০৬:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শিক্ষক সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় ফের অস্থিরতায় কুমিল্লা মডার্ণ হাই স্কুল তুরস্কের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কুবির শিক্ষক–শিক্ষার্থী বিনিময় চুক্তি, নেই টিউশন ফি বেগম জিয়ার আরোগ্য কামনায় হাজী ইয়াছিনের ধারাবাহিক কুরআন খতম ও দোয়া চৌদ্দগ্রামে চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাচনী সমন্বয় সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও সংবর্ধনা প্রদান জীবনের বাকি সময়টা কুমিল্লা-৬ আসনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেই থাকতে চাই -হাজী ইয়াছিন বুড়িচংয়ে যৌতুকের দাবিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ; আটক ২ কুবির দত্ত হলে প্রথমবারের মতো আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন সংবাদ প্রকাশে নির্ভীক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক যুগ শিশুদের নিয়ে কুবি রোটারেক্ট ক্লাবের ‘পুষ্পায়ন’ কর্মসূচি

কুবি সামাজিক বনে প্রবাসীর মোবাইলফোন কেড়ে নিলো প্রেমিকা ও সহযোগীরা

  • তারিখ : ০৮:২৪:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১
  • 54

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের সামাজিক বনে এক প্রবাসীকে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। প্রবাসীর প্রেমিকা, প্রেমিকার বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর যোগসাজশে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সামাজিক বনায়ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে ঘটনা সংশ্লিষ্টদের দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার রেশমা নামের এক নারী তার বাহারাইন প্রবাসী ছেলে বন্ধু মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা মো. রাসেলকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের সামাজিক বনায়ন এলাকায় নিয়ে আসেন।

প্রক্টর অফিসে দেওয়া জবানবন্দিতে রেশমা জানান, সম্পর্কে ভাঙন ঘটায় তার বাল্যবন্ধু আজহারকে দিয়ে প্রবাসী রাসেলকে ভয়-ভীতি দেখানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। চেয়েছিলেন তার মোবাইলফোনটি কেড়ে নেবেন। এ জন্য জায়গা হিসেবে তারা বেছে নেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সামাজিক বনায়ন এলাকাকে। রেশমার বন্ধু আজহার আরও কয়েকজনসহ কাজটি ঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সাকিবকেও সঙ্গী করেন।

প্রবাসী রাসেল অভিযোগ করেন, তিনি ও তার প্রেমিকা রেশমা সামাজিক বনে বসে ছিলেন। এ সময় রেশমার বন্ধু আজহার ও কুবি শিক্ষার্থী সাকিবসহ সাত থেকে আটজন এসে তাদের হেনস্তা শুরু করেন। এ সময় আজহার তাকে চড় মারেন এবং সঙ্গে থাকা মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেন।

তবে সামাজিক বনে স্থানীয় যুবক ইকবাল ও তার সহযোগীরা উপস্থিত হলে ঘটনা ভেস্তে যায়। তারা কুবি শিক্ষার্থী সাকিবের ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে একদফা সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে এসে ইকবাল ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনকে ধরে ফেলে। এরপর কুবি শিক্ষার্থী সাকিবসহ, রেশমা ও প্রবাসী রাসেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়।

প্রথমে রেশমা মূল ঘটনা আড়াল করলেও পরবর্তীতে বিশ্ববদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের সামনে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাকিবের ফোনে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া রেশমার বন্ধু আজহারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে, ছিনতাইগ্রুপের সদস্য স্থানীয় ইকবালের দেওয়া তথ্যে সামাজিক বনের একটি ভাঙা ঘর থেকে কুবি শিক্ষার্থীর ফোনটি উদ্ধার করা হয়। আর রেশমার বন্ধু আজহার আসার পর পাওয়া যায় প্রবাসী রাসেলের ফোন।

পরবর্তীতে সবার বক্তব্য শুনে কোটবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রিয়াজউদ্দিন স্থানীয় ছিনতাইকারী ইকবালকে আটক করেন। বাকিরা কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ না করায় মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মো. রিয়াজউদ্দিন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা একজনকে আটক করেছি। বাকিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রবাসীকে হেনস্তার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে কুবি শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, ‘আজহার আমার বন্ধু। সে আমাকে জানিয়েছিল তার এক বান্ধবী তার প্রেমিককে নিয়ে আসবে। তাদের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। একটু থাকার জন্য। আমি ওই প্রবাসীর মোবাইলফোন নেইনি।’

এদিকে প্রবাসী প্রেমিককে হেনস্তার পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে কুবি প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, তার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

error: Content is protected !!

কুবি সামাজিক বনে প্রবাসীর মোবাইলফোন কেড়ে নিলো প্রেমিকা ও সহযোগীরা

তারিখ : ০৮:২৪:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১

নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের সামাজিক বনে এক প্রবাসীকে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। প্রবাসীর প্রেমিকা, প্রেমিকার বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর যোগসাজশে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সামাজিক বনায়ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে ঘটনা সংশ্লিষ্টদের দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার রেশমা নামের এক নারী তার বাহারাইন প্রবাসী ছেলে বন্ধু মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা মো. রাসেলকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের সামাজিক বনায়ন এলাকায় নিয়ে আসেন।

প্রক্টর অফিসে দেওয়া জবানবন্দিতে রেশমা জানান, সম্পর্কে ভাঙন ঘটায় তার বাল্যবন্ধু আজহারকে দিয়ে প্রবাসী রাসেলকে ভয়-ভীতি দেখানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। চেয়েছিলেন তার মোবাইলফোনটি কেড়ে নেবেন। এ জন্য জায়গা হিসেবে তারা বেছে নেন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সামাজিক বনায়ন এলাকাকে। রেশমার বন্ধু আজহার আরও কয়েকজনসহ কাজটি ঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সাকিবকেও সঙ্গী করেন।

প্রবাসী রাসেল অভিযোগ করেন, তিনি ও তার প্রেমিকা রেশমা সামাজিক বনে বসে ছিলেন। এ সময় রেশমার বন্ধু আজহার ও কুবি শিক্ষার্থী সাকিবসহ সাত থেকে আটজন এসে তাদের হেনস্তা শুরু করেন। এ সময় আজহার তাকে চড় মারেন এবং সঙ্গে থাকা মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেন।

তবে সামাজিক বনে স্থানীয় যুবক ইকবাল ও তার সহযোগীরা উপস্থিত হলে ঘটনা ভেস্তে যায়। তারা কুবি শিক্ষার্থী সাকিবের ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে একদফা সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে এসে ইকবাল ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনকে ধরে ফেলে। এরপর কুবি শিক্ষার্থী সাকিবসহ, রেশমা ও প্রবাসী রাসেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়।

প্রথমে রেশমা মূল ঘটনা আড়াল করলেও পরবর্তীতে বিশ্ববদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের সামনে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাকিবের ফোনে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া রেশমার বন্ধু আজহারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে, ছিনতাইগ্রুপের সদস্য স্থানীয় ইকবালের দেওয়া তথ্যে সামাজিক বনের একটি ভাঙা ঘর থেকে কুবি শিক্ষার্থীর ফোনটি উদ্ধার করা হয়। আর রেশমার বন্ধু আজহার আসার পর পাওয়া যায় প্রবাসী রাসেলের ফোন।

পরবর্তীতে সবার বক্তব্য শুনে কোটবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রিয়াজউদ্দিন স্থানীয় ছিনতাইকারী ইকবালকে আটক করেন। বাকিরা কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ না করায় মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মো. রিয়াজউদ্দিন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা একজনকে আটক করেছি। বাকিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রবাসীকে হেনস্তার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে কুবি শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, ‘আজহার আমার বন্ধু। সে আমাকে জানিয়েছিল তার এক বান্ধবী তার প্রেমিককে নিয়ে আসবে। তাদের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। একটু থাকার জন্য। আমি ওই প্রবাসীর মোবাইলফোন নেইনি।’

এদিকে প্রবাসী প্রেমিককে হেনস্তার পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে কুবি প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, তার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।