১২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চৌদ্দগ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মাটি বিক্রেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, ভেকু জব্দ কুমিল্লা স্টেডিয়াম এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার আ’লীগের হামলায় আহত মহিলাদল নেত্রীকে দেখতে কুমিল্লায় সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ খেলাধুলা যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখে -সফিকুর রহমান বুড়িচংয়ে আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের গ্রেপ্তার বুড়িচংয়ে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান, দুইটি ইটভাটা উচ্ছেদ জয়পুর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির ৬১ তম বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী শামীম গ্রেপ্তার জাতীয় পর্যায়ের তুলনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন- ড. ইমরান আনসারী কোনো ষড়যন্ত্রই কুমিল্লা-৬ আসনের মানুষের সঙ্গে আমার বন্ধন ভাঙতে পারবে না-হাজী ইয়াছিন

কুমিল্লায় শ্বশুর বাড়ির ট্যাংকে জামাতার লাশ; স্ত্রীসহ চারজনের স্বীকারোক্তি, রহস্য উদঘাটন

  • তারিখ : ০৬:০২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 3020

স্টাফ রিপোর্টার।।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে গত ১৩ আগস্ট নিখোঁজ হওয়া করিম ভূঁইয়ার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন চারজন আসামি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার আমলি আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি গ্রহণ করেন। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের এক মাস পাঁচ দিন পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় করিম ভূঁইয়ার (৪৮) গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। করিম বড়শালঘর গ্রামের মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি ১৩ আগস্ট সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় করিমের স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তার তিন ভাই ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে জবানবন্দি দেন।

পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, ১৩ আগস্ট রাতে স্ত্রী তাছলিমা বেগমের পরিকল্পনায় মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে করিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেয় তার শ্যালক ইসরাফিল। সেখানে প্রথমে তিন ভাই মিলে লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন, যার ফলে করিম প্রচুর রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় স্ত্রী তাছলিমা রক্ত মুছে ফেলেন।

পরবর্তীতে বড় ভাইয়ের বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলার পরিকল্পনা করা হয়। প্রথমে বড় ভাই রাজি না হওয়ায় মরদেহটি বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। সকালে মরদেহ ভেসে উঠলে স্ত্রী ও তার ভাইরা আবার খাল থেকে মরদেহ তুলে বড় ভাইয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন।

দেবীদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, “স্ত্রী তাছলিমার পরিকল্পনায় তিন ভাইসহ চারজন মিলে করিম ভূঁইয়াকে হত্যা করেছে। মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে ভালো ব্যবহার করে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের ভাই আমির হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সন্দেহভাজন আসামিদের ওপর নজরদারি ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।”

ওসি আরও বলেন, “আসামিরা জানিয়েছে, করিম প্রায়ই স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তাদের মেয়ে কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এ নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”

error: Content is protected !!

কুমিল্লায় শ্বশুর বাড়ির ট্যাংকে জামাতার লাশ; স্ত্রীসহ চারজনের স্বীকারোক্তি, রহস্য উদঘাটন

তারিখ : ০৬:০২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার।।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে গত ১৩ আগস্ট নিখোঁজ হওয়া করিম ভূঁইয়ার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন চারজন আসামি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার আমলি আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি গ্রহণ করেন। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের এক মাস পাঁচ দিন পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় করিম ভূঁইয়ার (৪৮) গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। করিম বড়শালঘর গ্রামের মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি ১৩ আগস্ট সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় করিমের স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তার তিন ভাই ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে জবানবন্দি দেন।

পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, ১৩ আগস্ট রাতে স্ত্রী তাছলিমা বেগমের পরিকল্পনায় মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে করিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেয় তার শ্যালক ইসরাফিল। সেখানে প্রথমে তিন ভাই মিলে লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন, যার ফলে করিম প্রচুর রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় স্ত্রী তাছলিমা রক্ত মুছে ফেলেন।

পরবর্তীতে বড় ভাইয়ের বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলার পরিকল্পনা করা হয়। প্রথমে বড় ভাই রাজি না হওয়ায় মরদেহটি বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। সকালে মরদেহ ভেসে উঠলে স্ত্রী ও তার ভাইরা আবার খাল থেকে মরদেহ তুলে বড় ভাইয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন।

দেবীদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, “স্ত্রী তাছলিমার পরিকল্পনায় তিন ভাইসহ চারজন মিলে করিম ভূঁইয়াকে হত্যা করেছে। মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে ভালো ব্যবহার করে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের ভাই আমির হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সন্দেহভাজন আসামিদের ওপর নজরদারি ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।”

ওসি আরও বলেন, “আসামিরা জানিয়েছে, করিম প্রায়ই স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তাদের মেয়ে কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এ নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”