্ট জহিরুলকে দেখালে তিনি অপারেশনের কথা বলেন।

সেই অনুযায়ী রবিবার (২৩ই জুন) বিকেলে মীম তার মা লিপি আক্তারের সাথে টনসিল অপারেশনের জন্য কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর অপারেশনের খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ওই চিকিৎসক।

সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় চিকিৎসক জহিরুল অপারেশনের জন্য মীমকে একই এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অপর পাশে অবস্থিত হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পরপরই মীমের শারিরীক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়। ১০ মিনিট পর চিকিৎসক জহিরুল বের হয়ে স্বজনদের বলে মীম হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় মীম।

মীমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

মীমের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর জহির ডাক্তার আমারে অপারেশনের টাকা ফেরত দিতে চায়। আমাকে বলছে আমরা যত টাকা চাই ওনি আমাদের টাকা দিবো। টাকা দিয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে। আমরা রাজি না হওয়ায় জহির ডাক্তার আমার মেয়ের পরিক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে হাসপাতাল তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা থানায় অভিযোগ করবো। সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ করবো।

ঘটনার কিছু সময় পরই ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার এবং হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক জহিরুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা পর ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। নিহত মীমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।