০৩:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লায় ভুট্টাখেতে অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বাঁচার যুদ্ধ -সহযোগিতা চান কুমিল্লার পারুল বেগম চৌদ্দগ্রামকে শান্তির জনপদ হিসেবে গড়তে ধানের শীষে ভোট দিন : কামরুল হুদা কুবির দত্ত হলের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন বাংলা ব্লকেড কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সব অফিস তামাকমুক্ত করা হবে- প্রশাসক শাহ আলম বুড়িচংয়ে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ডাঃ তাহেরের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জরিমানা ও মাদকসেবির কারাদণ্ড কুমিল্লায় ওয়াই-ব্রিজে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রবাস ফেরত যুবকের মৃত্যু বুড়িচংয়ে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত

চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতা হারুনের ভয়াবহ নির্যাতনে ঘরবাড়ি ছাড়া ২টি পরিবার

  • তারিখ : ০৫:৫২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 53

মনোয়ার হোসেন।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হারুন রশিদ নামে এক যুবলীগ নেতার ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ফারহানা ইয়াসমিন নামের এক গৃহবধু। তার সাথে অঝোরে কেঁদেছেন তাদেরই সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি (১৫) ও আশরাফুল ইসলাম তোহা (১০)। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীপুর এলাকার মৃত শাহজাহান মজুমদারের ছেলে।

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি বিধবা রৌশন আরা বেগমের পক্ষে তার দেবরের স্ত্রী গৃহবধু ফারহানা ইয়াসমিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, মনে করেছিলাম ৫ আগস্টের পর এদেশ থেকে আওয়ামী সকল দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু দেখা গেলো তার উল্টো চিত্র। স্থানীয় যুবলীগ নেতা হারুন রশিদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ তদের ভ‚মি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। ক্ষমতায় থাকাকালিন যুবলীগ নেতা হারুন একাধিকবার তাদের পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে নির্যাতন করেছিলেন। তখনও এর প্রতিকার তারা কোথাও পায়নি।

পূর্বের বিরোধের জের ধরে গত ২ ডিসেম্বর যুবলীগ নেতা হারুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িঘর, ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এ সময় গৃহবধু আরও উল্লেখ করে বলেন, যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা আমার পরনের কাপড় নিয়ে টানাহেছড়া সহ শ্লীলতাহানী ও শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করে। হাতে অস্ত্র নিয়ে বারবার আমাদের দিকে ধেয়ে আসে। তারা আমার কোমলমতি দুই সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি ও আশরাফুল ইসলাম, বড় ঝা রৌশন আরা বেগমকে ঘরের ভেতরে রেখে তালা মেরে দেয়। তাৎক্ষণিক আমরা জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ এ কল করলে থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আমাদেরকে ঘর থেকে বের হতে সাহায্য করে। লিখিত বক্তব্যে গৃহবধু আরও উল্লেখ করেন, এতেও যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ ক্ষান্ত না হয়ে আমার দুই সন্তানকে স্কুলে যেতে ও বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বাধা প্রদান এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

বিষয়টি আমি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত কে জানালে তাঁর সহযোগিতায় আমার সন্তানরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। গৃহবধু কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, আমরা হারুন এর অত্যাচারে গত ২ ডিসেম্বর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেছি। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট অভিযোগ দেওয়াতে তারা আরও বেশি ক্ষীপ্ত হয়। তার বাহিনীর ভয়ে পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ মজুমদারের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.টি.এম আক্তার উজ জামান বলেন, ‘গৃহবধুর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৪ বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগির পরিবারকে আইনী সহায়তা প্রদান করেছে। আমরা গৃহবধুকে থানায় আসতে বললেও তিনি এখন আর থানায় আসছেন না।’

error: Content is protected !!

চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতা হারুনের ভয়াবহ নির্যাতনে ঘরবাড়ি ছাড়া ২টি পরিবার

তারিখ : ০৫:৫২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

মনোয়ার হোসেন।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হারুন রশিদ নামে এক যুবলীগ নেতার ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ফারহানা ইয়াসমিন নামের এক গৃহবধু। তার সাথে অঝোরে কেঁদেছেন তাদেরই সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি (১৫) ও আশরাফুল ইসলাম তোহা (১০)। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীপুর এলাকার মৃত শাহজাহান মজুমদারের ছেলে।

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি বিধবা রৌশন আরা বেগমের পক্ষে তার দেবরের স্ত্রী গৃহবধু ফারহানা ইয়াসমিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, মনে করেছিলাম ৫ আগস্টের পর এদেশ থেকে আওয়ামী সকল দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু দেখা গেলো তার উল্টো চিত্র। স্থানীয় যুবলীগ নেতা হারুন রশিদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ তদের ভ‚মি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। ক্ষমতায় থাকাকালিন যুবলীগ নেতা হারুন একাধিকবার তাদের পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে নির্যাতন করেছিলেন। তখনও এর প্রতিকার তারা কোথাও পায়নি।

পূর্বের বিরোধের জের ধরে গত ২ ডিসেম্বর যুবলীগ নেতা হারুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িঘর, ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এ সময় গৃহবধু আরও উল্লেখ করে বলেন, যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা আমার পরনের কাপড় নিয়ে টানাহেছড়া সহ শ্লীলতাহানী ও শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করে। হাতে অস্ত্র নিয়ে বারবার আমাদের দিকে ধেয়ে আসে। তারা আমার কোমলমতি দুই সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি ও আশরাফুল ইসলাম, বড় ঝা রৌশন আরা বেগমকে ঘরের ভেতরে রেখে তালা মেরে দেয়। তাৎক্ষণিক আমরা জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ এ কল করলে থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আমাদেরকে ঘর থেকে বের হতে সাহায্য করে। লিখিত বক্তব্যে গৃহবধু আরও উল্লেখ করেন, এতেও যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ ক্ষান্ত না হয়ে আমার দুই সন্তানকে স্কুলে যেতে ও বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বাধা প্রদান এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

বিষয়টি আমি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত কে জানালে তাঁর সহযোগিতায় আমার সন্তানরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। গৃহবধু কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, আমরা হারুন এর অত্যাচারে গত ২ ডিসেম্বর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেছি। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট অভিযোগ দেওয়াতে তারা আরও বেশি ক্ষীপ্ত হয়। তার বাহিনীর ভয়ে পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ মজুমদারের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.টি.এম আক্তার উজ জামান বলেন, ‘গৃহবধুর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৪ বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগির পরিবারকে আইনী সহায়তা প্রদান করেছে। আমরা গৃহবধুকে থানায় আসতে বললেও তিনি এখন আর থানায় আসছেন না।’