আতাউর রহমান।।
মাত্র ৭ মাস ২১ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তেরো বছর বয়সী মেধাবী কিশোর মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদ। অতি অল্প সময়ের মধ্যে কৃতিত্বের সাথে কোরআনের শেষ সবক সম্পন্ন করে হাফেজ হয়ে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে সে।
মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদ ( ১৩ ) কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের সাহেবাবাদ গ্রামের মুহাম্মদ আবু কাউসার ও তানজিনা বেগম দম্পতির ছেলে।
মেধাবী এই কিশোর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্পাবাস এলাকায় অবস্থিত মুহিব্বানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হাফেজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। এই বিভাগ থেকেই সে কোরআনে হাফেজ হওয়ার পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।
হেফজ বিভাগের প্রধান হাফেজ মুহাম্মদ রবিউল্লাহ সিকদার, শিক্ষক মুফতি আবদুল হাফিজ ও প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষকরা মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদের কৃতিত্বের সাথে হিফজ সম্পন্ন হওয়ায় বেশ উচ্ছ্বসিত।
জানা গেছে, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হাফেজ হওয়ার উদ্দেশ্যে গত ১৮ মাস আগে চট্টগ্রাম বারীয়া দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন সুলতানুল ওয়ায়েজীন মোনাজারে আহলে সুন্নাহ বাহারুল উলুম আল্লামা মুফতি ছৈয়দ মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা বারী হুজুরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মুহিব্বানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয় মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদ। সেখানেই হিফজ পড়াশোনায় মাদরাসার শিক্ষকসহ সকলের নজর কাড়ে সাইফুদ্দিন। এক পর্যায়ে ৭ মাস ২১ দিনে মাত্র ১৩ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে সাইফুদ্দিন। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে নিজের ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে হাফেজ হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করায় উচ্ছ্বসিত সাইফুদ্দিন নিজেও। এদিকে অল্প সময়ের মধ্যে হাফেজ হওয়ার সাফল্যে খুশি মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদের সহপাঠীরাও।
হাফেজ মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদ জানায়, শিক্ষকদের আন্তরিক পাঠদান, দিকনির্দেশনা ও ভালোবাসায়, মা-বাবার দোয়ায় এবং আল্লাহপাকের অশেষ মেহেরবানিতে সে অল্প সময়ের মধ্যে হাফেজ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সাইফুদ্দিন। ভবিষ্যতে সে একজন বড় মাপের আলেম হয়ে ইসলামের খেদমত করতে চান।
হাফেজ মুহাম্মাদ সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি কষ্ট করে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছি। আমার সংকল্প ছিল আমার মা-বাবার স্বপ্ন আমাকে পূরণ করতে হবে। মাদরাসার হুজুররাও আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। আমি পড়াশোনা করে আলেম হয়ে ইসলামের খেদমত করতে চাই।
হাফেজ সাইফুদ্দিনের দাদা সহিদ মিয়া বলেন, আমার নাতির সাফল্যে আমরা পরিবারের সবাই অত্যন্ত খুশি। মাদরাসার হুজুরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। দেশবাসীর নিকট আমার নাতির জন্য দোয়া চাচ্ছি, আমার নাতি বিজ্ঞ আলেম হয়ে যেনো মানুষের সেবা করতে পারে।
মাদরাসার প্রধান হাফেজ মোহাম্মদ রবিউল্লাহ সিকদার বলেন, শুরু থেকেই সাইফুদ্দিন পড়াশোনার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল। পড়ার প্রতি তার টান দেখে আমরাও তাকে সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। তার মেধা ও চেষ্টায় সে এমন গৌরব উজ্জ্বল সাফল্য লাভ করেছে। আমি তার জন্য দোয়া করছি, আল্লাহ তাকে ইসলামের খেদমতে কবুল করুক।