০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চৌদ্দগ্রামকে শান্তির জনপদ হিসেবে গড়তে ধানের শীষে ভোট দিন : কামরুল হুদা কুবির দত্ত হলের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন বাংলা ব্লকেড কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সব অফিস তামাকমুক্ত করা হবে- প্রশাসক শাহ আলম বুড়িচংয়ে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ডাঃ তাহেরের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জরিমানা ও মাদকসেবির কারাদণ্ড কুমিল্লায় ওয়াই-ব্রিজে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রবাস ফেরত যুবকের মৃত্যু বুড়িচংয়ে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত দেবিদ্বারে হাসপাতাল ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে মালিক সমিতির মানববন্ধন বুড়িচংয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা

কুমিল্লায় টনসিল অপারেশনে গিয়ে কিশোরীর মৃত্যু; হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালালেন ডাক্তার

  • তারিখ : ১১:০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪
  • 75

জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লায় ভূল চিকিৎসায় ৭ম শ্রেনীর পড়ুয়া মিম নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় নগরীর হেলথ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।

পরিবারের দাবি অপারেশন থিয়েটারে অতিরিক্ত অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার কারণে হার্ট ব্লক হয়ে মারা গেছে মীম।

নিহত মীম আকতার (১৫) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া কৃষ্ণপুর এলাকার মো: বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। মীম কংসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে গলায় টনসিলের ব্যাথা নিয়ে মীম তার মায়ের সাথে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর চিকিৎসক জহিরুল হকের পরামর্শে গলার কিছু পরিক্ষা করে রিপোর্ট জহিরুলকে দেখালে তিনি অপারেশনের কথা বলেন।

সেই অনুযায়ী রবিবার (২৩ই জুন) বিকেলে মীম তার মা লিপি আক্তারের সাথে টনসিল অপারেশনের জন্য কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর অপারেশনের খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ওই চিকিৎসক।

সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় চিকিৎসক জহিরুল অপারেশনের জন্য মীমকে একই এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অপর পাশে অবস্থিত হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পরপরই মীমের শারিরীক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়। ১০ মিনিট পর চিকিৎসক জহিরুল বের হয়ে স্বজনদের বলে মীম হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় মীম।

মীমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

মীমের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর জহির ডাক্তার আমারে অপারেশনের টাকা ফেরত দিতে চায়। আমাকে বলছে আমরা যত টাকা চাই ওনি আমাদের টাকা দিবো। টাকা দিয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে। আমরা রাজি না হওয়ায় জহির ডাক্তার আমার মেয়ের পরিক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে হাসপাতাল তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা থানায় অভিযোগ করবো। সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ করবো।

ঘটনার কিছু সময় পরই ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার এবং হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক জহিরুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা পর ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। নিহত মীমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় টনসিল অপারেশনে গিয়ে কিশোরীর মৃত্যু; হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালালেন ডাক্তার

তারিখ : ১১:০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লায় ভূল চিকিৎসায় ৭ম শ্রেনীর পড়ুয়া মিম নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১ টায় নগরীর হেলথ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।

পরিবারের দাবি অপারেশন থিয়েটারে অতিরিক্ত অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার কারণে হার্ট ব্লক হয়ে মারা গেছে মীম।

নিহত মীম আকতার (১৫) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া কৃষ্ণপুর এলাকার মো: বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। মীম কংসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে গলায় টনসিলের ব্যাথা নিয়ে মীম তার মায়ের সাথে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর চিকিৎসক জহিরুল হকের পরামর্শে গলার কিছু পরিক্ষা করে রিপোর্ট জহিরুলকে দেখালে তিনি অপারেশনের কথা বলেন।

সেই অনুযায়ী রবিবার (২৩ই জুন) বিকেলে মীম তার মা লিপি আক্তারের সাথে টনসিল অপারেশনের জন্য কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসক মো: জহিরুল হকের আসে। তারপর অপারেশনের খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ওই চিকিৎসক।

সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় চিকিৎসক জহিরুল অপারেশনের জন্য মীমকে একই এলাকার ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অপর পাশে অবস্থিত হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার পরপরই মীমের শারিরীক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়। ১০ মিনিট পর চিকিৎসক জহিরুল বের হয়ে স্বজনদের বলে মীম হার্ট অ্যাটাক করেছে। তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় মীম।

মীমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সরকারের কাছে, প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

মীমের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর জহির ডাক্তার আমারে অপারেশনের টাকা ফেরত দিতে চায়। আমাকে বলছে আমরা যত টাকা চাই ওনি আমাদের টাকা দিবো। টাকা দিয়ে আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে। আমরা রাজি না হওয়ায় জহির ডাক্তার আমার মেয়ের পরিক্ষার রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজ নিয়ে হাসপাতাল তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা থানায় অভিযোগ করবো। সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগ করবো।

ঘটনার কিছু সময় পরই ফেইথ মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টার এবং হেলথ্ এন্ড ডক্টরস জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তারা হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক জহিরুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা পর ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। নিহত মীমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।