শান্তনু হাসান খান (বিশেষ প্রতিনিধি)
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধে মজিদপুর ইউনিয়নের বর্তমান নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো: ফারুক মিয়া চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি পুনরায় মাঠে থাকছেন। তিনি জাতীয় পার্টির লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তবে সাধারণ মানুষদের মনোভাবটা বদলে গেছে। বিগত দিনে যত কাজ করেছেন তার সবটাই ছিলো সরকারী রুটিন ওয়ার্ক।
দৃশ্যমান যত উন্নয়ন- তার পুরোটাই দাবীদার মাননীয় সাংসদ সেলিমা আহমেদ মেরী এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এবার জনগণ পছন্দের তালিকায় রেখেছেন-মজিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে। তার পাশাপাশি আরো ৬ জন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জানা যাবে-শেষ পর্যন্ত কতজন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মাঠে থাকছেন।
অনেকগুলো পজেটিভ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তিতাসের ৯টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিরবে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ঘুরে দাঁড়াতে চায়। আর সেটা সম্ভবনায় রয়েছে জাহাঙ্গীর আলমের কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে। এ প্রসঙ্গে ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার অতীতের পলিটিকেল ক্যারিয়ার ও এলাকার মানুষের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমি ইনশাল্লাহ নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে কামিয়াব হবো।
৪১ বছরের জাহাঙ্গীর আলম বেড়ে উঠেছেন ৯নং ওয়ার্ডে তার গ্রামের বাড়িতে। পড়াশুনা শুরু করেছেন গ্রাম থেকে। পরবর্তী সময় গৌরীপুর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করেন। ওই সময়ে ছাত্রলীগের মিছিল মিটিং সমাবেশের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতি শুরু। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতে গিয়ে তিনি যুবগীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন অনেক দিন। এ সময় নানা প্রকার ঝুটঝামেলায় পড়ে গেলেও দলের আদর্শ থেকে সরে যাননি কখনো। এরপর ২০১৪তে কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং আজ অবধি সে পদে বহাল আছেন।
হোমনা-তিতাস উপজেলার ৯ + ১১টি ইউনিয়ন বর্তমান। আর এখানকার বর্তমান সাংসদ সেলিমা আহমেদ মেরী। এক সময় বি এন পির ড: খন্দকার মোশারফ হোসেন ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত মন্ত্রী এম কে আনোয়ার ছিলেন এ এলাকার নীতি নির্ধারক। আর বর্তমান সাংসদের দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় যথেষ্ঠ উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে এ এলাকায়। এখানকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট দৃশ্যমান। সবকটি চেয়ারম্যান সরকার দলীয় হলেও মজিদপুরের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির। আগামী ইউপি নির্বাচনের বর্তমান ৯ চেয়ারম্যান ছাড়াও আরো কয়েকজন মাঠে থাকছেন।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার তেমন কোন সুযোগ ছিলো না আমার। আগামীতে এ আসনে দলীয়ভাবে নির্বাচিত হতে পারবো বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আর সে বিশ্বাসের উপর ভর করে আমি নির্বাচনের মাঠকে গুছিয়ে রেখেছি। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে এবং জনগণ যদি ভোট প্রদান করতে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের পবিত্র আমানত প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে ইনশাল্লাহ আমি দল থেকে উঠে আসবো। আর নির্বাচিত চেয়াম্যান হিসাবে আমার মজিদপুর ইউনিয়কে অত্যাধুনিক- মডেল ডিজিটালাইস্ট ইউনিয়ন হিসেবে জনগণকে উপহার দিবো। পাশাপশি জননেত্রী শেখ হাসিনার এবারের প্রতিপাদ্য- “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত করতে আমি বদ্ধ পরিকর।
এদিকে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। মার্চ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ নাগাদ ধারাবাহিক ভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সেই আলোকে কুমিল্লা ১৭ টি উপজেলার ৩১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই কুমিল্লার মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সি.ই.সি।
এর মধ্যে তিতাস, মেঘনা ও লাকসাম উপজেলার ইউপি নির্বাচন ১১ নভেম্বর। অপরদিকে হোমনাতে ২ তারিখ মনোনয়ন জমা, ৪ তারিখ প্রত্যাহার এবং সবশেষে ২৮ নভেম্বর ভোট গ্রহণ। এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব হেলাল উদ্দিন বলেন, উপজেলা সদর থেকে যে সকল ইউনিয়ন ৫/৭ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যমান-ওই সকল ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page