০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
Although not, the greatest victories into the Playtech’s community provides happened into the most other popular online slots Together with, the latest promise of future discount password products adds an element of expectation to have what exactly is ahead Slots be noticeable due to their vibrant image and enjoyable templates কুবিতে ‘ডাটা গভর্নেন্স অ্যান্ড ইন্টারঅপারেবিলিটি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৮৬ লাখ টাকার ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে আটক দেবিদ্বারে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে ‘ক্লিনিং ক্যাম্পেইন’ উদ্বোধন Free Gambling Enterprise Games for Enjoyable: A Total Guide চৌদ্দগ্রামে মাদরাসা শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী: পল্লী চিকিৎসক ইয়াছিন আটক কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কিতে জামাতার লাশ; স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই শ্যালক আটক কুমিল্লায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা ভাঙচুর আগুন

দেবীদ্বারে বাবার পরকিয়ায় বলি ৫ বছরের শিশু ফাহিমা, বাবাসহ র‌্যাবের হাতে আটক -৫

  • তারিখ : ১০:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১
  • 12

এ আর আহমেদ হোসাইন, দেবীদ্বার প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে নিখোঁজের সাতদিন পর ৫ বছরের শিশু ফাহিমার ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা আমির হোসেনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

ফাহিমা দেবীদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর (চম্পকনগর) গ্রমের ট্রাক্টর চালক আমির হোসেন ও গৃহিনী হোছনা বেগম’র একমাত্র কণ্যা। হোছনা বেগম বর্তমানে ৩ মাসের অন্তস্বত্বা।

ফাহিমা গত ৭ নভেম্বর বিকেলে বাড়ির আঙ্গীনায় খেলতে যেয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় নিজ গ্রামে, স্বজনদের বাড়ি, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা খুজি করে এবং মাইকিং করে না পেয়ে গত ১১ নভেম্বর তার পিতা আমির হোসেন দেবীদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন।
অপরদিকে কবিরাজ মাঈনুদ্দিনের ভক্ত চাপানগর গ্রামের একাধিক মুরিদান ফাহিমাকে উদ্ধারে কবিরাজ মাঈনুদ্দিন শাহ’র স্মরনাপন্ন হন।

অবশেষে নিহত শিশুর নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে গত ১৪ এপ্রিল ভোরে পথচারীরা উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের নজরুল ইসলাম মাষ্টারের বাড়ির সামনে ‘দেবীদ্বার-চান্দিনা’ সড়কের পাশের খাল সংলগ্ন একটি ব্রীজের গোড়ায় বাজারের ব্যাগে মানুষের পা বেড়িয়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন করেন। ওই সংবাদ পিবিআই’র একটি দল ও দেবীদ্বার- ব্রাক্ষণপাড়া সার্কেল এ,এস,পি আমিরুল্লাহ, দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আরিফুর রহমান উপ-পরিদর্শক(এসআই) নাজমুল হাসান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোঃ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। এসময় শিশু উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ শিশু ফাহিমার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী এবং স্বজনরা তার মাথার চুল এবং গায়ের হলুদ গেঞ্জী দেখে সনাক্ত করেন।

১৪ নভেম্বর ফাহিমার পিতা আমির হোসেন বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের এবং লাশ উদ্ধারের পর থেকেই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে কুমিল্লা এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১ সিপিসি-২ এর উপ-পরিচালক মেজর সাকিব হোসেন, পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক(এসআই) মতিউর রহমান, দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) সোহরাব হোসেন সহ একাধিক টিম দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা এসময় স্থানীয়দের কাছ থেকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর ও সিসি ক্যামের ফুটেজ, চাপানগর গ্রামের মোঃ রেজাউল হোসেন ইমন’র একটি ডেইরী ফার্মের খাদ্য সরবরাহে ব্যাগ যার সাথে ফাহিমার মরদেহ উদ্ধার হওয়া ব্যাগের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া একাধিক ব্যাগ আলামত হিসেবে উদ্ধার করেন।

নিহত শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে জানাযার প্রাক্কালে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে র‌্যাব- ১১’র একটি গোয়েন্দা দল চাপানগর গ্রামের মৃত: সামসুল হক’র পুত্র স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিম মোঃ হাবিবুর রহমান(৫৫), হাবিবুর রহমানের ৪ পুত্র কবির হোসেন(৩২), ফখরুল ইসলাম(৩০), মোঃ রাসেল(২৬) ও মোঃ রেজাউল হোসেন ইমন(২২)সহ ৫জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওইদিন রাতেই একই গ্রামের আব্দুল খালেক(৬৮), তার ছেলে সাইফুল(২৫) ও আব্দুর রাজ্জাক(২০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) চাপানগর গ্রামের ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন(২৫) (পিতা-জহিরুল ইসলাম), মোঃ আবুল কালাম(৩৫) ও তার স্ত্রী লাইলী আক্তার(৩০) এবং মৃত: লিলু মিয়ার পুত্র মোঃ রবিউল আউয়াল(১৯), সিএনজি চালক মোঃ সোহেল রানা(২৭)সহ আরো ৫জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

র‌্যাব কার্যালয়ে ১৩জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমির হোসেন, লাইলী আক্তার, রবিউল আউয়াল, সোহেল রানা ও রেজাউল হোসেন ইমনসহ ৫জনকে আটক রেখে বাকী ৮জনকে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কোন সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

বুধবার সকালে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ ব্রিফিং-এ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও ঘটনার বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা অনুসন্ধানের পর শিশু ফাহিমা হত্যায় যোগসাজশের তথ্য পাওয়ার পরই বাবা আমির হোসেনসহ পাঁচ আসামিকে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১১ এর একটি দল।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত ৫নভেম্বর ভিক্টিমের বাবা আমির হোসেনকে পাশর্বতী একজন মহিলা লাইলী আক্তার’র সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে তার মেয়ে ফাহিমা আক্তার। ফাহিমা তার মা’কে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলেও জানায়। তখন লাইলী আক্তারের প্ররোচনায় আমির হোসেনের দুই চাচাতো ভাই রেজাউল ইমন, রবিউল আউয়াল ও তাদের বন্ধু সোহেলসহ রেজাউলের ফার্নিচারের দোকানে বসে একটি পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আমির হোসেন তার মেয়েকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। বিনিময়ে রেজাউল, রবিউল, সুমন তার মেয়েকে হত্যার জন্য এক লক্ষ টাকা দেয়ার অর্থ দাবী করলে আমির হোসেন শ^শুর বাড়ি থেকে আনা যৌতুকের এক লক্ষ টাকা দেয়ার শর্তে রাজী হয়।

পরবর্তীতে লাইলী আক্তার’র সাথে আলোচনা স্বাপেক্ষে ৭ নভেম্বর রেজাউল, রবিউল, সুমন, লাইলী আক্তার ও আমির হোসেন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ফাহিমাকে সোহেলের সিএনজিতে করে ঘুরতে যায়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা হয়ে আসলে খাবারের কথা বলে রাস্তার পাশে একটি নির্জন স্থানে তাকে নিয়ে যায়।

ইতিমধ্যে রেজাউল ইমন তার গরুর খামার থেকে ২৫ কেজি ওজনের ২টি প্লাষ্টিকের গরুর খাবারের ব্যাগ নিয়ে আসে। রবিউল একটি ছুরি, ও আমির হোসেন তার ঘর থেকে আরো একটি ছুরি নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা ৪ জন মিলে ফাহিমাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। প্রথমে আমির হোসেন তার মেয়েকে মাথায় চেপে ধরে তার উপর ছুড়ি চালায়, পরবর্তীতে একে একে রবিউল এবং সোহেল ছুরি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। তখন লাইলী আক্তার পাশে দাড়িয়েছিল। সব শেষে ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন তার গলা চেঁপে ধরে শ্বাশ রোধে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে তারা ৪জন মিলে ফাহিমার মরদেহ প্লাষ্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলে দেয়।

error: Content is protected !!

দেবীদ্বারে বাবার পরকিয়ায় বলি ৫ বছরের শিশু ফাহিমা, বাবাসহ র‌্যাবের হাতে আটক -৫

তারিখ : ১০:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১

এ আর আহমেদ হোসাইন, দেবীদ্বার প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে নিখোঁজের সাতদিন পর ৫ বছরের শিশু ফাহিমার ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা আমির হোসেনসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

ফাহিমা দেবীদ্বার পৌর এলাকার চাপানগর (চম্পকনগর) গ্রমের ট্রাক্টর চালক আমির হোসেন ও গৃহিনী হোছনা বেগম’র একমাত্র কণ্যা। হোছনা বেগম বর্তমানে ৩ মাসের অন্তস্বত্বা।

ফাহিমা গত ৭ নভেম্বর বিকেলে বাড়ির আঙ্গীনায় খেলতে যেয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় নিজ গ্রামে, স্বজনদের বাড়ি, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা খুজি করে এবং মাইকিং করে না পেয়ে গত ১১ নভেম্বর তার পিতা আমির হোসেন দেবীদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন।
অপরদিকে কবিরাজ মাঈনুদ্দিনের ভক্ত চাপানগর গ্রামের একাধিক মুরিদান ফাহিমাকে উদ্ধারে কবিরাজ মাঈনুদ্দিন শাহ’র স্মরনাপন্ন হন।

অবশেষে নিহত শিশুর নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে গত ১৪ এপ্রিল ভোরে পথচারীরা উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের নজরুল ইসলাম মাষ্টারের বাড়ির সামনে ‘দেবীদ্বার-চান্দিনা’ সড়কের পাশের খাল সংলগ্ন একটি ব্রীজের গোড়ায় বাজারের ব্যাগে মানুষের পা বেড়িয়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন করেন। ওই সংবাদ পিবিআই’র একটি দল ও দেবীদ্বার- ব্রাক্ষণপাড়া সার্কেল এ,এস,পি আমিরুল্লাহ, দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আরিফুর রহমান উপ-পরিদর্শক(এসআই) নাজমুল হাসান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোঃ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। এসময় শিশু উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ শিশু ফাহিমার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী এবং স্বজনরা তার মাথার চুল এবং গায়ের হলুদ গেঞ্জী দেখে সনাক্ত করেন।

১৪ নভেম্বর ফাহিমার পিতা আমির হোসেন বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের এবং লাশ উদ্ধারের পর থেকেই এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে কুমিল্লা এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১ সিপিসি-২ এর উপ-পরিচালক মেজর সাকিব হোসেন, পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক(এসআই) মতিউর রহমান, দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) সোহরাব হোসেন সহ একাধিক টিম দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা এসময় স্থানীয়দের কাছ থেকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর ও সিসি ক্যামের ফুটেজ, চাপানগর গ্রামের মোঃ রেজাউল হোসেন ইমন’র একটি ডেইরী ফার্মের খাদ্য সরবরাহে ব্যাগ যার সাথে ফাহিমার মরদেহ উদ্ধার হওয়া ব্যাগের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া একাধিক ব্যাগ আলামত হিসেবে উদ্ধার করেন।

নিহত শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে জানাযার প্রাক্কালে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে র‌্যাব- ১১’র একটি গোয়েন্দা দল চাপানগর গ্রামের মৃত: সামসুল হক’র পুত্র স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিম মোঃ হাবিবুর রহমান(৫৫), হাবিবুর রহমানের ৪ পুত্র কবির হোসেন(৩২), ফখরুল ইসলাম(৩০), মোঃ রাসেল(২৬) ও মোঃ রেজাউল হোসেন ইমন(২২)সহ ৫জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওইদিন রাতেই একই গ্রামের আব্দুল খালেক(৬৮), তার ছেলে সাইফুল(২৫) ও আব্দুর রাজ্জাক(২০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুমিল্লা র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) চাপানগর গ্রামের ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন(২৫) (পিতা-জহিরুল ইসলাম), মোঃ আবুল কালাম(৩৫) ও তার স্ত্রী লাইলী আক্তার(৩০) এবং মৃত: লিলু মিয়ার পুত্র মোঃ রবিউল আউয়াল(১৯), সিএনজি চালক মোঃ সোহেল রানা(২৭)সহ আরো ৫জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

র‌্যাব কার্যালয়ে ১৩জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমির হোসেন, লাইলী আক্তার, রবিউল আউয়াল, সোহেল রানা ও রেজাউল হোসেন ইমনসহ ৫জনকে আটক রেখে বাকী ৮জনকে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কোন সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

বুধবার সকালে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ ব্রিফিং-এ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও ঘটনার বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা অনুসন্ধানের পর শিশু ফাহিমা হত্যায় যোগসাজশের তথ্য পাওয়ার পরই বাবা আমির হোসেনসহ পাঁচ আসামিকে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১১ এর একটি দল।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত ৫নভেম্বর ভিক্টিমের বাবা আমির হোসেনকে পাশর্বতী একজন মহিলা লাইলী আক্তার’র সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে তার মেয়ে ফাহিমা আক্তার। ফাহিমা তার মা’কে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলেও জানায়। তখন লাইলী আক্তারের প্ররোচনায় আমির হোসেনের দুই চাচাতো ভাই রেজাউল ইমন, রবিউল আউয়াল ও তাদের বন্ধু সোহেলসহ রেজাউলের ফার্নিচারের দোকানে বসে একটি পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আমির হোসেন তার মেয়েকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। বিনিময়ে রেজাউল, রবিউল, সুমন তার মেয়েকে হত্যার জন্য এক লক্ষ টাকা দেয়ার অর্থ দাবী করলে আমির হোসেন শ^শুর বাড়ি থেকে আনা যৌতুকের এক লক্ষ টাকা দেয়ার শর্তে রাজী হয়।

পরবর্তীতে লাইলী আক্তার’র সাথে আলোচনা স্বাপেক্ষে ৭ নভেম্বর রেজাউল, রবিউল, সুমন, লাইলী আক্তার ও আমির হোসেন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ফাহিমাকে সোহেলের সিএনজিতে করে ঘুরতে যায়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা হয়ে আসলে খাবারের কথা বলে রাস্তার পাশে একটি নির্জন স্থানে তাকে নিয়ে যায়।

ইতিমধ্যে রেজাউল ইমন তার গরুর খামার থেকে ২৫ কেজি ওজনের ২টি প্লাষ্টিকের গরুর খাবারের ব্যাগ নিয়ে আসে। রবিউল একটি ছুরি, ও আমির হোসেন তার ঘর থেকে আরো একটি ছুরি নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা ৪ জন মিলে ফাহিমাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। প্রথমে আমির হোসেন তার মেয়েকে মাথায় চেপে ধরে তার উপর ছুড়ি চালায়, পরবর্তীতে একে একে রবিউল এবং সোহেল ছুরি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। তখন লাইলী আক্তার পাশে দাড়িয়েছিল। সব শেষে ভিক্টিমের পিতা আমির হোসেন তার গলা চেঁপে ধরে শ্বাশ রোধে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে তারা ৪জন মিলে ফাহিমার মরদেহ প্লাষ্টিকের ব্যাগে ভরে ফেলে দেয়।