
মনির হোসাইন।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এসব যানবাহনের নেই কোনো বৈধ লাইসেন্স, ফিটনেস কিংবা রোড পারমিট। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, উপজেলার শত শত অটোরিকশার চালকের অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু-কিশোর। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, তৈরি হচ্ছে যাত্রী ভোগান্তি ও জনদুর্ভোগ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এসব অদক্ষ চালকেরা প্রতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় যাত্রীদের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। তাদের অনেকেই জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০ টাকার ভাড়ার জায়গায় যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। আবার অনেকে ভাড়া দিতে আপত্তি জানালে যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।
এলোমেলো গাড়ি থামিয়ে রাখা, সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং যত্রতত্র অটোরিকশা পার্কিং করার কারণে যানজটও নিত্যদিনের দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় চালকেরা বাজার, মোড় কিংবা ব্যস্ত সড়কের মাঝেই রিকশা দাঁড় করিয়ে রাখে, এতে পথচারী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
যাত্রীদের অভিজ্ঞতা মতে, শিশু-কিশোর চালকেরা রাস্তায় ওঠার পর ডান-বাম কিংবা সড়কচিহ্ন কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না। দ্রুতগতিতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীদের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের কোথাও থেকে এসব অটোরিকশার লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। তারপরও প্রতিদিন অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভাড়া নির্ধারণের কোনো তালিকা না থাকায় তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় ও বেপরোয়া চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রশাসনের কঠোর নজরদারির অভাব কিংবা মাসিক মাসোহারার কারণে এসব অবৈধ রিকশা অবাধে চলছে। এতে যেমন অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি দুর্ঘটনা ও জনভোগান্তিও দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি সরকারও হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, ইউনিয়ন পরিষদ বিধি মোতাবেক লাইসেন্স প্রদান, নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা প্রকাশ এবং নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এসব শিশু-কিশোর চালক ও লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। নইলে মুরাদনগরের সড়কগুলোতে দুর্ঘটনা আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।।