
সোহরাব হোসেন।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটির ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-০১ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে তারা এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। সারাদেশের মতো দেবিদ্বারেও এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
দেবিদ্বার জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, সমিতির অধীনে মোট ৭৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৫০ জন ইতোমধ্যেই গণছুটিতে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
দেবিদ্বার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-০১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. আকিয়াব হোসেন বলেন, একাধিকবার কমিটি গঠনসহ সংকট সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, বদলি, বরখাস্তসহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্তাদেশ বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চার দফা দাবি-
১. আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় কোম্পানি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
২. সব চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীকে (মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক ও প্রেষিত বিলিং সহকারী) নিয়মিতকরণ করতে হবে।
৩. চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত, বদলি ও সাময়িক বরখাস্ত করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনর্বহাল এবং বিদ্যুৎ বিভাগের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্মচারীরা আরও অভিযোগ করেন, গত ১৭ আগস্ট ২০২৫ থেকে এখন পর্যন্ত হয়রানিমূলকভাবে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত ও সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব আদেশ বাতিল করে আগের কর্মস্থলে পুনর্বহাল করার দাবি তুলেছেন তারা। এছাড়া জরুরি সেবায় নিয়োজিত লাইনক্রুদের জন্য কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির সময় যোগ দিতে না পারা পাঁচজন লাইনক্রুকে আগের কর্মস্থলে যোগদানের সুযোগ করে দেওয়ারও দাবি জানান।
আন্দোলনের কারণে সাধারণ গ্রাহকরা বিদ্যুৎসেবায় ভোগান্তিতে পড়বেন কিনা জানতে চাইলে ডিজিএম মো. আকিয়াব হোসেন বলেন, “গ্রাহকরা কোনো সমস্যায় পড়বেন না। আমরা যারা আছি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সেবা সচল রাখতে।”
স্থানীয়রা বলছেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের এ কর্মসূচির কারণে সাময়িক ভোগান্তির শঙ্কা থাকলেও তারা দ্রুত সমাধান চান। আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে বিদ্যুৎ খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।