ব্রাহ্মণপাড়ায় বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য বৈশাখী মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়

আতাউর রহমান।।
বাঙালি জাতির প্রাচীন ঐতিহ্য বৈশাখী মেলা। নতুন বছরের উৎসব ও বৈশাখী মেলা বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। তাই প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখ ও বৈশাখী মেলায় বাঙালি জাতি প্রাণের উৎসবে মেতে ওঠে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। এমনই এক বৈশাখী মেলা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার চান্দলায় সব বয়সী দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমে উঠেছে।

জানা গেছে, চান্দলা বাজারের এই বৈশাখী মেলা কয়েকশো বছরের পুরনো। প্রতিবছরই বৈশাখের প্রথম দিনে এ মেলার আয়োজন করা হয়। শুধু একদিনই চলে এ মেলা। স্থানীয়রা পুরো একবছর অপেক্ষায় থাকেন এ মেলার। এ মেলার মাধ্যমেই যেন নতুন বছরের যাত্রা শুরু হয় এ অঞ্চলের মানুষের। এ মেলা ঘিরে বেড়ে যায় আত্মীয়তার মিলনমেলা। প্রতিটি ঘরে ঘরে চলে উৎসব। মেলাকে কেন্দ্র করে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়ে মানুষে মানুষে। এ মেলাকে কেন্দ্র করে বছরের প্রথম দিনটি স্মরণীয় হয়ে ওঠে এ অঞ্চলের মানুষের কাছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিেতে বৈশাখী মেলা জমে উঠেছে। ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে দোকানিরা নানারকম পণ্যের পসরা সাজিয়েছে। খাবার জিনিস থেকে শুরু করে মহিলাদের প্রসাধনী, নানা ডিজাইনের পোশাক, শিশুদের জন্য রকমারি খেলনা সামগ্রী, সাংসারিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, মাটির নানারকম তৈজসপত্র শোভা পাচ্ছে এ মেলায়। এছাড়াও সড়কের দু’পাশে বিক্রি হচ্ছে মুরলি, কদমা, মুড়কি,নিমকি, খাগড়াই, লাড্ডু, মালশা, চিনির বাতাসা, তিলের খাজা, বাদাম পাপড়ি, মুড়ালি, মাছের বড়াসহ বিভিন্ন রকম খাদ্যদ্রব্য। শিশুদের জন্য সজানো আছে বিভিন্ন স্টলে বাঙালি ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দেয়া খেলনা সামগ্রী ও আধুনিক খেলনা সামগ্রী। নারীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রকমের কসমেটিকস পণ্য ও নানা ডিজাইনের পোশাক। রয়েছে তরুণীদের জন্যও নানা আইটেম। মেলায় উঠেছে কাঠের তৈরি নানারকম পণ্য। এছাড়াও রয়েছে তালপাতার হাতপাখা, লোহা দিয়ে তৈরি গৃহস্থালি কাজের নানা সামগ্রী।

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী রেজাউল করিম বলেন, বৈশাখী মেলা আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য। বৈশাখের প্রথম দিনটি বাঙালি জাতি উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে। আজকে চান্দলার এ মেলায় এসে নিজেকে বাঙালি বাঙালি মনে হচ্ছে। সকালে ইলিশ-পান্তা খেয়ে বন্ধুদের সাথে মেলায় ঘুরতে এসেছি। মেলায় অনেক মানুষের মিলনমেলায় পরিবেশটা উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। আমি গৃহস্থালি কাজের কিছু সরঞ্জামাদি কিনেছি।

মারিয়া আক্তার জান্নাত নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই এ মেলায় আসি। বছরের প্রথম দিনে মেলাটির আয়োজন হয় বলে এ মেলায় মানুষের উপস্থিতি বেশি হয়। এ বছরও মেলায় মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। মেলা থেকে ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু খেলনা কিনেছি আর ঘর-গেরস্থালী কাজে ব্যবহারের জন্য কিছু সামগ্রী কিনেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, বৈশাখের এই মেলা আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের কাছে খুব প্রিয়। মেলাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই এ অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব। মেলায় ঘুরতে এসেছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। আমি নাতিনাতনির জন্য মেলা থেকে কিছু খেলনা কিনেছি। এ মেলার গুড়ের জিলিপি বিখ্যাত, তাই দুই কেজি জিলিপি কিনেছি।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page