
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের এক ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে কলেজ প্রশাসন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম তোহফা গোফরান, তিনি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখার দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন। পরে তারা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তোহফা গোফরান তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই ঘটনা শুধু বহিষ্কারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমরা চাই, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং কারা এর পেছনে আছে, তাও খুঁজে বের করতে হবে।”
ঘটনার পরপরই কলেজ প্রশাসন একটি জরুরি বৈঠকে বসে এবং অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে তোহফা গোফরানকে সাময়িক বহিষ্কার করে। বহিষ্কারপত্রে বলা হয়, “দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী তোহফা গোফরান মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাকে কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। সে কলেজের কোনো ক্লাস, পরীক্ষা বা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল বাসার ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। পাশাপাশি বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।”
এদিকে ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের একাংশ দাবি জানায়, শুধু বহিষ্কার নয়, দায়ীদের বিরুদ্ধে ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন’ ও দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারা অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে সামাজিক মাধ্যমে অনেককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।