কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন; আওয়ামী লীগে ঐক্যের চেষ্টা, দ্বন্দ্বে স্বতন্ত্ররা

নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে আছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরাও। দুপক্ষই নতুন করে আঁকছেন তাঁদের নির্বাচনী ছক। আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত অন্যরা নৌকার পক্ষে কাজ করার কথা জানালেও বিএনপি-সমর্থিত স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব।

জানা যায়, ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রবীণ নেতা আফজল খানকে পরাজিত করে মেয়র হন বিএনপি-সমর্থিত মনিরুল হক সাক্কু। ২০১৭ সালে আফজল খানের মেয়ে আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার মেয়র হন সাক্কু। তখন অভিযোগ ছিল গ্রুপিংয়ের কারণে গেল দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা হেরেছেন।

এবার সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ সদর আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তাঁর অনুসারী আরফানুল হক রিফাতকে নিয়ে মনোনয়ন যুদ্ধে নামেন। নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাঁকে একক প্রার্থী করা হয়। পরে কেন্দ্র থেকে নৌকার মাঝি করা হয় আরফানুলকে।

এদিকে, কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া ১৩ জনের অধিকাংশ নেতাই সংবাদমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ সময় কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে জানান তাঁরা।

অপরদিকে বিএনপির দুগ্রুপের দুই প্রার্থী নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের অনুসারী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘বিএনপি নামধারী কিছু আওয়ামী লীগ নেতার নির্যাতনে দলের নেতা–কর্মীরা অতিষ্ঠ। তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের চাপে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। নগরীর তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে আমাকে পরাজিত করতে মেয়র সাক্কু আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী হয়েছেন। দলের সকল স্তরের নেতা কর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন।’

জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমি একবার পৌর চেয়ারম্যান ও দুইবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলাম। সব সময় জনগণের সেবা করার চেষ্টা করেছি। দলের নেতা-কর্মী ও নগরবাসী আমার সঙ্গে আছেন। আরও কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে, সেগুলো সমাপ্ত করতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। আমি সিটি মেয়র পদটি নেত্রীকে উপহার দেব। মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো সুসংগঠিত। সব নেতা-কর্মীকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করব।’

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘এবার তৃণমূল আওয়ামী লীগের মনোনীত একজন যোগ্য, ত্যাগী ও পরীক্ষিত সাংগঠনিক কর্মীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কুসিক নির্বাচনে মেয়রের বিজয় ছিনিয়ে আনব।’

উল্লেখ্য, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৭ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে এবং ভোটগ্রহণ ১৫ জুন। মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন, নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন দুজন।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page