০৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হোমনায় চার দিন ধরে নিখোঁজ সাংবাদিক দিদার, পরিবারের সন্দেহ অপহরণ বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন কুমিল্লায় ৩ হাজার টাকায় স্ত্রীকে বিক্রি; তিনদিন ধরে ধর্ষণ, নোয়াখালীর ৫ যুবক গ্রেফতার বাজগড্ডায় জিকরুল্লাহ ইসলামিয়া যুব কমিটির উদ্যোগে ঈদে মাজিউন্নাবী (সা.) মাহফিল শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিনকে কুমিল্লায় ফুলেল সংবর্ধনা চৌদ্দগ্রামে তুলাপুষ্কুরণী সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা আলী হোসেন সজিব বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত ভোটাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই ৩১ দফার মূল লক্ষ্য -হাজী ইয়াছিন বুড়িচংয়ে কলেজ ছাত্র অপহরণের পর নির্মম নির্যাতন, পাঁচ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে সোহাগ বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত

একসাথে চার কবর: ইউটার্নে নিভে গেলো কুমিল্লার এক আলোকিত পরিবার

  • তারিখ : ১১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • 2584

জহিরুল হক বাবু।।
সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্তি কবে—এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের ইউটার্নে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর। একসাথে খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। প্রাণ গেলো এক পরিবারের বাবা, মা এবং দুই সন্তানের।

চাঁদপুর জেলার সীমানা সংলগ্ন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলোকিত পরিবারটি মুহূর্তেই নিঃস্ব হয়ে গেল। নিহতরা হলেন— আলহাজ্ব ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম স্বপন (৫০) এবং ছোট ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম মামুন (৪৫)।

গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হোটেল নূরজাহান এলাকার ইউটার্নে কাভার্ডভ্যান উল্টে প্রাইভেট কারের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক আগে ওমর আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসায় যান। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন দুই ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় চারজনের জীবন।

নিহত আবুল হাসেম স্বপন রাজধানীর কল্যাণপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রূপনগর শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন স্বপন। তার বড় মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে, একমাত্র ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

অপর নিহত আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকায় ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এমএনজি নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুই ছেলের জনক ছিলেন মামুন। বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

এছাড়া নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের দোলাইখাল শাখায় কর্মরত। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় চাকরি করেন।

শুক্রবার রাতেই জানাজা শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাশাপাশি সমাহিত করার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্রাম এখন শোকে স্তব্ধ, আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

গ্রামের মানুষের একটাই প্রশ্ন—আর কত প্রাণ ঝরলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো?

error: Content is protected !!

একসাথে চার কবর: ইউটার্নে নিভে গেলো কুমিল্লার এক আলোকিত পরিবার

তারিখ : ১১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

জহিরুল হক বাবু।।
সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্তি কবে—এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের ইউটার্নে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর। একসাথে খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। প্রাণ গেলো এক পরিবারের বাবা, মা এবং দুই সন্তানের।

চাঁদপুর জেলার সীমানা সংলগ্ন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আলোকিত পরিবারটি মুহূর্তেই নিঃস্ব হয়ে গেল। নিহতরা হলেন— আলহাজ্ব ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম স্বপন (৫০) এবং ছোট ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম মামুন (৪৫)।

গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হোটেল নূরজাহান এলাকার ইউটার্নে কাভার্ডভ্যান উল্টে প্রাইভেট কারের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক আগে ওমর আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসায় যান। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন দুই ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় চারজনের জীবন।

নিহত আবুল হাসেম স্বপন রাজধানীর কল্যাণপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রূপনগর শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক ছিলেন স্বপন। তার বড় মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে, একমাত্র ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

অপর নিহত আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকায় ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এমএনজি নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুই ছেলের জনক ছিলেন মামুন। বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

এছাড়া নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের দোলাইখাল শাখায় কর্মরত। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় চাকরি করেন।

শুক্রবার রাতেই জানাজা শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাশাপাশি সমাহিত করার প্রস্তুতি চলছে। পুরো গ্রাম এখন শোকে স্তব্ধ, আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

গ্রামের মানুষের একটাই প্রশ্ন—আর কত প্রাণ ঝরলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো?