বুড়িচং প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় তুহিন (১৯) নামের এক কলেজ ছাত্রকে অপহরণ করে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তুহিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে মৃত্যুর সাথে লড়ছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আহত তুহিন বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন ও ফেরদৌসী আক্তার দম্পতির পুত্র। গত ২০ অক্টোবর রাতে উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পূর্ববিরোধের জেরে স্থানীয় প্রভাবশালী মো. সাইফুল ইসলাম বাবু, তার ছেলে নাফিজ উদ্দিন, একই গ্রামের জহির ও আবদুল আলিমসহ আরও কয়েকজন মিলে ওই রাতে শ্রীপুর গ্রামের কামাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে তুহিনকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে সাইফুল ইসলামের বাড়ির পাশের একটি বিল্ডিং ঘরে আটকে রেখে লোহার রড ও এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়।
নির্যাতনে তুহিনের দুই হাত ও পা ভেঙে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম হয়। এসময় সে প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। তখন হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার আগে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় তুহিনকে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তুহিন গত পাঁচ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে এবং অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারকে নানা হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইফুল ইসলাম বাবু এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত এবং অতীতে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন।
বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক জানান, অভিযোগ দায়েরের পরপরই মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম বাবু ইউরোপ প্রবাসী হলেও তাকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ গুরুত্বের সাথে কাজ করছে।”











