শান্তনু হাসান খান।।
স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মানে আমাদের তরুণ সমাজের কাছে প্রত্যাশা করতে পারি যে, আপনাদের এই প্রশিক্ষণ শেষে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবেন।
কথাগুলো বলছিলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন ডেভেলাপমেন্ট সেসাইটি (বিসিড্সি) এর পরিচালক শাহ ছাইদুল রহমান। সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগরে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্ধোদন শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণের সময় এই মন্তব্য করছিলেন।
কুমিল্লা কম্পিউটার প্যালেস এর ২য় শাখা উদ্ধোদন করা হয়। এতে বিসিড্সি এর পরিচালক অর্থ ইকবাল হাসান শামীম।
অনুষ্ঠানে শহরের বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যাক্তিও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন। সারাবিশ্বে তথ্য বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির কর্মকান্ডের অনেকটা যখন এগিয়ে, ঠিক সেই মুহুর্তে জেলা শহর কুমিল্লার ছেলে মেয়েরা খুব একট বসে নেই। হাতেকলমে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই এখন স্বাবলম্বি হতে পারছেন।
এটা আশার কথা যে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যেগ্যে অনেকগুলো কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার এই কুমিল্লাতে গড়ে উঠেছে। আশির দশকের শেষ দিকে কুমিল্লায় বেশ কয়েকটি আলোচিত এবং নন্দিত কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার এই শহরের তরুণ তরুণীদের মাঝে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। তেমনি একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের নাম “কম্পিউটার প্যালেস”। নব্বই দশকের গোড়াতে শহরের তরুণ বিশ্বজিৎ কুমার পাল হাতেগনা কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী নিয়ে এর শুভ সূচনা করেন।
লাকসাম রোডে মনোহরপুর চৌরাস্তার মাথায় ছোট ছিমছাম এই সেন্টারটি এখনও তার পুরাতন ঐতিহ্য নিয়ে টিকে আছে। মাত্র ১টি কম্পিউটার আর ২ জন ছাত্রকে নিয়ে সেই ১৯৯৯ এর ১লা সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে পথ চলা শুরু করে। সেই যাত্রা শুরু করে আজ অব্দি ব্যাপক পরিসরে প্রায় চার হাজার ছাত্র/ছাত্রী এই সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন অনেকেই দেশে বিদেশে ভাল আইটি জোনে নিজের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করেছেন।
কম্পিউটার প্যালেস ৯৯ তে যাত্রা শুরু করে ২০০৬ তে এসে বাংলাদেশ কম্পিউটার এডুকেশন ডেভেলাপমেন্ট সোসাইটি (বিসিড্সি) এর সদস্যপদ অর্জন করে সরাকরের স্বীকৃত প্রাপ্ত হয়। বিসিড্সি কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা শহরের পাশাপাশি কম্পিউটার প্যালেস কুমিল্লাতে অন্যতম।
কম খরচে গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদেরকে অতি যত্ন সহকারে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে তরুণ ইন্সষ্ট্রাক্টর গন। এই প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ খুব সহজ ভাবে বললেন, গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদেরকে একটু নমনীয়ভাবে চিন্তা ভবনা করলেও প্রশিক্ষণের ব্যাপারে সবাই কিন্তু সমান। মেধা বিকাশে কাউকে আলাদা ভাবে মূল্যায়ন করা যায় না। তিনি আরও বলেন, মফস্বল শহরের ছেলে মেয়েরা দূর দূরান্ত থেকে এখানে আসে ভাল কিছু শেখার জন্য। আমরা চেষ্টা করি তাদেরকে ভাল কিছু শেখানোর জন্য। এই ইন্সষ্টিটিউট থেকে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে গেছে তারা সবাই নিজ নিজ গন্ডিতে সাফল্যের শীর্ষে। যখন আমরা এটা জানি বা শুনি তখন আমরা খুবই গর্ববোধ করি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, বিসিড্সি এর আওতায় সারা দেশে প্রায় পোনে তিনশত ইন্সষ্টিটিউট রয়েছে, প্রতি বছরের বিসিড্সি কর্তৃক দেশ সেরা ইন্সষ্টিটিউট মূল্যায়ন কম্পিউটার প্যালেস টপ টেন এ স্থান পায়। বাংলাদেশ সরকারের ভিশন ২০২১ রূপকল্পে দেশের ৫৯০টিরও বেশী ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু আছে। ঐ সমস্ত কেন্দ্রে দুই জন করে কম্পিউটার অপারেটর (১ জন ছেলে ০ ১ জন মেয়ে) এখন সেবা প্রদানের জন্য প্রাথমিক ভাবে কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে- মেয়েরা শহরে এই সেন্টারে এসে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। ফিরে গিয়ে তারা তথ্য সেবা কেন্দ্রে কেউ সুযোগ পাচ্ছে বা কেউ না পেলেও ১টি কম্পিউটার নিয়ে তারা সাবলম্বী হতে চেষ্টা করছে। প্রশিক্ষনের যেমন কোন বিকল্প নেই তেমনি মেধা বিকাশের জন্য যে কোন ইন্সষ্টিটিউট থেকে ভাল কিছু শিখে নিজেদের পায়ে দাড়ানোর নামই প্রত্যয়।