
নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার তিতাসে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এক যুবকের মরদেহ নিয়ে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পারিবারিক পরকীয়ার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বরিশাল থেকে ডেকে এনে শ্বাসরোধের পর গলাকেটে হত্যা করা হয় ওই যুবককে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থার কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—বরিশালের কাজীরহাট থানার ছৈয়তক্তা এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলাম মোল্লার ছেলে মো. সোহেল ইসলাম (৩০), তার ছেলে শাহীন ইসলাম (১৯) এবং মেহেন্দীগঞ্জ থানার হেসামউদ্দিন এলাকার মৃত জালাল হাওলাদারের ছেলে হানিফ হাওলাদার (৬১)।
পিবিআই জানায়, নিহত যুবকের নাম ইমতিয়াজ ওরফে মান্না (২২)। তিনি বরিশালের কাজীরহাট থানার পূর্ব রতনপুর এলাকার দুলাল হাওলাদারের ছেলে।
পিবিআই জানায়, সোহেল ঢাকায় গাড়ি চালকের কাজ করতেন। তার স্ত্রী ও কিশোরী মেয়েকে রেখে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। একসময় বাড়ি গিয়ে জানতে পারেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে ইমতিয়াজের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। পরে আরও জানতে পারেন, ইমতিয়াজ কিশোরী মেয়েকেও ব্ল্যাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সোহেল তার ছেলে শাহীন এবং মামা হানিফকে নিয়ে ইমতিয়াজকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ১১ জুলাই লাল রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে ‘সিলেট বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার’ প্রলোভনে ইমতিয়াজকে গাড়িতে তোলেন তারা। পরে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি এলাকায় নিয়ে গিয়ে গাড়ির ভেতরেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলাকেটে মরদেহ সড়কের পাশে ফেলে পালিয়ে যান তারা।
১২ জুলাই সকালে স্থানীয়রা সড়কের পাশে একটি গাছের নিচে গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
১৩ জুলাই নিহতের বাবা দুলাল হাওলাদার তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে নামে পিবিআই কুমিল্লার একটি দল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করেন পরিদর্শক আবু বকর। এরপর ১৫ জুলাই ভোরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার মুন্সিহাটি এলাকা থেকে সোহেল ও শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরদিন ১৬ জুলাই রাজধানীর রাজাবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হানিফ হাওলাদারকে।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার তিন আসামিই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ সুপার সারওয়ার আলম বলেন, “মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”