০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বুড়িচংয়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ কুমিল্লায় কবিরাজের কাছে ‘জিন ছাড়াতে’ গিয়ে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ মুরাদনগরে বিশেষ চাহিদা সম্পূর্ণ শিশু বিদ্যালয়ের এক বছর পূর্তি উদযাপন চৌদ্দগ্রামে উজিরপুর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড মহিলা দলের মতবিনিময় সভা সরকারের জনবান্ধব উদ্যোগ মানুষকে জানাতে হবে -জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায়, কিশোর গ্যাং এর ২৪ সদস্য গ্রেফতার ঢাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে কুমিল্লার শিক্ষার্থী জুবায়েদ নিহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের রোবটিক্স ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় অভিনব কায়দায় মিশুকের সিটের নিচে মাদক পাচার, র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ১ কুমিল্লায় বিজিবির অভিযানে এক কোটি টাকার বেশি ভারতীয় পণ্য জব্দ

হোমনায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় যুবলীগ কর্মী খুন

  • তারিখ : ০৬:০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • 32

সোনিয়া আফরিন

কুমিল্লার হোমনায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ফেব্রুয়ারী) উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবলীগ কর্মী মো. সালাউদ্দিন (জহির) ঘনিয়ারচর গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে ও ৩নং ওয়ার্ড (ঘনিয়ারচর) আওয়ামীলীগ সভাপতি শহিদুল্লাহর ভাতিজা।

অভিযোগে জানা যায়, তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার সমর্থক ছিলো সালাউদ্দিন জহির। নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন জালাল পাঠান ও তার ভাতিজা মুকবল পাঠান। নির্বাচনের পর থেকেই নানাহভাবে হত্যার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলো সন্ত্রাসীরা। এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে জহির নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জালাল পাঠান, মুকবল পাঠান ও রাসেল পাঠানের নেতৃত্বে তেবাগিয়া-কলাগাছিয়া নদীর মাঝে স্টিল ব্রীজের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে এবং ঘাড়ের ও পায়ের রগ কেটে হত্যাকান্ড ঘটায়।

এসময় তাকে উদ্ধারেও বাধা দিয়ে হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। পরে রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযোগে আরো জানা যায়, জালাল পাঠানের পিতা পাচু পাঠান ছিলো একাত্তরে তালিকাভুক্ত রাজাকার, মুকবল পাঠান নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য ও সাজাভোগ করা আসামী।

নিহতের বড় বোন পারুল আক্তার জানায়, “নৌকায় ভোট দেয়ায় কাল হলো আমার ভাইয়ের। আমার ভাই জহিরকে পাচু রাজাকারের সন্তান জালাল পাঠান, মুকবল পাঠান, রাসেল পাঠান, বাছির পাঠানসহ ২৫-৩০জন সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্নসহ পায়ের ও ঘাড়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আমি এর বিচার চাই।”

নিহতের চাচা আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ জানান, তার ভাতিজা জহির নৌকার প্রার্থী মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সমর্থক ছিলো। এরই জের ধরে গতকাল (বৃহস্পতিবার) তেবাগিয়া-কলিগাছিয়া নদীর মাঝে স্টিল ব্রীজের উপর জহিরকে একা পেয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে রাসেল, বাছির, ইয়াসিন, বাবুল, ইকবাল, সেলিম, শামিম, শেখ ফরিদ, সাব্বিরসহ সন্ত্রাসীরা এলোপাতারী কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

তিনি অভিযোগ করেন, কুপিয়ে আহত করার পরও জহিরকে উদ্ধার করতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা।

পরে রাতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঢাকা নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সন্তানকে হারিয়ে পিতা মো. রেনু পাগলের মত গ্রামে ঘুরে ঘুরে হাতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে জহিরকে হত্যা করার ঘোষণা দিয়ে বেড়াচ্ছে আর বিচার দাবি করছে।

এ বিষয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২০১০ সালে একই কায়দায় যুবলীগ নেতা মোসলেমকে কুপিয়ে হত্যা করে জালাল পাঠান ও তার ক্যাডার বাহিনী।

এ বিষয়ে হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কায়েস আকন্দ জানান, জালাল পাঠানের লোকজন জহির নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তবে এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি।

অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগের কথা স্বিকার করলেও কেউ লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনী বলেও ওসি জানান।

error: Content is protected !!

হোমনায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় যুবলীগ কর্মী খুন

তারিখ : ০৬:০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

সোনিয়া আফরিন

কুমিল্লার হোমনায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার রাতে (১৭ফেব্রুয়ারী) উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবলীগ কর্মী মো. সালাউদ্দিন (জহির) ঘনিয়ারচর গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে ও ৩নং ওয়ার্ড (ঘনিয়ারচর) আওয়ামীলীগ সভাপতি শহিদুল্লাহর ভাতিজা।

অভিযোগে জানা যায়, তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার সমর্থক ছিলো সালাউদ্দিন জহির। নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন জালাল পাঠান ও তার ভাতিজা মুকবল পাঠান। নির্বাচনের পর থেকেই নানাহভাবে হত্যার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলো সন্ত্রাসীরা। এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে জহির নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জালাল পাঠান, মুকবল পাঠান ও রাসেল পাঠানের নেতৃত্বে তেবাগিয়া-কলাগাছিয়া নদীর মাঝে স্টিল ব্রীজের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে এবং ঘাড়ের ও পায়ের রগ কেটে হত্যাকান্ড ঘটায়।

এসময় তাকে উদ্ধারেও বাধা দিয়ে হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। পরে রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযোগে আরো জানা যায়, জালাল পাঠানের পিতা পাচু পাঠান ছিলো একাত্তরে তালিকাভুক্ত রাজাকার, মুকবল পাঠান নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য ও সাজাভোগ করা আসামী।

নিহতের বড় বোন পারুল আক্তার জানায়, “নৌকায় ভোট দেয়ায় কাল হলো আমার ভাইয়ের। আমার ভাই জহিরকে পাচু রাজাকারের সন্তান জালাল পাঠান, মুকবল পাঠান, রাসেল পাঠান, বাছির পাঠানসহ ২৫-৩০জন সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্নসহ পায়ের ও ঘাড়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আমি এর বিচার চাই।”

নিহতের চাচা আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ জানান, তার ভাতিজা জহির নৌকার প্রার্থী মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সমর্থক ছিলো। এরই জের ধরে গতকাল (বৃহস্পতিবার) তেবাগিয়া-কলিগাছিয়া নদীর মাঝে স্টিল ব্রীজের উপর জহিরকে একা পেয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে রাসেল, বাছির, ইয়াসিন, বাবুল, ইকবাল, সেলিম, শামিম, শেখ ফরিদ, সাব্বিরসহ সন্ত্রাসীরা এলোপাতারী কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

তিনি অভিযোগ করেন, কুপিয়ে আহত করার পরও জহিরকে উদ্ধার করতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা।

পরে রাতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঢাকা নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সন্তানকে হারিয়ে পিতা মো. রেনু পাগলের মত গ্রামে ঘুরে ঘুরে হাতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের নেতৃত্বে জহিরকে হত্যা করার ঘোষণা দিয়ে বেড়াচ্ছে আর বিচার দাবি করছে।

এ বিষয়ে জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২০১০ সালে একই কায়দায় যুবলীগ নেতা মোসলেমকে কুপিয়ে হত্যা করে জালাল পাঠান ও তার ক্যাডার বাহিনী।

এ বিষয়ে হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কায়েস আকন্দ জানান, জালাল পাঠানের লোকজন জহির নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তবে এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি।

অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জালাল পাঠান ও মুকবল পাঠানের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগের কথা স্বিকার করলেও কেউ লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনী বলেও ওসি জানান।