স্টাফ রিপোর্টার।
দায়িত্ব পালনকালে নিহত বন্যপ্রানী অভয়ারণ্য কমিউনিটি পাহারাদলের সদস্যদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলো আরণ্যক ফাউন্ডেশন। এ লক্ষ্যে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে অনলাইন ও সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, বন বিভাগের সাথে যৌথভাবে বন পাহাড়া দিতে গিয়ে ২০০৮ সালের ২৩ মার্চ টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য কমিউনিটি পাহারাদল এর সদস্য রফিকুল ইসলাম অবৈধ কাঠ চোরদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়। এছাড়াও, সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির আরও পাঁচজন সদস্য বিভিন্ন সময়ে বন সংরক্ষণ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। বন বিভাগের রফিকুল আলমের মৃত্যুর দিনকে সহ-ব্যবস্থাপনা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়া সভায় বাংলাদেশ বনবিভাগের উপ-প্রধান বন সংরক্ষক (বন ব্যবস্থাপনা ইউনিট) মোঃ জাহিদুল কবির প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র উপদেষ্টা বন ব্যবস্থাপনা, আরণ্যক ফাউন্ডেশন। সভাটি সঞ্চালনা করেন রকিবুল হাসান মুকুল, নির্বাহী পরিচালক, আরণ্যক ফাউন্ডেশন।
সভায় প্রতিবেশ প্রকল্পের পক্ষ থেকে আজাহার মজুমদার ও ড. মদিনুল আহসান, সুফল প্রকল্পের কনসালট্যান্ট রুহুল মোহাইমান ও কম্পাস প্রকল্পের শামস উদ্দিন আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অনলাইনে মৎস্য অধিদপ্তরে ঢাকা জেলার জেলা কর্মকর্তা ও প্রতিবেশ প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট, ICCAD, কোডেক, নেকম, সিএনআরএসের প্রকল্প পরিচালক/উপ প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং লাউড়াছড়া, সাতছড়ি, কয়রা, হিমছড়ি, ইনানী, ফাসিয়াখালী সিএমসির সভাপতি, ট্রেজারার সহ ২৭ জন প্রতিনিধি অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে ২০০৮ সালে ২৩শে মার্চ টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য কমিউনিটি পাহারাদলের সদস্য রফিকুল ইসলামসহ মোট ছয় জন সিপিজি প্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন অবস্থায় অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানানো হয়।
সভায় রুহুল মোহাইমান, ২০০৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশের সহ-ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির বিভিন্ন কর্মকান্ড, শিখন ও বিধি উপ-বিধি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সাতছড়ি রক্ষিত বনের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শামসুন্নাহার চৌধুরী, আবু মোর্শেদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি-হিমছড়ি, ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সভাপতি মেদাকচ্ছপিয়া, শহিদুল্লাহ কায়ছার, সভাপতি ইনানী শেখ জামাল জাতীয় উদ্যানের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ সকল প্রতিনিধিরা সহ-ব্যবস্থাপনার বর্তমান কার্যক্রম এবং উন্নয়নের জন্য সুপরিশ প্রদান করেন।
সবার মতামতে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে সহ-ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৭ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সকল সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ। এছাড়া, বন বিভাগসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয় বাড়ানো এবং সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়।
মূলত: বন পাহাড়া দলের সদস্যদের পাহাড়া দেয়ার জন্য সম্মানজনক ভাতা প্রদানের জন্য সভায় সুপরিশ করা হয়। সভায় উপস্থিত উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মহোদয় সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্রিয় সদস্যদের বন সংরক্ষণের অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, প্রতিবেশ প্রকল্পের মাধ্যমে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির আঞ্চলিক ও জাতীয় নেট ওয়ার্ক উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি আগামী মে মাসে প্রতিবেশ প্রকল্পের মাধ্যমে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটসমূহের একটি জাতীয় কর্মশালার আয়োজনের সুপারিশ প্রদান করেন।
সভার শেষে সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া অন্য এলাকাতেও কমিউনিটিকে সংগঠিত করে কিভাবে বন রক্ষা জোরদার করা যায়, সে ব্যাপারে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page