জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বিজিবি(বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) এর কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে।
(১৩ অক্টোবর ২০২৪) রোববার বিকেলে কুমিল্লা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্ত এলাকায় সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এর কঠোর নিরাপত্তায় ২৮টি পূজা মন্ডপে বাদ্য বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানায় সনাতন ধর্মালম্বীরা। এ সময় কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলাধীন শংকুচাইলের স্বর্গীয় ভারত চন্দ্র রায়ের বাড়ি পূজা মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের সময় পরিদর্শন করেন লেঃ কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার, পিএসসি, এসি, অধিনায়ক, সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি)।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ৬০ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাষ্টার সহকারী পরিচালক মোঃ মতিউর রহমান, পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্লাটুন কমান্ডার,শংকুচাইল ক্যাম্প কমান্ডার মোঃ বোরহান উদ্দিন, পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সতীস রায় ও পূজা উদযাপন কমিটির বিভিন্ন স্তরের সদস্যগণ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনসাধারণ। এবছর বুড়িচং উপজেলায় ৩৭ টি পূজামন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় অনেক ভক্ত অশ্রুসিক্ত থাকেন। আবার অনেকেই ক্ষণটিকে সুন্দর করে কাটাতে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন।ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলার অংশ নেন। এই আচারটি দেবী দুর্গার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তারপর হিন্দু নারীরা একে অপরের গায়ে সিঁদুর মাখিয়ে জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করেন।বিসর্জনের আয়োজন দুর্গা পূজার স্থায়ী সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য তুলে ধরে।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় সনাতন ধর্মালম্বীরা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সতীশ রায় বলেন, গত ০৩ অক্টোবর হতে পূজা মন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে বিজিবির টহল দল নিয়মিত রেকি ও পরিদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রেক্ষিতে পুজা মন্ডপগুলিতে কোন প্রকার হুমকী ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি । সকল সনাতন ধর্মালম্বীরা এবারের পূজায় বিগত বছরের তুলনায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ ও সম্পন্ন করতে পেরে বিজিবির প্রতি শতভাগ আস্থা অর্জন করেছে।প্রতিটি পুজা মন্ডপে দৃশ্যমানভাবে মোবাইল নম্বর সম্বলিত বোর্ড প্রদর্শন, কিছু কিছু মন্ডপে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় সিসি টিভি স্থাপন ও বিজিবি সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা অব্যাহত থাকার কারণে যে কোন উদ্ভূত পরিস্থিতি রোধ করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিলেন ৬০ বিজিবি। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম বিজিবি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এরুপ কার্যক্রমে সকল হিন্দু ধর্মালম্বীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছে। এবারে পুজায় বিজিবির ভূমিকা ছিল খুবই আন্তরিক ও সত্যিই প্রশংসনীয়।এছাড়া বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার বলেন, বিজিবির কঠোর নিরাপত্তায় শারদীয় দূর্গা পূজা সকলেই একত্রে আনন্দ ও উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপন করতে পেরে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের পুজা অর্চনা সুন্দর ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে সম্পন্নের ব্যাপারে বিজিবি কর্তৃক সর্বাত্নক সহযোগিতা এবং সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করার প্রেক্ষিতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ জনগণকে অবহিত করেন। এভাবে সকলের সহযোগীতামূলক মনোভাব নিয়ে কাজ করার কারণে নির্বিঘ্নে পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উপস্থিত সকলকে জানান।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page