০৯:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বাসে শ্লীলতাহানি-ছিনতাইয়ের শিকার কুবি শিক্ষার্থী, দুই অভিযুক্তের কারাদণ্ড কুমিল্লায় সিমেন্টবাহী লরির নিচে প্রাইভেটকার, একই পরিবারের ৪ জন নিহত হোমনায় নার্সের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, তদন্তের দাবি কুমিল্লার তরুণ প্রজন্মের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন বুড়িচংয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কীটনাশক দোকানে জরিমানা কুমিল্লায় ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত, আহত ৪ কুমিল্লা নগরীর বিসিকে যুবককে পিটিয়ে হত্যা ব্রাহ্মণপাড়ায় ৬ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ ট্রাক চালককে জরিমানা ব্রাহ্মণপাড়ায় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে পুকুর ও জলাশয়ে পোনামাছ অবমুক্তকরণ মনোহরগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

বাসে শ্লীলতাহানি-ছিনতাইয়ের শিকার কুবি শিক্ষার্থী, দুই অভিযুক্তের কারাদণ্ড

  • তারিখ : ০৬:৫৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • 374

বি এম ফয়সাল, কুবি।।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী চট্টগ্রামগামী সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে শ্লীলতাহানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে বাস থেকে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দুইজনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে মহাসড়কের দুইপাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

আটক হওয়া অভিযুক্তরা হলেন— মো. আলী হোসেন (বরুড়া) ও মোহাম্মদ আলী (নারায়ণগঞ্জ)।

ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, আলেখারচর থেকে চট্টগ্রামগামী সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী। এসময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না। পদুয়ার বাজারের দিকে যেতে যেতে বাসের হেলপারসহ চারজন তার হাত-পা বেঁধে ফেলে, গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। পরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একজনকে বাস থেকে পড়ে যেতে দেখে তারা বাস থামান। এসময় অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পালিয়ে যায়, আর দুইজনকে তারা ধরে ফেলেন। পরে শিক্ষার্থীরা এসে আটক দুজনকে মারধর করেন। পুলিশ তাদের হেফাজতে নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি হননি এবং মহাসড়ক অবরোধ করেন।

অবরোধ চলাকালে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেন্টমার্টিন পরিবহনের দুইটি বাসও বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক করে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চয়তার আশ্বাস দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। তবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজটের প্রভাব থাকে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার এসিল্যান্ড সজীব তালুকদার বলেন, “লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা অভিযোগ স্বীকার করে স্বাক্ষর দিয়েছেন।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম জানান, “মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আটক দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এটি অজামিনযোগ্য। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্টিমের ক্ষতিপূরণ আটক বাসের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি তিনজনকে গ্রেফতার করা হবে। এক মাসের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। ছিনতাই, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগও আলাদাভাবে খতিয়ে দেখা হবে।”

ঘটনাস্থলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার উপস্থিত হলেও অসুস্থতার কথা বলে সরে যান। তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাসে শ্লীলতাহানি-ছিনতাইয়ের শিকার কুবি শিক্ষার্থী, দুই অভিযুক্তের কারাদণ্ড

তারিখ : ০৬:৫৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

বি এম ফয়সাল, কুবি।।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী চট্টগ্রামগামী সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে শ্লীলতাহানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে বাস থেকে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দুইজনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে মহাসড়কের দুইপাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

আটক হওয়া অভিযুক্তরা হলেন— মো. আলী হোসেন (বরুড়া) ও মোহাম্মদ আলী (নারায়ণগঞ্জ)।

ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, আলেখারচর থেকে চট্টগ্রামগামী সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী। এসময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না। পদুয়ার বাজারের দিকে যেতে যেতে বাসের হেলপারসহ চারজন তার হাত-পা বেঁধে ফেলে, গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। পরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একজনকে বাস থেকে পড়ে যেতে দেখে তারা বাস থামান। এসময় অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পালিয়ে যায়, আর দুইজনকে তারা ধরে ফেলেন। পরে শিক্ষার্থীরা এসে আটক দুজনকে মারধর করেন। পুলিশ তাদের হেফাজতে নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তা মানতে রাজি হননি এবং মহাসড়ক অবরোধ করেন।

অবরোধ চলাকালে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেন্টমার্টিন পরিবহনের দুইটি বাসও বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক করে রাখেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চয়তার আশ্বাস দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। তবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজটের প্রভাব থাকে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার এসিল্যান্ড সজীব তালুকদার বলেন, “লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা অভিযোগ স্বীকার করে স্বাক্ষর দিয়েছেন।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম জানান, “মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আটক দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এটি অজামিনযোগ্য। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্টিমের ক্ষতিপূরণ আটক বাসের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি তিনজনকে গ্রেফতার করা হবে। এক মাসের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। ছিনতাই, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগও আলাদাভাবে খতিয়ে দেখা হবে।”

ঘটনাস্থলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার উপস্থিত হলেও অসুস্থতার কথা বলে সরে যান। তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।