নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী। কয়েকদিন ধরে বাড়ছে শনক্তের সংখ্যা। কুমিল্লা নগরীর পাশাপাশি উপজেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। সরকারি হাসপাতালের বাহিরেও নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারি হিসেবে গত আট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ১৮জন। চলতি সেপ্টেম্বরে মাসে আক্রান্ত সংখ্যা ৫৮ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন জানান, কুমিল্লায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সিটির পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে। সিটি মেয়রসহ বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যানগণকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে মশকনিধন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য। এছাড়া ডেঙ্গু চিকিৎসার বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বিশেষ তদারকি করছে।
এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নে মশক নিধন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বাহালুল। গতকাল শনিবার সকালে শহরতলীর চান্দপুর এলাকায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। পরে তিনি স্থানীয় লিটল মুন হাই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন এবং ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রমণ রোধে জনসচেতনামূলক সভা করেন। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য,এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নগরী ও জেলার সব উপজেলা মিলিয়ে নয় মাসে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তে সংখ্যা ৭৬। এর মধ্যে এ মাসের গতকাল শনিবার পর্যন্ত ২৫ দিনে ৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কুমিল্লা মেডিকেল কজেল হাসপাতালের ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে আসছেন জেলার বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি এলাকার রিয়াজ উদ্দিন। তিনি চট্রগ্রামের একটি প্যারামেডিকেল কলেজের ফাইনাল বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন চট্রগ্রাম থেকে আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় চলে আসেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা আরেক রোগি লাকসাম উপজেলার আজগরার বাসিন্দা মোঃ মাসুক মিয়া একজন সবজি ব্যবসায়ী। তিনি বলেন দোকানে কেনা বেচার সময় হয়তো তিনি আক্রান্ত হয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের আবদুর রহিম মাষ্টারের স্ত্রী জীবন বেগম জানান, ঢাকায় ছেলের বাসায় বেড়াতে গিয়ে জ¦র ও মাথা ব্যাথা দেখা দেয়। পরে কুমিল্লা এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সৌমেন রায় বলেন, এখন করোনা ও ডেঙ্গুর প্রাদুভাব চলছে। কেউ যদি একসাথে দুটিতে আক্রান্ত হয় তাহলে কঠিন পরিস্থিতি হবে। এ দুটি রোগ এক অপরের বিপরীত মাত্রার। করোনা আক্রান্ত হলে শরীরে রক্ত জমাট হয়ে যায়। তখন রক্ত তরল করার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রক্ত পাতলা হয়ে যায়। তখন রক্ত জমাট বাঁধার ঔষধ দেওয়া হয়। একসাথে দুটো হলে জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। ডেঙ্গু দিনের বেলায় কামড়ায় এতে শিশুদের ঝুঁকিটা বেশি। তাই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু মশার উৎস্য স্থল ধ্বংশ করতে হবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page