স্ত্রীর মর্যাদা, সন্তানের স্বীকৃতির দাবী ও জীবনের নীরাপত্তা চেয়ে আ’লীগ নেত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লায় স্ত্রীর মর্যাদা, সন্তানের স্বীকৃতির দাবী ও জীবনের নীরাপত্তা চেয়ে এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিশাত আহম্মেদ খান নামে এক মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী। নিশাত খান কুমিল্লা দক্ষিন জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় মহিলা সংস্থা কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য।

বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার স্বামী মোঃ মিনহাজুর রহমান এর বিরুদ্ধে লিখিত আকারে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মনির আহম্মেদ খান বীর প্রতিক (খেতাব প্রাপ্ত-৭৯) রেজি নং ৩৩০, কুমিল্লা জেলা আওয়ামীলীগের তিন বারের সভাপতি অধ্যাপক মরহুম খোরশেদ আলম এমপি তার নিকট আত্বীয় চাচা। কসবা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সস্পাদক ও বর্তমান যুগ্ন আহবায়ক কাজী আজহারুল ইসলাম তার মামা। তার বাবা, চাচা, মামা সহ অন্যান্য সদস্য সকলেই আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে রক্তের সম্পর্ক ও ওপপ্রোতভাবে জড়িত।

২০১১ সালে তার স্বামী মিনহাজুর রহমান ইটালি থাকা অবস্থায় তার ভাগ্নে এডভোকেট শহিদুল হক স্বপন এর মধ্য দিয়ে পরিচয় হয়। ২০১৩ সালে সে দেশে এসে নিশতকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে মিনহাজের সাথে বিয়ের দিন ধার্য্য হয়। নূরপুর হাউজিংয়ের বাসায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের আগ মুহুর্তে সে কাবিন রেজিষ্ট্রী করতে পারবে না, কারন হিসেবে সে জানায় তার প্রথম স্ত্রীর সাথে একটা মামলা চলমান আছে ওই মামলাটা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাবিন রেজিষ্ট্রী করা যাবে না। দুইমাসের মধ্যে মামলা শেষ হলে কাবিন রেজিষ্ট্রী করা হবে।

দুই মাস পর কাবিন রেজিষ্ট্রী হবে এই শর্তে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। ওই দিন থেকেই তিনি নূরপুর হাউজিং এর বাসায় বসবার শুরু করেন। বিয়ের ১৯ দিন পর মিনহাজ আবারো ইতালী চলে যায়। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর মিনহাজ বাংলাদেশে আসে। পরদিন ৩০ ডিসেম্বর বাসার মধ্যে কাজী এনে বিভিন্ন কাগজে ওই নারীর স্বাক্ষর নেয় এবং বিয়ে রেজিষ্ট্রার করা হয়েছে বলে মিনহাজ জানায়।

বিয়ের আগে মিনহাজের বিরুদ্ধে ইটালিতে একটি জাল- জালিয়াতি ও মানব পাচার মামলা হয় যা নিশাত জানতো না। বিয়ের পর মিনহাজ ইটালি থেকে ইংল্যান্ডে চলে যান বলেন যে ওখানে যেয়ে নতুন ব্যবসা করবে। লন্ডনে ব্যবসার কথা বলায় নিশাতের ঠিকাদারি ব্যবসার সমস্ত টাকা এবং বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে নেয় মিনহাজ। কুমিল্লার বাড়ি ঢাকার ফ্লাট মিনহাজ ও আমি তার স্ত্রী হিসেবে যৌথ স্বাক্ষরে বন্ধক ও ভাড়া প্রদান করে মিনহাজ টাকা নেয়।
এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে নিশাতকে টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দিতো মিনহাজ। এরই মাঝে ইটালী আওয়ামীলীগের একজন নেতার মাধ্যমে জানতে পারে মিনহাজের ৮ বছর ৯ মাসের সাজা হয় এবং ৫ লক্ষ পাঁচশত চুয়ান্ন হাজার ইউরো জরিমানা হয় ইটালীর আদালতে।

এদিকে মিনহাজ নিশাতকে বলে প্রবাসী কল্যান ব্যাংক থেকে ৬-৭ কোটি টাকা লোন নিতে অথবা অন্য কোন ব্যাংকে চেষ্টা করতে। এরই মাঝে মিনহাজের প্রথম স্ত্রী উম্মে সালমা নিশাতের সাথে যোগাযোগ করে মিনহাজ সম্পের্কে সব কিছু অবগত করে। সালমার নামে এবং সালমার ভাইয়ের নামে লোন করে মিনহাজ অনেক টাকা নিয়ে গেছে কিন্তু অদ্যবদি সে লোনের টাকা পরিশোধ করেনি।

এইসব তথ্য জানার পর নিশাত মিনহাজের ফাঁদে পা না দিয়ে এবং ধার নেয়া টাকা ফেরৎ চায়। এতে কাল হয়ে দাড়ায় নিশাতের। বিভিন্নাভাবে হয়রানি শুরু করে নিশাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরই মধ্যে হঠাৎ করে সে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিনহাজ।

এরই মাঝে তাদের কোল জুড়ে আসে একমাত্র পুত্র মিনশাত রহমান স্বাধীন, যার বয়স এখন ৪ বছর ২ মাস। সে সন্তান বর্তমানে মারাত্মক হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত। তার ছেলের চিকিৎসার জন্য বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় হচ্ছে। ডাক্তার বলেছে শিশুটিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে চিকিৎসা করাতে।

সম্প্রতি টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন মিডিয়ার অপ্রপ্রচার চালাচ্ছে সে নাকি তার স্ত্রী না। নিশাত বলেন, স্ত্রী না হলে ৮টি বছর তার সাথে কিভাবে সংসার করলো। পাসপোর্টসহ সকল কাগজে কিভাবে নিশাতের নাম আসলো। ৮ বছর তার বাড়ীতে কিভাবে বসবাস করছে। নিশাত প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবী জানান, তার সন্তানটিকে বাচাতে, তাকে বাচাতে, তার স্ত্রীর মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে। তিনি দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত। মিনহাজ যে কোন সময় তাকে হত্যা করতে পারে। তিনি নিজের ও সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা দাবী করেন।

অভিযোগের বিষয়ে মিনহাজুর রহমান সাংবাদিককে জানান, নিশাত খানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও মানহানীকর। তার কাছে যথাযথ প্রমান ও কাগজপত্র আছে বলে তিনি দাবী করেন। প্রয়োজনে তিনি সকল কাগজপত্র প্রদর্শন করবে বলে জানান।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

You cannot copy content of this page