
স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার মুরাদনগরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হয়েছে আরও ৭ সাংবাদিক।
সংঘর্ষের ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সময় স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, খোলা কাগজের শাহ ইমরান, এশিয়ান টিভির মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ, বার্তা২৪-এর মহিন নাসের খান রাফি, দৈনিক আজকের কুমিল্লা পত্রিকার হাবিবুর রহমান মুন্না, এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান মো. বাপ্পি আহত হন।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহর চত্বরে সংঘাতের এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হামলার অভিযোগ ওঠার পর এ ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মুরাদনগর উপজেলা সদরের আল্লাহর চত্বরে এনসিপির নেতারা ও আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাবেশে জমায়েত হন। এ সময় ওই সমাবেশ লক্ষ্য করে পাশের জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে বেশ কয়েকটি ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। হামলা ও ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ১০ সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
আহত ইউপি সদস্য শেখর বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আল্লাহর চত্বরে এসে সমাবেশ শুরু করার পরপরই সমাবেশ লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। এ সময় আমাকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ আঘাত করা হয়।’
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমি নিজেও আহত হই। আমরা পূর্বনির্ধারিত মিছিল নিয়ে আসার পর ইট-পাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া করা হয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার পরির্দশক (তদন্ত) আমিন কাদের খান বলেন, ‘মুরাদনগর সদরে এনসিপি সমর্থকদের সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশেই অবস্থান করা কিছু লোক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
এদিকে মুরাদনগরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংঘর্ষের কভার করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৮ জন সংবাদকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, হামলাকারীরা সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করে। হামলার ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
কাজী এনামুল হক বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের বর্বর হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। এভাবে ভীতি সৃষ্টি করে সত্য প্রকাশ থামানো যাবে না।”
তিনি অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।