মুরাদনগর প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাসুদুর রহমান নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে ১৭ পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূক্তভোগি ওই পরিবার গুলোর ভাষ্য, মিথ্যা মামলা, জাল দলিল, অপহরণসহ নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদেরকে আতংকে রেখেছেন মাসুদ।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ভূক্তভোগিরা প্রেসক্লাবে এসে সংবাদকর্মীদের কাছে প্রতারক মাসুদুর রহমান কর্তৃক বিভিন্ন ভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরেন। এতে বেরিয়ে আসছে তার নানান অপকর্মের ফিরিস্তি। ভূক্তভোগিদের আকুতি তারা রেহাই চান প্রতারক মাসুদের হয়রানি থেকে। অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান (৪৩) উপজেলার ৯নং কামাল্লা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল করিম ওরফে কনু মিয়ার ছেলে।
নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত দুধ মিয়া ব্যাপারীর ছেলে ভূক্তভোগি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মাসুদ জাল জালিয়াতিতে এক নাম্বার। সে কামারচর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৪৩২৭ দাগের ৫ শতক জায়গাকে ১৫ শতক বানিয়ে এবং ৪৩২৬ দাগের ১৮ শতকের মধ্যে ৯ শতক সম্পত্তির মালিক কাদির ও বাকী ৯ শতকের মালিক জুয়েলসহ ৪ জন। এই ১৮ শতক সম্পত্তি ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে তার স্ত্রী সারমিন আক্তার সুমিকে লিখে দেন (যার দলিল নং ১৫৪২, তারিখ ২২/২/২০১৬)। সে আরো একটি ভূয়া দলিল সৃজন করে ৪৩৪৩ দাগ থেকে ৩৩ শতক সম্পত্তি দাবি করে (দলিল নং ৯২৪, তারিখ : ১০/০২/৬৬)। অথচ ওই দলিলের বলিয়ম যাচাই করে দেখা যায় মুল মালিক আছানপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিনসহ ৪ জন। উল্টো মাসুদ তার স্ত্রী সারমিন আক্তার সুমিকে বাদী বানিয়ে আমাকেসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে এল.এস.টি (যার নং ৯৮৭/১৯) মামলা দিয়ে অহেতুক হয়রানি করছে।’
অপর দিকে মাসুদুর রহমান চিকিৎসার নামে নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত বাতেন সরকারের ছেলে আলা উদ্দিনকে (৪৫) অপহরণ করে নেয়। পরে ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে ছাড়া পায়। অপহণের শিকার আলা উদ্দিন বলেন, সরলতার সুযোগ নিয়ে ঢাকা শহরে ভাল ডাক্তার দেখানোর নাম করে চন্দনাইল নিয়ে আমাকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা চায়। পরে স্থানীয় মাতাব্বর হানিফ মিয়ার মধ্যস্থতায় ২ লাখ টাকা পরিশোধ করে আমাকে ছাড়িয়ে আনে।
নোয়াগাঁও গ্রামের মাতাব্বর হানিফ মিয়া বলেন, ‘এলাকার লোক এখন তাকে মাসুদ নামে চিনেনা, চিনে জালিয়াতির হেড মাস্টার হিসাবে। হেন কোন কাজ নেই মাসুদ করে না। জালিয়াতি, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, অবৈধ ড্রেজার ও জাল টাকার ব্যবসা এ সকল কর্মকান্ডের সাথে মাসুদ জড়িত। তার বেশ-পোষাক আর কাজে কোন মিল নাই। একাধিক মামলার আসামী হয়ে কি ভাবে এই অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে আমার মাথায় ধরে না।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কথা শেষ না করেই ওইপ্রান্ত থেকে লাইন কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page