০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
একসাথে চার কবর: ইউটার্নে নিভে গেলো কুমিল্লার এক আলোকিত পরিবার বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন দুই ছেলে, পথে ৪ জনই নিহত কুমিল্লার লালমাইয়ে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ বছরের প্রবাসের অর্জন লুট কুমিল্লায় অচেতন করে তরুণীকে ধর্ষণ, সমন্বয়কের বিরুদ্ধে মামলা বাসে শ্লীলতাহানি-ছিনতাইয়ের শিকার কুবি শিক্ষার্থী, দুই অভিযুক্তের কারাদণ্ড কুমিল্লায় সিমেন্টবাহী লরির নিচে প্রাইভেটকার, একই পরিবারের ৪ জন নিহত হোমনায় নার্সের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, তদন্তের দাবি কুমিল্লার তরুণ প্রজন্মের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন বুড়িচংয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কীটনাশক দোকানে জরিমানা কুমিল্লায় ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত, আহত ৪

একসাথে চার কবর: ইউটার্নে নিভে গেলো কুমিল্লার এক আলোকিত পরিবার

  • তারিখ : ১১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • 892

জহিরুল হক বাবু।।
সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্তি কবে—এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের ইউটার্নে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর। একসাথে খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। প্রাণ গেলো এক পরিবারের বাবা, মা এবং দুই সন্তানের।

চাঁদপুর জেলার সীমানা সংলগ্ন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলোকিত পরিবারটি মুহূর্তেই নিঃস্ব হয়ে গেল। নিহতরা হলেন— আলহাজ্ব ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম স্বপন (৫০) এবং ছোট ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম মামুন (৪৫)।

গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হোটেল নূরজাহান এলাকার ইউটার্নে কাভার্ডভ্যান উল্টে প্রাইভেট কারের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক আগে ওমর আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসায় যান। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন দুই ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় চারজনের জীবন।

নিহত আবুল হাসেম স্বপন রাজধানীর কল্যাণপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রূপনগর শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন স্বপন। তার বড় মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে, একমাত্র ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

অপর নিহত আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকায় ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এমএনজি নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুই ছেলের জনক ছিলেন মামুন। বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

এছাড়া নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের দোলাইখাল শাখায় কর্মরত। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় চাকরি করেন।

শুক্রবার রাতেই জানাজা শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাশাপাশি সমাহিত করার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্রাম এখন শোকে স্তব্ধ, আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

গ্রামের মানুষের একটাই প্রশ্ন—আর কত প্রাণ ঝরলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো?

একসাথে চার কবর: ইউটার্নে নিভে গেলো কুমিল্লার এক আলোকিত পরিবার

তারিখ : ১১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

জহিরুল হক বাবু।।
সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্তি কবে—এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের ইউটার্নে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর। একসাথে খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। প্রাণ গেলো এক পরিবারের বাবা, মা এবং দুই সন্তানের।

চাঁদপুর জেলার সীমানা সংলগ্ন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলোকিত পরিবারটি মুহূর্তেই নিঃস্ব হয়ে গেল। নিহতরা হলেন— আলহাজ্ব ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম স্বপন (৫০) এবং ছোট ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম মামুন (৪৫)।

গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হোটেল নূরজাহান এলাকার ইউটার্নে কাভার্ডভ্যান উল্টে প্রাইভেট কারের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক আগে ওমর আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসায় যান। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন দুই ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় চারজনের জীবন।

নিহত আবুল হাসেম স্বপন রাজধানীর কল্যাণপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রূপনগর শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন স্বপন। তার বড় মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে, একমাত্র ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

অপর নিহত আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকায় ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এমএনজি নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুই ছেলের জনক ছিলেন মামুন। বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

এছাড়া নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের দোলাইখাল শাখায় কর্মরত। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় চাকরি করেন।

শুক্রবার রাতেই জানাজা শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাশাপাশি সমাহিত করার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্রাম এখন শোকে স্তব্ধ, আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

গ্রামের মানুষের একটাই প্রশ্ন—আর কত প্রাণ ঝরলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো?