স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে বাবার জীবন বাঁচাতে নিজ মেয়ে তার লিভারের ৬০% উৎসর্গ করেছেন। বাবা-মেয়ের এ ঘটনাটি ঘটে দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের দুয়ারীয়া গ্রামে। মাওলানা মো. নুরুল ইসলাম (৫৪) ওই গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও দুয়ারীয়া এজি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক। তার মেজ মেয়ে উম্মে আয়মন (২২)।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাওলানা মো. নুরুল ইসলাম ২০১২ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রথমে এইচবিএস ধরা পড়ে, পরে লিভার সিরোসিস এবং সম্পূর্ণ লিভার ড্যামেজ হয়ে গেলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান। বাবাকে বাঁচাতে উম্মে আয়মন পিতার পাশে এসে দাঁড়ান।
উম্মে আয়মন ঢাকার ডেমরার সারুলিয়ায় একটি ফিজিও থেরাপি সেন্টারে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার টিকিৎসায় ঘটি-বাটি, গয়নাঘাটি, জমি বিক্রি ও দায়-দেনায় সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। আমার চিকিৎসায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে।’
গত বছরের ২৯ জুলাই ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত ‘ইন্সটিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলানি সাইন্স হাসপাতালে ডা. বিলিয়েন্দ্র পামেজা’র তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন। গত ১১ নভেম্বর কন্যা উম্মে আয়মনের লিভারের ৬০ শতাংশ কেটে নিয়ে বাবার বুকে প্রতিস্থাপনে সফল অস্ত্রোপচার করেন এবং গত ১৩ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন।
উম্মে আয়মন বলেন, ‘সন্তান হিসেবে পিতার জীবন বাঁচাতে আমার লিভারের অংশ দিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এ ক্ষেত্রে আমার স্বামীর অনুপ্রেরণা সাহস যুগিয়েছে। আমি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।’
আয়মনের স্বামী মো. মাকসুদুর রহমান ইমন বলেন, ‘আমার শ্বশুর আমার পিতার আসনের, পিতার জীবন বাঁচাতে আমর স্ত্রীর ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়ে নিজেও গর্ববোধ করছি।’
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page